রাত শেষে আকাশ জুড়ে
আসে যখন নতুন আলোর ভোর,
ঘুম ভাঙ্গা এ চোখ দু'টি মোর,
খুঁজে পায়-
দুররেখায় মিশে যাওয়া ধুলোর শহর ।


উঁচু উঁচু প্রাসাদের পদাতলে
সীমাহীন আয়ুহীন যান্ত্রিক বহর,
মিলে মিশে একসাথে জেগে থাকে
কেউ নেয় নাতো কারোরই খবর ।


নীড় ছেড়ে পাখিদের ছুটে চলা,
মুখরিত হেয়ালীপনা কলহ সকাল,
সুরে সুরে গানে গানে খুঁজে পায়
অন্ন সাধনে কত না দিগ প্রান্তর ।


প্রাণহীন প্রাসাদের নিরস জীবন,
‘আরো চাই আরো চাই'
বলে শুধু কাতরায়,
ভরে না তো কিছুতেই উহাদের অন্তর ।


প্রাসাদের মায়ামৃগ
জননী বিবি সকল,
দিনে দিনে কত না স্বপ্ন আঁকে,
বাসনাতে হয় তো বিভোর ।


হলে পরে রাত শেষে ভোরের সকাল,
‘চাঁদমনি সোনামণি' ওঠোরে'
বলে বলে ঠোঁটেতে জাবরায়,
'সময় তো ফুরিয়ে যায়-
উঠো তো শিগগির, চলো যাই ছুটে স্কুলে,
কোথায় ওরে' ! নিয়ে চল গাড়ীর বহর।'


ওরা ছুটে
নেশারত ঘুম ঘুম চোখে,
নোংরা ধুলিমাখা জরা জীর্ণ ভূষণে
ক্ষুধার মরণ মর্ম ভুলিয়া,
ফুটপাত এপার ওপাড় ঘুরিয়া,
রাজপথ শহর ও নগর অস্থির প্রান্তর ।


সারাদিনভর গতর খাটিয়া
ঝোলার ঝুলি পিঠেতে ঝুলাইয়া
অনুসন্ধানী চোখে নীরবে দেখিয়া,
খুঁজে খুঁজে টোকাইয়া লয় ,
বড় বাবুদের ফেলে দেয়া উচ্ছিষ্ট সকল ।


সেই থেকে,
ওদের নিদারুণ জীবন বহতা হতে,
শিল্পী রফিকুন নবী রনবী স্যাব,
‘পথের টোকাই' শিরোনাম করে
ছবি একে খুঁজে পায়,
বেদনা বিধুর দুর্বিষহ এক-
অন্যরকম মানবজীবন ।


ওরা আজ বলে তাই,
আমাদের পরিচয় আজ একটাই ,
মোরা পথের 'টোকাই' ।
পথে পথে ডাস্টবিনে,তুচ্ছ যা কিছু পাই ,
হৃদয় ভরে আনন্দেতে কুড়াই ।
আর উচ্ছিষ্ট যা কিছু খাদ্য দেখতে পাই,
মজার আসনে বসি-
শান্তির তৃপ্তিতে মহাসুখে আনন্দভবে,
একসাথে মিলেমিশে পেটভরে খাই ।