নিকষ আধার , ছুটে চলা ধুমকেতু, জাজল্যমান নক্ষত্ররাজি,
কোন কিছুই ইদানিং টানে না,
নিয়ন আলোয় বৃষ্টি ভেজা রাতে ভিজেছি কত-
আজকাল সে ইচ্ছেটাও  আর আসে না।
একদা সযতনে লুকিয়ে রাখা প্রিয় সুনীল, শীর্ষেন্দুর আলোচিত নায়িকারা -যেন বড্ড ফ্যাকাশে,
বাড়ী আর অফিস, দশটা থেকে পাচটা ঘড়ির কাটায় বাধা –
এই গৃহপালিত জীবন আজ একেবারে একপেশে।


ভাল লাগার আর সুখে দুখে পাশে থাকা মানুষদেরও মাঝে মাঝে -খুব অচেনা মনে হয়,
বেখেয়ালে চায়ের আড্ডায়, আনমনা কাপের শীতল জলের চুমুকও বিস্বাদ প্রতিনিয়ত।
জানি চিরচেনা পথ, তবু আধো আধো এই পথটাকে অচেনা লাগে নিয়ত,
চারিপাশের বৃক্ষরাজি আর তার শাখায় বেসুরো
পাখির কুজন যেন পীড়া দিচ্ছে অবিরত।


নিত্য যতনে লেখা ডায়েরীর নীল মলাট ডাকে না কভু আর,
ধুলো মাখা তার আষ্ঠেপৃষ্ঠে, জন্মই যেন অনাদর ও অবহেলার।
বিনিদ্র কাটে রজনী,অচেনা এ ঘরের কোণের বিছানায় শুধু এপাশ ওপাশ,
উদ্ভ্রান্তের মতো শূন্যে তাকিয়ে, মেলাতে চাই না জীবনের যত হিসাব নিকাশ,
মাঝ রাতে হাতড়িয়ে খোজা সিগারেটের প্যাকেটে না পাওয়া সুখ,
তপ্ত ফিল্টার থেকে একটা তেতো স্বাদ যেন বিস্বাদে ভরে দিল মুখ।


খরস্রোতা নদীর মতো তেতো ভাবটা ছড়িয়ে পড়ছে সমস্ত শরীরে,
নিঃশ্বাস নিতেও বড় কষ্ট হয়,প্রকৃতিও কৃপণতায়
অক্সিজেন দেয় না মোরে,
বিষাক্ত হয়ে উঠছে হিমোগ্লোবিন,ক্রমেই ভারী হয়ে উঠছে বাতাস,
ক্লান্তিতে বুজে আসে চোখ,কোথাও মিলিয়ে গেল, শুধু ভেজা চুলের মিষ্টি সুবাস।


রাতটা আজ বড় দীর্ঘ, প্রহরীদের ক্ষণে ক্ষণে হাক শুনতে পাচ্ছি,
ওরা কি অচেনা এই শহরে ঘুমপাড়ানি গান শোনাতে এসেছে,
যেন ওরা 'আয় ঘুম আয়' গান গেয়ে চলেছে অবিরত,
বহু দূর থেকে ঢং ঢং ঘন্টার ধ্বনিও আজ করছে না আমায় বিরক্ত।
বাইরে এখনও ঝিম ধরানো সুরে গাইছে গান
ঝি ঝি পোকায়,
শিউলি ফুলে ঢাকা পথ আর জোছনা ভেজা রাত ডাকছে আমায়।


১৮.১২.২০১৭