এখন আমার রাতগুলো অনেক বড়
       সাহেদ আহমেদ।


তোমার কাজলের প্রাচীর টপকে,
গুপ্তচরের মতো ঐ দৃষ্টির উঠোনে
অহেতুক পায়চারী করিনা শতাব্দী হলো।
অথচ একদিন ও চোখে স্বপ্ন এঁকেছি,
কবিতার দাঁড়িকমায় সাতার কেটেছি,
হাসনাহেনার বেলকুনি দাঁড়িয়ে
ও চোখে গোধূলির রংধনু দেখেছি,
আজ দু'জনার মাঝে শতাব্দীর দূরত্ব।


শপথের অসংখ্য কথার ভিড়ে
বৈশাখী ঝড় যে শহরে ব্যর্থ হবার কথা,
সে পথে ক্লান্ত দুপুর সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে
তুমি নেই আছে পাহাড় সমান নিঃসঙ্গতা।


একটা সময় ছিলো!
একটি বার্তার জবাব তিনটি দিয়েছি,  
বার্তার অপেক্ষায় নির্ঘুম জেগেছি,
বারবার মুঠোফোনের প্রচ্ছদ দেখেছি
অথচ, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এ যুগে
আজ বিচ্ছিন্ন শত সংযোগ, যোগাযোগ।


সত্য হলেও অবাক লাগে!
আজ কবিতা শোনার জন্য বায়না ধরেনা কেউ,  
দুপুরে খেয়েছি কিনা রাতে কি খাবো?
সিগারেট ক'টা পুড়িয়েছি কৈফিয়ৎ চায় না কেউ,
তবুও অপেক্ষা করি,
যেমন করে বিগত দিনগুলোতে করেছি।


আমার ঢের মনে আছে।
ভালবাসার সপ্তডিঙায় করে
তোমার মনের বন্দরে পৌছুতে বছর লেগেছিল,
যার জবানবন্দি দিতে একটি চিরকুট
গোটা বছর বুকপকেটে বন্দী ছিলো।
তাই বন্ধুমহল হতে একান্ত প্রহর পর্যন্ত,
তোমার কাছে হাসির পাত্রই ছিলাম।
বিশ্বাস করো সে হাসি,
আজো...আমার চোখে জলজ্যান্ত!


রমনার ঘাসে আজো যুগল প্রেমী দেখি,
বুকের বামপাশটা কষ্টে ফুপিয়ে উঠে
অভিমান তো আগেও করেছো?
দিন শেষে রাতে অন্তত ফোন দিতে।


স্বপ্ন বুনা চোখ'দুটো আজ
বাষ্পহীন নীরব চায়ের কাপের সম্মুখে
নিস্তব্ধ একজোড়া ক্লান্ত পাথর!
বন্দুকধারী ভাগ্যের দু'কূলেই নজরদারি
ইছামতির কপাল আমার বিষাদে কাতর।


একফোঁটা শ্রান্তির অপেক্ষায়,
অনিহার দু'ঢোগ বিষের বোতলে
এখন আমার রাতগুলো অনেক বড়।
তোমার কাছে প্রহরগুলো তাচ্ছিল্য হয়তো
কিন্তু আমার কাছে অখন্ড আকাশের
লোহার একখণ্ড মেঘের মতো।


হতদরিদ্র সারেঙের পাড় ভাঙা তীড়ে
একাকীত্ব পুজি করে বেশ আছি,
শুধু ভাবনার আকাশে মাঝেমধ্যে
একটি করে তারা খসে পড়ে ।


বন্ধ চোখের নীড়ে এমন'কি
চাহনির খোলা জানালায় একটি প্রচ্ছদ
অনুকূলের বাহিরে বিষাদের ক্ষিপ্ত সাগরে
জলদস্যের মতো আমায় তাড়া করে।
অথচ দিকজয়ী নাবিকের মতো একদিন
দুরন্ত লহরী ভর করে ভেসে বেড়াতাম,
প্রত্যাশার শ্রান্তির এই দিঘিতে।


শুক্রবার রাত ১২:৪৫ মিঃ
৪ ফাল্গুন ১৪২৪ বঙ্গাব্দ,
১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ খ্রিস্টাব্দ,
অলস বারান্দা সংলগ্ন মূল্যহীন ঘরের
জানালার পাশে, আগা-নগর ইমাম বাড়ি,
কাঠুরিয়া কেরানীগঞ্জ ঢাকা বাংলাদেশ।