বাবা কেমন আছো তুমি?
অনেকদিন হলো বাবা বলে ডাকা হয়না,
কি করেই বা ডাকবো তুমি তো চলে গেলে।
জানো? সেদিন  রাতে তোমার অস্থির গোঙ্গানীতে
আমি পৈশাচিক তৃপ্তির ঢেকুর গিলেছি।
যখন তুমি থেমে যেতে,
তখন আমার ভেতরটা হুহু করে উঠতো
এই বুঝি হারিয়ে গেলে,
কাকভোরে তুমি আর গোঙ্গালে না,
তোমার কন্ঠ বোধয় ক্ষীন হয়ে আসছিলো
শরীররটা বোধয় ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছিলো,
অতঃপর শুনলাম তুমি নেই, চলে গেছো
সত্যিই চলে গেছো।


বাবা জানো? তোমার বন্দী পুচকুটার বুলি ফুটেছে,
এখন আর আটকে রাখিনা, দিনভর উড়ে বেড়ায়,
বাড়ীর এগাছ থেকে ওগাছে।
সন্ধ্যে নামলেই ফিরে আসে।
সেদিন মা বলছিলো কুতসিৎ কাকেদের সাথে নাকি ঝগড়া করেছে,
মাথার দিকটায় খানিক আঘাত পেয়েছে,
চিন্তা করোনা বাবা ঠিক হয়ে যাবে।


বাবা!তোমার লাগানো ডালিম গাছে ডালিম ধরেছে
আর দক্ষিণধারটা ছেয়ে গেছে ঘৃতকুমারীতে।
ওহ বাবা! এবার আমি নতুন চাকরি পেয়েছি,
খুব ইচ্ছে ছিলো মাকে একটা রঙ্গিন শাড়ী দিবো,
কিন্ত শুনেছি মা নাকি এখন আর রঙ্গিন শাড়ী পড়েনা,
হাতে শ্বেত শঙ্খ আর সিঁথিতে নাকি সিঁদুর নেই,
তার বস্ত্র নাকি শ্বেত আভরণ,
তাই এবার একদরে ধবধবে একটা সাদা শাড়ি কিনে দিয়েছি।


জানো বাবা! মায়ের চোখটা সেদিন বেশ ছলছল ছিলো
হয়তো বেশ কেদেছিলো।
সাদা শাড়ী বোধয় মায়ের একদমই পছন্দ নয়,
শুনেছি তুমিই নাকি মাকে সাদা শাড়ি উপহার দিয়েছ।
বাবা! এবার ঘরের চালে নতুন টিন দিয়েছি,
বাড়ির সামনে তোমার প্রিয় হাসনাহেনা লাগিয়েছি,
আর মন্দিরের চারপাশটায় সাদা ফুল।


বাবা! তুমি ভালো আছোতো?
এখনো কি তুমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খাটো?
নাহ! ঐ যে উঠোনের এক কোনে তুমি শুয়ে আছো
কাল ঘুমে মঘ্ন তুমি।
ঘুমাও বাবা চির শান্তিতে ঘুমাও!!!!