ভোর হয়েছে তোমার আঙিনায় অতি তাড়াতাড়ি আজ
বাতাস বয়ে যাচ্ছে বাগানের চারিপাশ দিয়ে
স্বাচ্ছন্দ্য বোধ নিয়ে হেলে দোলে
ফুল গুলি চিক চিক করে
মনের আনন্দে ।
আজ ভোরের রোদ্দুর বাড়ির উঠোনে এসে ফালি ফালি খেলা করে
বুঝিয়ে দিচ্ছে আজ গ্রীষ্মকাল, কিন্তু তাই হলো
উঠি নেড়ে চেড়ে দেখি ক্যালেন্ডারের  
পাতা ,সত্যি তো আজ গ্রীষ্মকাল!
পহেলা বৈশাখ ।


কিচিরমিচির আওয়াজে আমি জানালার ধারে এসে বসি একটু
অবলোকন করতে থাকি প্রকৃতির সৌন্দর্য
আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি
মেঘ জমে আছে সূর্যটা
স্নিগ্ধ আলো ছড়াচ্ছে।
গাছে গাছে নতুন সবুজ পাতা ফুটেছে পাখিরা মুক্ত মনে গান গেঁয়ে
উড়ে বেড়াচ্ছে, কিশোর কিশোরী বিভিন্ন রঙে
সেজে গুজে বট তলার মূলে যাচ্ছে
এক অন্য রকম ভাবনায়
হেঁটে যাচ্ছে পুষ্পের মালা গলায় দিয়ে ।


সকালটা ভাবতেই খুব ভালো লাগতেছে হৃদয়ে অন্য রকম ঢেউ উঠিতেছে
ভীষণ উদগ্রীব হয়ে ঘর থেকে বের হই ধীরে ধীরে
পুকুর পাড়ে যাই ,গিয়ে দেখি জলের মাঝে
লোকচুরি খেলে হাঁসের দল  
একে অপরের সাথে ।
মুগ্ধ হয়ে সবুজ শ্যামল শস্য ভরা উর্বর জমির দিকে চোখের পলক নিক্ষেপ
করি, পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তিতাস নদী, বাতাসের
টানে মাঝিদের নৌকা যাচ্ছে কাশবনের দিকে ,
পানকৌড়ি মাছ শিকার করে
মনের সুখে ।


মনোরম পরিবেশ দেখে আমি দিশেহারা হয়ে যাই ব্যাকুল হয়ে পড়ি
ভালো লাগার ভাবনা গুলি ওড়া উড়ি করে মনের আকাশে,
ছুটে যাই তাদের বাড়ির পাশের বাঁশ বাগানের ধারে
অপেক্ষায় থাকি কখন সে বের হবে
সাত রঙে সেজে ।
কিছুক্ষণ পর স্বর্গীয় পরীর ন্যায় সেজে বের হয়, মাথায় ফুলের মালা
গলায় বাঙালি সংস্কৃতির পুঁতির মালা,শাড়ি পড়েছে
কারুকার্যের ঢঙে,হাতে লাল নীল চুরি পড়েছে
পায়ে দিয়েছে লাল রঙের আলতা
সব কিছু দেখে মনে হচ্ছে অন্য গ্রহের প্রজাপতি ।


দূর থেকে তাকিয়ে আছি যত দেখি ততই নাড়া দিচ্ছে চিত্তের গভীরে
বসুমতী অম্বুদ দিয়ে আগলে রাখিতেছে ভীষণ ভাবে
কাছে যাওয়ার আগ্রহ জাগে মনের মধ্যে
পরবর্তীতে ভেবে দেখি কাছে যাওয়া  ঠিক হবে না
নিতান্তই তাকে দেখতে থাকি ।
সন্তোষ প্রকাশ করি উদ্ভাসিত মনে ইচ্ছের ঘুড়ি উড়িয়ে অদৃষ্টের খেলায়
বিহঙ্গের সুরে সুর মিলিয়ে বলতে বাসনা জাগে
আমার ,কবে আসবে মনের ঘাটে
কলস নিয়ে ভোর বিহনে
পুকুর পাড়ে ।