গৌরবর্ণ রঙের শাড়ি পড়ে ছিলে সেই কবে তোমার মনে আছে ?
আমার মনে নেই,তবে মাথার মধ্যে চেরি ফুল দিয়ে ছিলে,
এতটুকু বলতে পারি কোন রকম ।
হাতের মালাটা ছিল সূর্যমুখী,গাঁয়ে ছিল ফিনফিনে পাতলা কোমল শাড়ি ,
এই মুহূর্তে আর কিছু মনে আসতেছে না ।হ্যাঁ আরেকটি ছিল নীল
রঙের লকেট যা গলায় পড়ে ছিলে তুমি ।


সুদৃশ্য ভাবে ফুটে উঠে ছিল ওই দিন ,অনেক ভালো লেগে ছিল
মনে হচ্ছিলো সুরলোক থেকে আগত ডানা কাটা মায়া জড়ানো
হুর।
তরু ছায়ার নীচে বসে বাদাম খেয়েছি সেই রমনার বট মূলে,
ঊষা লগ্নে মধুর আলাপন হয়েছিলো হাতের উপর হাত রেখে,
আঁখির ছলে ভাসিয়ে হৃদয়ের তটিনীতে।


ওতপ্রোত ভাবে দুজন মিলে হারিয়ে গিয়েছিলাম অরণ্যের গহিনে,
গণ্ডি পেরিয়ে ঊর্ধ্ব গগনের ধূসর মৃগাঙ্কে,তোয়ধর ছিল আমাদের ঘিরে
উড়ে বেড়িয়েছি চড়ুই খগের ন্যায়।
ভীষণ ভাবে ছুটোছুটি করেছিলাম উল্কার ভিতরে,স্মৃতি গুলি তাড়া দেয়
চিত্তের ঘাটে,চেতনা জাগে বিষণ্ণ চৌর্যবৃত্তির ঘোরে,মগ্ন থাকি আলোহীন
তমিস্র ঘরের মধ্যে ।


ঈক্ষণ ভরে দেখে ছিলাম পর্দাহীন মৌনতার হর্ষ, দামিনী ব্যাপক হারে
তরঙ্গের মাঝে সাঁতার কাটতে ছিলো,উদার আহ্বানে সাড়া দিয়ে
নেমে ছিলে উত্তাল বীচির মধ্য খানে ।
তদানীন্তন সময়ের কথা আজ তোমার কিছু ই মনের অগোচরে নেই তাই না !
ত্বরিত গতিতে হেঁটে ছিলে একদিন খুব প্রাতঃকালে নিবিড় সড়কের মাঝখান
দিয়ে,বকুল তলার উদ্দেশ্যে ।


তোলপাড় হয়ে উঠে না তোমার একটুও ,যখন থোকা থোকা প্রেমের গল্প
বলতে,বেলিরোডের মাথায় বসে উপচে পড়া কুমুদনাথ রাত্রির
আলোতে ।
নিবৃত্ত থেকে নিংড়িয়ে দিচ্ছি নিঘূঢ় নিদারুণ কাল্পনিক জগতকে যা তুমি
ধরাছোঁয়ার বাহিরে রাখতে চাও ,নিষ্প্রাণ নিস্তব্ধ ভালোবাসা বলে উড়িয়ে
দিতে চাইতেছো এখন।


নিষ্ক্রিয় পুরোনো পৌঢ় বর্ণালি দিন মনে রাখতে চাই না, ভুলে গেছি সব
ছেলেখেলা ,বাক্‌বিতণ্ডা বাসন্তী লতার মতো বিমূর্ত প্রতীক
এই সবের মানে আছে বর্তমানে ।
স্ফোটকের ন্যায় বিবর্ণ হয়ে গেলাম কথা শুনে,বিস্ফোরণ ঘটলো দেহের
ভিতর জ্বালাময়ী ব্যবহারে ,বেড়িবাঁধ পাড় হয়ে মরুভূমিতে বিচরণের
স্বাদ জাগে হৃদপিণ্ডের লৌহ কণিকায়।


ব্যগ্র কণ্ঠে মুখোমুখি হয়ে মুহ্যমান আঘাত হানলে আমার বুকের হাড়ের মধ্যে
দিয়ে, যুদ্ধংদেহী  ভেঙে চুরে ঘুরমার হয়ে ছিটকে পড়ছে মৃত্তিকায় হামাগুড়ি
দিয়ে।
লাগামহীন লীলায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সঞ্চয় করা মুঠোয় মুঠোয় ভালোবাসা
গুলি, নিয়তি নিচয় খেলে যায় আমার আঙিনা দিয়ে বিষণ্ণ মনে অধীর ক্ষণে
জীর্ণ শীর্ণ হয়ে ।


সংযমী হয়ে বলি অনুভূতির ছলে ভেবে দেখো অকাট্য ভাবে অশালীন পূর্ণ
আচরণ করা ঠিক হয়েছে কি না ?অনুশোচনা যদি আসে তোমার চিত্তে
তবে ফিরে এসো , আর না আসলে আসার দরকার নেই,
অভিরুচি প্রকাশ করার ।