নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তী-এর কবিতাwww.bangla-kobita.com ওয়েবসাইটে নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তী-এর প্রকাশিত কবিতাসমূহ।uuid:7d185313-565e-4d50-be79-02a6df9502c9;id=5822024-03-29T13:39:17Zhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/dampotto/দাম্পত্য2023-08-10T17:19:20-04:002023-08-10T18:13:03-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>জীবনের তরে জীবন দেখেছি ঢের<br />এখন তোমার জন্য নিজেকে দেখতে চাই</p>
<br /><p>এই যে সৌভাগ্যের রূপরেখা এঁকে দিয়ে গেছো<br />নিপুণ আল্পনার মতো ফুটে উঠেছে<br /> দাম্পত্যের সংসারী জলছবি</p>
<br /><p>আমি দুর থেকে শুনতে পাই কলহের কোলাহল<br />কাছে এলে দেখি থালা আলো করা ভাত<br />আর তোমার সজল নয়নে অপেক্ষার মায়ারঙ</p>
<br /><p>আঁচলের বাতাসে মায়ের স্মৃতি<br />হাতের স্পর্শে বান্ধবীর প্রতিশ্রুতি<br />চুম্বনে প্রেমিকার বেনুনির মতো শৃঙ্খলা</p>
<br /><p>আমার হারিয়ে যাওয়া জীবনের কলতান<br />কতো সহজেই যেন ফিরিয়ে দিলে<br /> নূপুরের ঝঙ্কারে<br /> <br />অথচ বুকের কুটিরে আশ্রয়টুকু ছাড়া<br /> নিজের জন্য চাইলে না কোনোকিছুই</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/manhatoner-koborer-tolay/ম্যানহাটনের কবরের তলায়2022-06-15T16:46:33-04:002023-06-25T15:54:54-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>ম্যানহাটনের কবরের তলায় সজাগ ঘুমিয়ে আছি,<br />ভাবছি আমার ব্যর্থ অতিবাহনের কথা।</p>
<br /><p>এলিজাবেথের বাড়িয়ে দেওয়া হাত কীভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি,<br />তার ফোঁপানো অনুভূতির প্রত্যুত্তরে জানিয়েছি কর্কশ প্রতিক্রিয়া।<br /> তবুও কোনো অভিযোগ ছিলনা তার,<br /> ছিলনা কোনো গোপন প্রতিহিংসা।</p>
<br /><p>আমার পার্থিব স্মৃতিফলকের অন্তিম অস্তিত্বে<br />সে আজও টাইমস্ স্কোয়ারের ব্যস্ততা রেখে যায়।<br />প্রতি শনিবার স্টারবাকসের উষ্ণতা, প্রিয় টিউলিপের সৌরভ<br />আমার মৃত্যুকালীন যৌবন ফিরিয়ে দেয়।</p>
<br /><p>প্রিয় এলিজাবেথ— জীবদ্দশায় একটিমাত্র গোলাপ চেয়েছিল,<br />অথচ এই পাষণ্ড, নিষ্ঠুর সংকীর্ণতা আমায় স্তব্ধ করেছে প্রতিবার।</p>
<br /><p>আজ তিরিশটি বছর পর<br />ম্যানহাটনের কবরের তলায় ঘুমন্ত জেগে আছি।<br /> এলিজাবেথের হিমেল অশ্রুধারায়<br /> আজ শূন্য বুকের সমস্ত কপাট গেছে খুলে।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/akasher-katha/আকাশের কাঁথা2022-02-24T07:52:14-05:002023-06-25T15:54:30-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>প্রদীপের গর্ভে<br /> সরিষার চোখে প্রতিফলিত<br /> নির্ঘুম অশ্রুর সরোবর।<br />অনশনক্লিষ্ট শিখার শৈল্পিক ছায়ায়<br />দেওয়ালের কোলে খেলা করে<br /> সাধনার জীর্ণতা।</p>
<br /><p>ব্যথার আকাশ—</p>
<br /><p>কপালের বুকে উই ধরা কড়িকাঠে আটকে আছে<br /> তারাদের ছাদ।<br />যেই ছাদ ভাঙবে না,<br /> উড়বে না কোনোদিনও ঝড়ে।<br />তারকারা ক্লান্ত হলে,<br /> প্রতিদানে আলো দেবে<br /> পারদের কণাহীন অন্ধের দুইচোখ ভরে।</p>
