১.


রাতের আঁচল দীর্ণ করে আসলো শুভ ঐ প্রভাত,
জাগো সাকি! সকাল বেলার খোঁয়ারি ভাঙো আমরা সাথ ।
ভোলো ভোলো বিষাদ-স্মৃতি! এমনি প্রভাত আসবে ঢের,
খুঁজতে মোদের এইখানে ফের, করবে করুণ নয়নপাত ।


২.


আঁধার অন্তরীক্ষে বুনে যখন রূপার পাড় প্রভাত,
পাখির বিলাপ-ধ্বনি কেন শুনি তখন অকস্মাৎ !
তারা যেন দেখতে বলে উজল প্রাতের আরশিতে--
ছন্নছাড়া তোর জীবনের কাটল কেমন একটি রাত ।


৩.


ঘুমিয়ে কেন জীবন কাটাস্? কইল ঋষি স্বপ্নে মোর,
আনন্দ-গুল প্রস্ফুটিত করতে পারে ঘুম কি তোর ?
ঘুম মৃত্যুর যমজ ভ্রাতা, তার সাথে ভাব করিসনে,
ঘুম দিতে ঢের পাবি সময় কবরে তোর জনম ভোর ।


৪.


আমার আজের রাতের খোরাক তোর টুকটুক শিরিন ঠোঁট,
গজল শোনাও, শিরাজী দাও, তন্বী সাকি জেগে ওঠ !
লাজ-রাঙা তোর গালের মতো দে গোলাপি রং শারাব,
মনে ব্যথার বিনুনি মোর খোঁপায় যেমন তোর চুনোট ।


৫.


প্রভাত হলো । শারাব দিয়ে করব সতেজ হৃদয়-পুর,
যশোখ্যাতির ঠুনকো এ কাচ করব ভেঙে চাখনাচুর ।
অনেক দিনের সাধ ও আশা এক নিমিষে করব ত‌্যাগ,
পরব প্রিয়ার বেণী বাঁধন, ধরব বেণুর বিধুর সুর ।


(কাব্যগ্রন্থঃ রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম, ফেব্রুয়ারী ২০১০, প্রকাশকঃ বিশ্ব সাহিত্য)