নীলিমার সাথে দেখা হয়নি বহুকাল।
আটপৌরে জীবন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি
শ্যামবাজারে চৌমাথায় ;


টাকা নাকি শহরে উড়ে বেড়ায়,
কিন্তু ধরার মতো জাল কোথায়!
বিবেক বিক্রি করলেও অর্থ আসে শুনেছি,
বেকার আমাকে নিয়ে ভাবছিলাম সে কথা!!


ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে গেছে বহু গাড়ি,
বৃষ্টিতে আধ হাঁটু জল
দাঁড়িয়ে আছে সব গাড়ি সারে সারে,
আমার গন্তব্য পায়ে হেঁটে
মাথার ওপর ছাতা নেই,
তাই মোবাইল ফোনটা প্লাস্টিকের প্যাকেটে মুড়ে
দাঁড়িয়ে আছি ফুটপাতে,


হঠাৎ দেখি একটা চার চাকার
জানালার কাঁচ নেমে গেল,
বেরিয়ে এলো একটা মুখ--
সিঁথিতে সিঁদুর, কপালে উজ্জ্বল লাল টিপ,
মাথা থেকে গলা গহনা আচ্ছাদিত
নিরুপম মুখ,
গোলাপ পাপড়ির নির্যাস মাখা
যেন সে অপরূপা!


চকিতে ধক করে উঠেছিল যে বুক
এখন যেন শুরু হয়ে গেল সাইক্লোনের মহা তান্ডব!
--- ভেঙে পড়ছে গাছ, বাড়ি, দেওয়াল
ইলেকট্রিকের ছেঁড়া তারে
আটকে গেছি আমি!
উদ্ধারের ব্যর্থ প্রয়াস,
দুটো পা আটকা পড়েছে যেন কংক্রিটের পথে,


অতঃপর ফিরে তাকাই রাজপথে,
সব জট কেটে গেছে কখন?
মহা তান্ডব, বন্ধ রাস্তা পেরিয়ে
কেমন করে সে চলে গেল!


একের পর এক গাড়ি ছুটছে,
জানালা বন্ধ,
আমি ধ্বংস স্তূপে দাঁড়িয়েই
মৃদুস্বরে জানতে চাইলাম
---নীলিমা, কোথায় গেলে?


বৃষ্টির শব্দে পৌঁছালো না আমার কথাগুলো
কোনো কাঁচ ভেদ করে
কোনো ছুটন্ত গাড়ির ভিতর!


সেদিন বৃষ্টি থামলো না আর,
প্রচন্ড বেগে ঝড় বজ্রপাত বৃষ্টি
লন্ডভন্ড করে দিল শহর,
সবাই যেন প্রলয়ের শহর ছেড়ে
চলে যেতে তৎপর নিরাপদে,
আর আমি সে দুর্যোগে ভেঙে পড়া
স্ট্যাচু যেন
ধরাশায়ী সমস্ত পৃথিবীর ধ্বংস স্তুপে!!