আমি   বিধির বিধান ভাঙিয়াছি, আমি এমনি শক্তিমান!
মম   চরণের তলে, মরণের মার খেয়ে মরে ভগবান।


            আদি ও অন্তহীন
       আজ   মনে পড়ে সেই দিন –
       প্রথম যেদিন আপনার মাঝে আপনি জাগিনু আমি,
আর   চিৎকার করি কাঁদিয়া উঠিল তোদের জগৎ-স্বামী।
ভয়ে   কালো হয়ে গেল আলো-মুখ তার।
       ফরিয়াদ করি গুমরি উঠিল মহা-হাহাকার –
       ছিন্ন-কণ্ঠে আর্ত কণ্ঠে তোমাদের ওই ভীরু বিধাতার –
              আর্তনাদের মহা-হাহাকার –
  যে,  ‘বাঁচাও আমারে বাঁচাও হে মোর মহান, বিপুল আমি!
              হে মোর সৃষ্টি! অভিশাপ মোর!
       আজি হতে প্রভু তুমি হও মম স্বামী!’ –
শুনি   খলখলখল অট্ট হাসিনু, আজিও সে হাসি বাজে
  ওই   অগ্ন্যুদ্‌গার-উল্লাসে আর নিদাঘ-দগ্ধ
              বিনা-মেঘের ওই শুষ্ক বজ্র-মাঝে!
       স্রষ্টার বুকে আমি সেই দিন প্রথম জাগানু ভীতি, –
       সেই দিন হতে বাজিছে নিখিলে ব্যথা-ক্রন্দন গীতি!
       জাপটি ধরিয়া বিধাতারে আজও পিষে মারি পলে পলে,
  এই   কালসাপ আমি, লোকে ভুল করে মোরে অভিশাপ বলে।


           (বিষের বাঁশি কাব্যগ্রন্থ)