একজন ব্যর্থমানবকে চিনি
চিন্তা ও চেতনায়  প্রায় পুরোপুরি ব্যর্থ সে
অল্পের জন্য পুরোপুরি ব্যর্থ হতে পারছেনা ।


বাবা মা চেয়েছিল বড়লোক হবে, নিদেনপক্ষে ভাল বেতন
কেরানী ছাড়া কিছু হয়নি,চাকরীটা বিষের মতন!
ভাইবোনগুলো পরিচয় দেয় না,বলে পরিচিত,বোকালোক
বন্ধুগুলতো খ্যাক খ্যাক করে হেসেই গেলো সারাটা জীবন।
বধূ ছিল ,শিশুটিও ছিল
ফাল্গুনের রাতের আঁধারে ,ভেগে গিয়ে বেচেও গিয়েছিলো ।
ব্যর্থ মানব বাধা দেয়নি,দেবেই বা কেন ?
তাহলে সে পুরোপুরি (হ্যাঁ পুরোপুরি) ব্যর্থ কি করে হবে?


ব্যর্থমানব অফিস যায় ,প্রতিদিন ।
লেখে ব্যর্থতার নামাবলি,প্রতিদিন ।
শোনে অশ্রাব্য শব্দবাণ,প্রতিদিন।
কাজ শেষে ,বাড়ি ফেরার পথে ,
এক আকাশ ভর্তি ব্যর্থতা,চেপে বসে তার মাথায়,
ঘাড় ,বুক,গলা, হাঁটু বেঁয়ে পায়ের তলায় ।
পা টেনে টেনে সে হাঁটে ,দেখে মরচে পড়া পৃথিবী
পোড়া মাটির রাস্তা ,ধ্বংসস্তূপের শহর,
ধুসর আলোয় পরিচিত ক্লিষ্ট সব মুখ -
তার কানের পাশ ঘেঁষে বেড়িয়ে যায় ,চেনে না ।
সেও ডাকে না, যাক ,এমনি কত কি এলো গেলো
কত বুনো হাঁস ,জিভে জল রোস্ট হয়ে গেলো !


দিন শেষে ,প্রতিদিন এসে ,
আট তলার বারান্দার রেলিং এ সে বসে ।
পা ঝুলিয়ে দেখে, বাদুরের ইতস্তত আনাগোনা ।
আর ভাবে একদিন সেও উড়ে যাবে
প্রফুল্ল মনে, নিঃশঙ্ক চিত্তে
পুরোপুরি ব্যর্থ সে হবে  ।


তবু কে যেন/ কিসে যেন আটকায় !
কানে কানে ফিসফিসিয়ে তাকে বলে,
“পুরোপুরি ব্যর্থ তো হবার নয়”
-কেন? সে শুধায়...
“আসতেই যে চায়নি ,থাকতেই যে চায়নি
তাকে জোর করে আনার দায়,কিছুটা
ঈশ্বরের উপর ও তো বর্তায়” ।।