এর নাম কি স্বাধীনতা ?
নরেশ পাটঘরা


আমি ঘুঁটে কুড়োনির মেয়ে ।
আমার কোনো ঘর নেই ,
মাথার উপর আচ্ছাদন নেই ।
ছেঁড়া জামা আর চটের বস্তায় শুয়ে
চৌদ্দ বছর পার করে দিয়েছি ।


সন্ধ্যে বেলায় মা যখন
গাছের নীচে লতা পাতা জ্বালিয়ে
মাটির পাত্রে ভাত রান্না করে
তখন মনে হয়
আমার মা স্বাধীনতা খুঁজছে
অন্ধকারের মধ্যে হাতড়ে হাতড়ে
পুব আকাশে ঝাপসা চোখে !


আমি মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবো জেনে
অন্য গ্রহের জীব ভেবে সবাই
কেমন আমার দিকে তাকিয়ে থাকে বিষ্ময়ে !
ভাবে ঘুঁটে কুড়োনির মেয়ে আবার
মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে !
ঘরে বসে থালায় ভাত খাবে ,
বাবু সমাজে মিশবে !


সমাজের কাছ থেকে বিষ্ময়
অবঙ্গা ,ঘৃণা ,অত্যাচার ছাড়া
কিছুই পায়নি বলে
মা স্বাধীনতার পর দিন
তেরাঙ্গা পতাকা পুড়িয়ে
একা একা হাসে আর বলে ,
স্বাধীনতা ,তুই আমার মত এমনি করে
জ্বলে পুড়ে মর ।


আমি স্বপ্ন দেখি
যেদিন আমার  মায়ের হাতে
ফুল দিয়ে কেউ বলবে ,
তুমি আর অবাচ্ছিত নও
আমরা সবাই তোমার আত্মীয়
বন্ধু ,পরিজন সেদিন
পৃথিবী সত্যিকারের স্বাধীন হবে ।


মায়ের হাতে সেদিন
তেরাঙ্গা পতাকা দিয়ে বলব ,
মা ,দু`হাত আকাশে তুলে বলো
আমরা স্বাধীন ,আমরা মানষ ,
এই পৃথিবী আমাদের ।