আজি বাদল দিনে হাওয়ার পরে লেগেছে কী মাতন/
সকাল থেকে নাই যে দেখা উজল
রবি কিরণ/
বায়ু বয় শন শন বেগে,মেঘের দল
মত্ত যে রাগে /
ছেয়েছে আকাশ,করেছে প্রকাশ আপন
হৃদয়ে জেগে /
উড়িছে কাক ভাঙা ডানা নিয়ে এলো-
মেলো তার ছন্দ /
তৃষিত চাতকের ফটিকজল হয়েছে
এবার বন্ধ /
বাতাসের পরে ভর করে বরিষণ
ধারা ঝরে /
নভঃদেশ কাটি বিদ্যুল্লেখা অশনি
সংকেত পাড়ে /


তরুদল আজি অশান্ত বাতাসে নয়
কোন রূপ ত্রস্ত /
জানে,আজ তপ্ত হৃদয় বরিষে হইবে
আশ্বস্ত /
দিকে দিকে সারা,পড়ে গেছে সাড়া,
বরষা হয়েছে মূর্ত /
তৃণ রাজি আজি, উঠিয়াছে জাগি,ছিল
সে যে পিপাসার্ত/
রিমঝিম ধারা হৃদয় মথিয়া উথলিয়া
ওঠে গান /
মেঘমল্লারে বরষা রাগিণী ধরেছে
আপন তান/
দাদুরী ডাকিছে প্রাণ হিল্লোলে প্রকাশিত
তার স্থান /
আনন্দ মগন প্রকৃতি সাথে দিতে তার
যোগদান /


আজি পল্লী বাসরে পড়ে গেছে সাড়া,
মুখর প্রাণস্পন্দন/
বাঁশঝাড় তার নুইয়ে মাথা করিছে
বরষা বন্দন/
কিষাানেরা আজ হাল গোরু নিয়ে
কর্ষণে নিমগন /
বরিষণ মাঝে গুরুগুরু রবে গগন
বিদারি সঘন /
কদম্ব তার কুসুমে কুসুমে নিজেরে
সাজায়ে যতনে/
অশোক আর জুঁই,বেলফুলে ভুঁই
বরষা সমাবর্তনে /
পুষ্ট সবই খালবিল যত, উথলিছে
প্রাণ হিল্লোলে/
পদ্ম শালুকে ভরিয়াছে দিঘি জাগিছে
জান কল্লোলে /


নদী নালা ফিরে পেছে মান ভুলেছে
শুষ্ক ক্রন্দন /
হর্ষে মাতিয়া দুকূল ছাপিয়া ছুঁয়েছে
পল্লী সদন/
পল্লীর পথে পথ নাহি আজি, ঢেকেছে
কর্দম-চন্দনে/
পাতিহাঁস চড়ে জলে, শ্বেত বলাকা উড়িছে গগনে/
স্থির বসে থাকা পানকৌড়ি ঝুপ করে
ঝাঁপে জলে/
মাছরাঙা রঙ খেলায়ে ডানায় সাথ দেয়
ফাঁকতালে /
ডাহুক ডাকিছে কুবো কুব পাতার
অন্তরালে/
বর্ষার অনুসঙ্গে প্রকৃতি নিজেরে
সাজিয়ে তুলে।/
==================