কাশেমের মা-
কেমন আছো তুমি?
বেশ ক'দিন ধরে
বারে বারে তোমার কথা পড়ে মনে।
সারারাত ঘুমাব বলে
বিছানায় এপাশ ওপাশ করি
কতো কিছু র ভীড়ে ,
তোমার মুখ খানি স্মরি।
কাশেমের মা-
তুমি ও কি ভাবছো আমাদের কথা?
আমরা এখন কতো বড় হয়েছি?
না কি ভাবছো ,
তোমার সেই দাদা-দিদি, আম্মা-আব্বা
আছেন তেমনি আজো?
শুনো , কাশেমের মা-
তোমার দাদা'রা আর দিদি'রা
অনেক বড়ো হয়েছে
চুল পড়ে টাক  মাথা-
আর কালো চুল সাদা
কি বিশ্বাস হচ্ছে না-?
তবে এসেই দেখে যাও নিজ চোখে।
সেদিন ও গিয়েছিলাম বনানী তোমার খোঁজে।
কিন্তু পুরোনো কাউকে পেলাম না।
কে দিবে তোমার খবর?
কাশেমের মা-
তুমি কি এখনো আগের মতই আছো?
তিরিশ বছর আগের , তোমার মতো?
না , আবার সেই হাড্ডিসার
ছেলে পুলের অন্ন জোগাতে
তোমার জন্য থাকতো না কিছু আর।
অবশেষে কন্কালসার শরীর তোমার,
কাঁথা মুড়িয়ে চলে এলে ,
ফাঁকি দিয়ে পরিবার।
কাশেমের মা-
আমাদেরকে আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছো তুমি,
বিনিময়ে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান পেয়েই খুব খুশি।
দিনে দিনে তোমার সৌন্দর্য উঠেছে ফুটে
লাল শাড়ি ,আর পান খাওয়া লাল ঠোঁটে
যেনো গ্রামের নূতন ঘোমটা টানা কোনো বধূ
তোমার কথা, স্নেহ,মমতা লাগতো যোনো মধু।
কাশেমের মা-
তুমি কি এখন তোমার সন্তানের মাঝে
আমাদের খুঁজে ফিরো?
যেমনটি তুমি আমাদের মাঝে খুঁজে পেতে
ফেলে আসা সন্তানের মুখগুলো।
আচ্ছা কাশেমের মা -
তুমি কি এখনো আগের মতই আছো?
না বদলে গেছো ?
বুড়িয়ে গেছো হয়তোবা।
মনে কি পড়ে তোমার ?
আম্মা যখন বললেন, সেবার
কাশেমের মা তুমি যাও এবার।
না হয় ,তোমার স্বামী দিবে তালাক
তোমার সন্তানেরা হবে মা'হারা,
কি করে সইবে এতো সব জ্বালা।
তাদের অভিসম্পাত এসে লাগবে আমার গা'য়,
কাশেমের মা ,তুমি যাও তোমার স্বামী র বা'য়।
কাশেমের মা-
মনে পড়ে তোমার সেই বিদায় বেলা
আব্বা-আম্মা'র পা দুখানা জড়িয়ে ধরে
কেঁদে ছিলে তুমি সেথা লুটিয়ে পড়ে।
তুমি কি জানো , তোমার- আমার আব্বা
চলে গেছেন পরপারে বছর পাঁচেক আগে।
কাশেমের মা-
তুমি কি শুনতে পাও ?
আমার কথা?
তুমি কি আছো বেঁচে?
না কি চলে গেছো , চিরতরে?