(আজ) ভারত-ভাগ্য-বিধাতার বুকে গুরু-লাঞ্ছনা-পাষাণ-ভার,  
           আর্ত-নিনাদে হাঁকিছে নকিব, – কে করে মুশকিল আসান তার?
                 মন্দির আজি বন্দির ঘানি,  
           নির্জিত ভীত সত্য, বদ্ধ রুদ্ধ স্বাধীন আত্মার বাণী,
           সন্ধি-মহলে ফন্দির ফাঁদ, গভীর আন্ধি-অন্ধকার!  
           হাঁকিছে নকিব – হে মহারুদ্র চূর্ণ করো এ ভণ্ডাগার॥  
                 রক্তে-মদের বিষ পান করি  
           আর্ত মানব; স্রষ্টা কাতর সৃষ্টির তাঁর নির্বাণ স্মরি!  
           ক্রন্দন-ঘন বিশ্বে স্বনিছে প্রলয়-ঘটার হুহুংকার, –  
           হাঁকিছে নকিব – অভয়-দেবতা, এ মহাপাথার করহ পার॥  
                 কোলাহল-ঘাঁটা হলাহল-রাশি  
           কে নীলকণ্ঠ গ্রাসিবে রে আজ দেবতার মাঝে দেবতা সে আসি?  
           উরিবে কখন ইন্দিরা, ক্রোড়ে শান্তির ঝারি সুধার ভাঁড়?  
           হাঁকিছে নকিব – আনো ব্যথা-ক্লেশ-মন্থন-ধন অমৃত-ধার॥  
                 কণ্ঠ ক্লিষ্ট ক্রন্দন-ঘাতে,  
           অমৃত-অধিপ নর-নারায়ণ দারুময় ঘন মনোবেদনাতে।  
           দশভুজে গলে শৃঙ্খল-ভার দশপ্রহরণধারিণী মার –  
           হাঁকিছে নকিব – ‘আবিরাবির্ম এধি’ হে নব যুগাবতার!  
                 মৃত্যু-আহত মৃত্যুঞ্জয়,  
           কে শোনাবে তাঁরে চেতন-মন্ত্র? কে গাহিবে জয় জীবনের জয়?  
           নয়নের নীরে কে ডুবাবে বলো বলদর্পীর অহংকার? –  
           হাঁকিছে নকিব – সে দিন বিশ্বে খুলিবে আরেক তোরণ-দ্বার॥


(বিষের বাঁশি কাব্যগ্রন্থ)