<br /><p>সেইটুকু আশা নিয়ে, অশ্রুর সরোবরে<br />টলটলে দুঃখের সুতোয়—<br />আজীবন শুধু আকাশের কাঁথা সেলাই করে গেছে<br /> আমার মা।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/ami-manush/আমি মানুষ2020-11-23T18:32:09-05:002023-06-25T15:54:35-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>আমায় যদি প্রশ্ন করো,<br /> জীবনে তোমার স্বার্থকতা কী?<br />উত্তরে জানাবো,<br /> “আমি মানুষ!”</p>
<br /><p>শুধাও যদি আমায় তুমি,<br /> সর্ববৃহৎ ব্যর্থতা?<br />উত্তরে ফের বলবো তোমায়,<br /> “আমি মানুষ!”</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/tarar-mofoswole/তারার মফস্বলে2020-11-06T08:33:19-05:002023-06-25T15:55:25-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>শান্তির ছায়াজল পেরিয়ে,<br /> যে পথের গভীরে ডুবতে চেয়েছিলাম;<br />আমরা কি জানতাম,<br /> সেই নিষিদ্ধ নিগমের ঠিকানা?<br />কাঁটাতারজাত আদর্শ লাগামের ফাঁস—<br /> বাঁধতে কি পেরেছিল,<br /> মনুষত্বরূপী সত্যের সাতকাহন?<br />একটিও কথাহীন শব্দের,<br /> অনুনাদ রক্ষিত ছিল কি?</p>
<br /><p>তবে, আজ কেন?<br /> কেনই বা আজ,<br />নিশ্বাসবন্ধনী এঁটে,<br /> অবয়বরূপী ছয়াপথ ধরে হেঁটে,<br />সেই মানবতার খোঁজে লিন হয়ে থাকা!<br />সভ্যতার ঝোপের ভিতর, <br /> ক্ষতবিক্ষত দৃষ্টির নির্ভুলে,<br />তাঁর কঙ্কালসার গুল্মের চারা খোঁজা!</p>
<br /><p>মাদকিয় ঘ্রাণ পিপাসিত ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতায়,<br /> ধরা কি পড়েছে,<br /> তাঁর অলীক পুষ্প-সৌরভ?</p>
<br /><p>তাহলে বলো,<br /> কোন্ সে পথ ধরে হেঁটে চলেছো আবার?<br /> কেনই বা চলেছো হেঁটে?<br /> কোথায়ই বা যেতে চাও?</p>
<br /><p>যে শহরে, কবরের আলো চুরি করে গৃহস্থের ললাট পড়তে হয়;<br /> সেথায় কি সৌজন্যের দাবি রাখা চলে?<br />যেই তরুণ তৃপ্তির অন্তর হতে,<br /> চুঁইয়ে পড়ে নরমাংসের ঘ্রাণ;<br /> তাদের কি আর মোচ্ছবি বিলাসিতা মানায়!</p>
<br /><p>তবে, আমারই বা কীসের দায়?<br /> কেনই বা এতো শব্দ অপচয়?</p>
<br /><p>সকলেরই জানা,<br /> বিংশের রাষ্ট্রক্ষমতা অনেক বেশি।<br /> আমার অ্যানিমিয়া আক্রান্ত রুগ্ন কলম—<br /> সে কি আর প্রসব বেদন সইতে পারে!</p>
<br /><p>সেই মধ্যবিত্ত ভয়টুকু নিয়ে, ফের ফিরে আসি—<br /> ডুব দিয়ে শান্তির ছয়াজলে।<br />ভোরবেলা ভরে যেথায়,<br />পরব্রহ্ম আঁধার বিলায়,<br /> শুকিয়ে যাওয়া তারার মফস্বলে!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/agnishob/অগ্নিশব2020-10-31T07:13:51-04:002023-06-25T15:54:30-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>তরীর ভিতর সুস্থ শরীর সর কাঠি দিয়ে লিখছে গান।<br />কাষ্ঠল যত হৃদয় সুতোয়, প্রেয়সীর তাঁত বুনছে জট।<br />লবণের মতো বিগলিত দেহে, ভিজছে আলো, নিভছে স্নান।<br />থৈ থৈ করা দুঃখ কূপের, তল ছুঁয়ে ফেলে ব্যাথার তট!</p>
