এখন যতটুকু বাতাস গায়ে মাখতে পারি,
ততটুকুই আমার বসন্ত;
আমার শ্রান্ত দেহের বিশ্রাম।
এর বেশী কিছু জরা, ব্যাধি।
একদিন কৈশোরে লুটোপুটি খেলেছি
ক্ষেতের আলে, বর্ষার জলে!
বজ্রমুষ্ঠি করে ভীষণ তাণ্ডবে
দিগ্বিদিক ছুটেছি সময়ের স্রোতে।
কতো বিজলি চমকে গেছে মাথার পরে,
কতো বৃষ্টির জল পিছলে পড়েছে শরীর থেকে!
কতো কাদামাটি জল শরীর খেলেছে একসাথে!
ওইটুকু ছিলো আমার আষাঢ়ে ক্ষণ,
ওটুকুই আমার ভরা যৌবন!
এখন ঝড়ো বাতাসে মনে বাজে ধর্মের ডাক!
মুদিত চোখে দু'হাত জড়ো হয় নিবিড় প্রার্থনায়!
একদিন কুয়াশা ভোরে -
ভেজা ঘাস মাড়িয়েছি নগ্ন পা'য়ে, অবাধ্যতায়!
শিশির জলে ধুয়েছি সারা মুখ, বারংবার!
দীঘির জলে দাপাদাপি করেছি উচ্ছ্বাসে।
হিজলের ডাল - সেজদায় লুটিয়েছি পুকুরের জলে!
ঘরভাঙা অসহায় কাকের দল
গগনবিদারী চিৎকার করেছে মাথার পরে!
এখন হিম শরীর; তবু হাত ঘামে, পা ঘামে!
হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন সময়ের হিসাব কষে!
কৈশোর আর যৌবনে শরীরিয় অত্যাচার,
প্রতিশোধের নেশায় মাতাল দেহ, সায়াহ্নে!
এখন যেটুকু কুয়াশা গায়ে মাখতে পারি,
ওটুকুই মাঘের গল্প।
যেটুকু জলে পা ভেজাই, ওটুকুই বর্ষা!
যেটুকু পেঁজা তুলো মেঘ দেখি নীল আকাশে-
ওটুকুই আমার শরৎ!
যেটুকু হৃদয়ে ধারণ করতে পারি,
ওটুকুই আমার নিখাদ প্রেম!
বয়েসী শৈশব বরণ আমার এখন!
এর বেশী কিছুই - জরা, ব্যাধি!