বউ একদিন রেগে গিয়ে বলে, কি বাল,ছাল লিখো  
এই সব দিয়ে আমার সংসার
চলবে না। নুন আনতে পান্তা ফুরোয়,
আবার কবিতা লিখে!
কি আমার ধঞ্চে কবি রে !গচ্চা গচ্চির শেষ নেই ।
বাবা বলে,পাগলামি ছাগ্লামি
বাদ দেয় বাপ, ওই সব দিয়ে
কিছু ই হবে না।


বরং গরুর খামারে যাও গিয়ে ..
ক্ষেত থেকে ঘাস কেটে নিয়ে আসো,
তা ও ভালো হবে ।
বড় ভাই বলে, আজ কাল কি সব লিখো !
ধান্দা বাজি বাদ দিয়ে কাজ কর্মে  
মনোযোগ দাও ।
যতসব গোঁজার কাড়বার
খোঁয়াড়ের উঁনপাঁজরের কচুপোড়া,
খসখসে খ্যাচাখেচি স্বভাব দূর কর ।


মা বলে, খোকা ওইসব কি বলে তোর
বাপ,আমি তো,তোর মা তাই না!
আমি বলি কি আঁকুপাঁকু না করে
আদা জল খেয়ে লেগে যাও ।
গলাবাজি গল্পসল্প বান্দরের মতো
গাছ গাছালি তে ওঠা উঠি ইত্যাদি তে না গিয়ে,
গোঁয়ারের কাজে লেগে যা...।
রাস্তায় হাঁটতে গেলাম গাঁয়ের একজন
মুরুব্বীর সাথে দেখা হয়ে গেলো ।


আমাকে দেখে বলে ওরে গোয়াল ঘরে কবি ,
শুনো বাপের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাবে আর কত দিন ।
ওরে গণ্ডূষ !গোঁফ ছাঁটাই কর
এই যুগে ঘোষাই গিরি ছলে না ! বুঝলে ?
তুই তো দিন দিন খোদার খাসি
হয়ে যাচ্ছিস!।
বন্ধু বান্ধব দেখা হলে বলে ওঠে, যখন
তখন,কুমড়ো কাঁটা বট্‌ঠাকুর আসছে
আমাদের মাঝে ।


উনি নাকি আবার রূপক অর্থে ছড়া কবিতা
লিখে,কাষ্ঠ হাসি পায় খুব দিলের মধ্যে ।
চল চল ওর সাথে কথা বলে অযথা সময় নষ্ট
করে ,ঘুঘু চরানোর দরকার নাই ।
গোদের উপর বিষফোঁড়া ! যাক বাবা  
সবাই দেখি আমার প্রতি খ্যাপা ।
কিছুদিন পর পুকুর পাড়ে একটু প্রাণ খুলে
বসি,আচমকা কিছু গ্রামের ভাবীরা আসে,
জল নিতে ।


আমায় দেখা মাত্রই ওদের খুঁত খুঁতে খিচুড়ি
তাণ্ডব শুরু হয়ে গেলো ।
ওই ওই শুনচছ ,দেখ দেখ ঘণ্টাগরুড় ডা
কি ভাবে শুয়ে বসে ঝিমায় ।
সবই কিন্তু আমার কর্ণ গহ্বরে যায়
কিন্তু কি আর করা; আমি তো একটা চড়ুই পাখির প্রাণ ।
একদিন তিতাস নদীর ধারে যাই
জোয়ার ভাটা দেখার লক্ষ্যে ।


ঐখানে ও এক খাটাশ মহিলা বলে ,
যায় যায় ...টুলো পণ্ডিত মশাই ।
তারপর চুপিচুপি বাড়ি যাই
ধীরে ধীরে বাগানের কাছে গিয়ে,
ফুলের কলি কে প্রশ্ন করি ।
তোমারা কি ?আমার সাথে ছিনিমিনি খেলা করবি ?
যা করে জোড়ের পায়রা !
কি আর বলবো দুঃখের কথা ...
ছেঁড়া চুলে খোঁপা বাঁধা আর কি ।


জবড়জং জিয়ন্তে মারা খেসারতের
আলপনা টেনে টনক নড়া ।
তাই নিজের সাথে আড়ি করে
শুম্ভ-নিশুম্ভের যুদ্ধে লিপ্ত থাকি একাকী গভীর ধ্যানে।