কতদিন কবিতা লিখি না,
কতদিন শব্দ বুঁনি না,
কতদিন বড় আশা নিয়ে
আমার নোটপ্যাড টি চেয়ে রয়েছে,
আমি তাকে ছুঁয়ে দেখি না,
জীর্ণ আস্তিনে ময়লা কবাটে ধুলো জমে
জমে স্তুপ হয়েছে,কিঙ্কর তুমি আর কত বড় হবে?
আশাবাদীরা আশা ছেড়ে দিয়েছে,
মেহনতিরা কোদাল নামিয়ে রেখেছে,
অগ্নিবর্ষীয়ানরা নিভে গেছে,
নিজের প্রতিভার আগুনে পুড়ে ভস্ম
হয়ে গেছে,
আহা!কোথাও তো মেঘ নেই,
কোথাও মসৃণ শাপলা নেই,
কোথাও প্রাণ নেই,
এই কোলাহলে কেন শব্দ নেই?
এই ভীড়ে কেন লোক নেই?
কেন কাউকেই চিনি না কিংবা
আমি আগন্তুক,
আগ্নেয়গিরির মতো লাভা ছড়িয়ে কি
আমি সুপ্ত হয়ে গেছি?
নাকি এই বড় শহরের অহমিকার দেয়ালে
পিঠ ঠেকে গেছে;রাস্তা পেরুতে ভুলে গেছি,
এই শহরে প্রদীপ জ্বলে না,
এই শহরে মন ভুলে না,
এই শহরে নরম ঘাসে শুয়ে থাকা যায় না,
গুনগুন করে বেসুরো কন্ঠে গান গাওয়া যায় না,
অপরিপাটি জামা পরে বের হওয়া যায় না,
খুব জোর করে কাউকে বকা দিয়ে ধরে রাখা
যায় না,
এই শহরের জলে কলিজা ভিজে না,
এই শহরে অতীতেরা তবু বিভীষিকা
ছড়াতে ভুলে না,
বরং প্রলয় হয়ে ধেয়ে আসে মাতাল সন্ধ্যা
আরেকবার সর্বনাশ করতে,
জানো তরুন,আমাকে তুমি ধর্ষন না
করলেও পারতে,
আমার সম্মান দিনের আলোর মত এখনো
পরিষ্কার, শুধু তুমি অন্ধ,তোমার জগত অন্ধকার,
তাই তো চশমা পরা চোখে অন্ধ পাটাতনে অট্টহাসির চোটে আক্কেল দাঁতটিও দেখাতে যে ভুলো নাই,তা আমি ভুলি নাই,
তাতো আমি ভুলতে পারি নাই,
তাতেও আমি হেরে যাই নি,
নখের আছড়ে,দাঁতের কামড়ে চামড়া ছিঁড়েছে,
দেহ বেঁকেছে,চোয়াল ভেঙ্গেছে,
কাঁচা মন ভাঙ্গে নাই,
ধর্ষিতা নই,ধর্ষকের সন্তান,
তোর অপরাধের হিসাব মেটাতে হবে
তৈয়ার হো মাস্তান,
ভেবেছিলি তোর দেওয়া চপেটাঘাতে আর
কখনো মুখ তুলব না,
অপমানে মাথা উঁচু করব না,
আবেগে কবিতা লিখব না,
অনুভুতির শিরা খেয়েছ পালস খাও নি,
দুর্গন্ধময় বীর্যের মাধ্যমে যে বিষ ঢেলে দিয়েছ
তাতো ফণা তুলবেই,
অদম্য লোহার সাঁকোতে হাঁটছি যন্ত্রমানব হয়ে,
নিস্পন্দ বুকে তারাগোনা রাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছি,
যন্ত্রনাকাঁতর রাতে হাসফাস আর কত?
অশ্রুহীন চোখে শ্লেষ আর কত?
বিড়ম্বনাময় নিরুৎসাহিত জীবনে তিমির আর কত?
ভোর হবে কবে জানো?
এলার্ম ঘড়িটির নিরপরাধ ঘণ্টাধ্বনি
কবে থামবে?
কবে জেগে উঠব মৃত্যুযোগ থেকে?
বন্যাবিধ্বস্ত অঞ্চলে তবু শস্য হয়,
মরুভূমিতে বৃষ্টিপাত হয়,
এখনো বিংশ শতাব্দীর মাটিতে ফসিল
পাওয়া যায়,
আদমের ফসিলও পাওয়া গিয়েছিল তাই,
ইট বালির শহরে নোংরা কাঁদা জলে
তবু ফোটে কন্টকহীন ফুল
বিরহের আস্তাবলে,
মানুষ তবু স্বপ্ন দেখে,
বেঁচে থাকে দুনির্বার সংগ্রামে,
এই কালোপাহাড়ে দাঁড়িয়ে
শেষবারের মত আরেকটি অস্ত
দেখে শপথ করছি,
আমিও বাঁচার মত বাঁঁচব;কলপ পরে
তবুও ঢাকব হয়রানি যত,
মেঘেদের পানে চেয়ে সাগরে পা ভিজাব,
সবুজ তেপান্তরে প্রিয় সুরের সাথে উন্মাদ
গীতিতে ঢেকুর তুলব তবুও এ গানটি আমি গাইব,
লোহার জ্যাকেট,লোহার চীর,
লোহার ওড়না,লোহার পোশাক,
গায়ে দেব,
ইস্পাতের নখ নিয়ে এগিয়ে যাব,
দুমড়ে মুচড়ে সব আছড়ে দেব,
ইস্পাতের নখ নিয়ে এই দেখ এগুচ্ছি,
ইস্পাতের নখে মুখে অন্ন পুরছি,
ইস্পাতের নখের ডগায় ভালবাসছি,
ইস্পাতের নখ নিয়ে আসছি,
তোকে খামচে ধরবার জন্যই।
ইস্পাতের নখ তোকে নাগাল পাবেই।
২০.০২.১৮