আশ্বিন মাসে শুক্ল পক্ষে দিয়া হাততালি
শুন তুমি সদানন্দে পুঁজির পাঁচালি,
পুঁজি ধ্যান পুঁজি জ্ঞান পুঁজি কর সার
পুঁজি বিনা এ সংসারে নাহিকো নিস্তার,
পার হইতে মহামোক্ষ ভোট বৈতরনী
মহানন্দে পুঁজি ভজে ভক্ত শিরোমণি,
শিল্প নীতি কৃষি নীতি আর যত নীতি
লাগু করিয়া তিনি ভজেন শিল্পপতি,
পুঁজির সেবা যে মনে প্রাণে করে
তারও পুঁজি দেখ দিনে দিনে বাড়ে,
করোনায় যদ্যপি লোকে খাইতে না পায়
তথাপি পুঁজির পতি বিলিওনিয়ার হয়,
দেশপ্রেম ধর্মপ্রেম আর যত প্রেমাচার
এ সবের তলে চলে পুঁজির প্রসার,
শত্রুর মুখে দিয়া এক বাটি ছাই
পুঁজি স্বার্থে যত বিল পাশ হয়ে যায়,
পুঁজি ভক্তিতে কভু করিও না দেরি
প্রয়োজনে হওয়া চাই অধ্যাদেশ জারি,
কিছু বুদ্ধিজীবী আর কিছু জ্ঞানী গুণী
পুঁজির দালালি করি হয় নামি দামি,
মিডিয়ায় যত আছে পুঁজি ভক্তগণ
গদগদ সারাদিন পুঁজির কথন,
শ্রমিক কৃষক দেশে না খাইয়া মরে
তবু বদন ভরিয়া তারা পুঁজি নাম করে,
ধনবান অর্থবান আর শিল্পপতি
আড়ালে চালায় দেশ যত পুঁজিপতি,
ভোটরূপি বুজরুকি দেশে এলে পরে
পুঁজি ঢালিতে এরা অন্যথা না করে,
ভোট কালে পুঁজি হয় অগতির গতি
তাই মহানন্দে পুঁজি ঢালে যত পুঁজিপতি,
পুঁজির সমান কেহ বল নাহি ধরে
পুঁজি অনায়াসে ভোটে তরী পার করে,
পুঁজি লইয়া ছিঁড়ে যার ভাগ্যে শিঁকে
মন্ত্রী হইয়া সে পুঁজির দাস হইয়া থাকে,
ভোট লড়িতে পতি যত টাকা ঢালে
মন্ত্রীগণ শোধ দেয় তাহা কালে কালে,
কৃতজ্ঞ মন্ত্রীগণ সেই ঋণ শোধ করি
দেশের সম্পদে তার ঝুলি দেয় ভরি,
সেই টাকা তুলিবার নানা কায়দায়
ছল ছুতা করি দেশ নিলামে উঠায়,
শ্রমিক কৃষক চুষি ছিবড়া করিয়া
পুঁজিপতি ভজে তারা হাসিয়া হাসিয়া,
পুঁজির পাঁচালি এবে হইল সমাপন
ব্যঙ্গ বুঝে মনে হাসে যত সুধীজন ||