চাচা মিয়া ডাক হুইনন্না মনডার মঝে কেমন জানি লাগলো
ঘরের মধ্যি থাইক্কা ডাক দিছিলো, আর আমিও কাছে গেলাম
গফুর গাছী লগে আছিল রসের হাড়ি লইয়া
আমি আবার বইনের লাইগ-গা রস নিতে আইছিলাম
গাছীরে বাড়িত যাইতে কইয়া ঘরের ভিতর গেলাম
দেহি বেডায় খাডের তন পইরা বেথায় কুকরাইতেছে
অনেক বড়োলোক হেরা, ঘরের মধ্যে সব আছে হেগো
হেরে ঝাঁপটাইয়া ধইরা খাটের উপরে দিলাম
মুখ চোখ শুকনা শুকনা মনে অইলো তাই জিগাইলাম
আনহে একা কেন, বাড়ির হগলে কৈ ?
ঝর ঝর করে কাইন্দা দিলো, কথা কইলো না
আমার চোখটা এপাশ ওপাশ করতে করতে কিছুই দেখলাম না
এই বাড়িত থন যে শেষ বার কাইন্দা গেছিলাম,
বারবার হেই কথা মনে অইতাছে
আবার হেরে থুইয়া যাইতেও মন চায় না।
হের পোলাডা লেহা পড়া অনেক পারে, পুলিশত চাকরি করে
তাই জিগাইলাম, আফনের পোলা মাইয়া কৈ ?
বউ ডা আগেই মইরা গেছে আর পোলা বিয়া কইরা শহরে থাহে
মন চাইলে আহে, না চাইলে নাহ!
আইজ দশ দিন কামের ছেরি আহে না, খাওন বন্দ।
কয়দিন মুড়ি খাইছি, হেইয়াও শেষ
বাজান পানি আছে নি দেহদি?
তোমার লগে আমি খারাপ করছি, তাও তুমি আমারে দেখবার আইছো
আমার পোলাডা মাঝে মধ্যে আহে, যা যা লাগবো দিয়া যায়
আমার নাতিডারে দেখবার পারি না,
হেয় এহানে আইলে নাকি খারাপ অইয়া যাইব
আমার এই বাড়ি হেগো বালা লাগে না, দম আটকাইয়া আসে
তোয় আপনের মেয়ে !
বাপজান রিনির কথা তোমার এহনো মনে আছে
তুমি তো ওর লাইগ-গা কত্ত মাইর খাইছো
গ্রামের হগগলে তোমার বিরুধে আছিল
কেন জানি আমিও তোমার লগে খারাপ করছি
বাজান আমারে মাফ কইরা দিও
ওর ভাই শহরে নিয়া গেছিলো, বিয়াও দিছিলো
ওর কপালে সুখ ছিল না বাজান
কেন জানি ছাদেততন পইড়া মইরা গেলো মাইয়াডা
আমারে দেকবার দেয় নাই, এক মাস পরে জানায়ছে
মাইয়াডা খালি তোমার কথা কইত
হেরে ছাড়া বাচুম না খালি কইত
আমি না বুইঝা খালি গাইলাইতাম, মাঝে মাঝে মারতামও
এহন বুঝি বাজান এহন বুঝি
বাজান, তুমি আমারে একটু বিষ আইনা দিবা
একলা একলা থাকতে কি যে কষ্ট তুমি বুঝবা না!
তুমি রিনিরে ছাড়া কেমনে আছো বাজান ?