<br /><p>ব্যাথার বালিশে ঘুমের আশায়, নীল ডুবে যায় চোখের পাতায়।<br />শুকনো পাতার ঠাণ্ডা শিরায়, নীল মিশে যায় কোন অজানায়।<br />চেনো কি তুমি, অদৃষ্টের আজান ধ্বনীর উৎসভূমি?<br />তৃষাতুর সুর সাধছে যেথায়, ব্রহ্ম-প্রবীণা বোষ্টুমি!</p>
<br /><p>নিশ্ছিদ্রের আঁধার হতেও গতিহীন সেই অস্থিরতা।<br />নীরবতা বুঝি এমন স্থবির? এমনই ধূসর রক্ত তার?<br />এহেন কাঙাল রিক্ত কমল। এহেন শীতল অগ্নিশব!<br />কালহর্ষক জীবন পাথারে, হিমেল পাথর রয় নীরব।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/sukh/সুখ2020-10-23T03:24:08-04:002023-06-25T15:55:16-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>রেশমকীটের নিষ্ঠিবণে দেখেছো কি পরিতাপ?<br />মেপেছো কি ঐ ফনির চাঁদের বিষেল যন্ত্রণা?<br />উত্তলতার তলার ঘরের এপিটাফে লেখা আছে;<br />সুখ যে বড়ই সূক্ষ্ম সুখেন, তোমরা বুঝলে না।</p>
<br /><p>যেই পাখিটার খেচরবৃত্তি অনীল নির্বাসনে।<br />একটিমাত্র পালকের ক্ষয়, লঘু করে যার ডানা।<br />সেই স্বর্ণগরাদ ভেঙে ফেলা ঠোঁট, খড়কুটো চিনে ফেলে!<br />সুখ যে বড়ই স্বাধীন সুখেন, তোমরা চিনলে না।</p>
<br /><p>হাতড়ে-কামড়ে ছিনিয়ে তো নিলে, সোনার চাদর-বালিশ।<br />এপাশ ওপাশ দীর্ঘশ্বাসেও পাল্লা বুজলো না!<br />ভাইগো সুখেন, পুষলে ব্যাথা;<br /> পুষলে নালিশ, পুষলে ঘৃণা।<br /> পুষলে কাব্য, পুষলে মালা,<br /> পুষলে সুরের সুরঞ্জনা!</p>
<br /><p>তবু সুখের খাতিরে মুঠেক দুঃখ, পুষতে পারলে না।<br />সুখ যে বড়ই হালকা সুখেন, ভাসিয়ে দেখলে না!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/ami-nojrul-noi/আমি নজরুল নই2020-10-03T08:41:32-04:002023-06-25T15:54:35-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>আলোটা নিভিয়ে দাও।<br />আর কিছু লেখার বাকি নেই।</p>
<br /><p> সোচ্চার কলমের দল কালি অপচয় করে;<br /> করুক!<br /> ওরা পাতার প্রতিটা সাদায়,<br /> করছে আবর্জনার চাষ।</p>
<br /><p>জোনাকীর নরম আলোর প্রভায়,<br />যাদের ফুটন্ত বীর্যের মতো উষ্ণতা—<br /> বীরত্বের প্রতীক!<br />জন্মদুয়ার ফুঁড়ে,<br />যে গভীরতায় নেমে গেছে ওই টানেল ড্রিলের পায়ের ছাপ!</p>
<br /><p>সেই দেশে, রুদ্ধ হয়ে এসেছে সমস্ত ধানের গলা।<br />বলি হয়ে গেছে সর্বশেষ বাকশক্তির ধর্ম!</p>
<br /><p>বাল্মীকি বর্ণিত পুরুষোত্তমের<br /> স্তম্ভিত বিবেক স্তম্ভ!<br />কশেরুকাহীন অঙ্গুরিমাল সমাজের,<br />উন্মুক্ত চাঁদোয়ার তলে—<br /> অবিচার্যের দেহ-দহন!</p>
<br /><p>কর্দমাক্ত অসহায় সংবিধান,<br />ভারসাম্যহীন অন্ধকার তুলাদন্ড!<br />বিগলিত মোমের ফোঁটায় প্রতিফলিত—<br />নির্ভয়া,<br /> আসিফা, <br /> প্রিয়াঙ্কা,<br /> মনীষাদের<br /> রক্তহীন ক্রুর দৃষ্টি!</p>
<br /><p>আহ্! আর পারছি না!!</p>
<br /><p>বলছি না, আলোটা নিভিয়ে দাও।<br />আমার ব্যর্থতায় আর আলোকপাত কোরোনা!<br />পারলে আমায় ক্ষমা কোরো।</p>
<br /><p>হাজার হোক,<br /> আমি তো আর নজরুল নই!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/somoyer-guptochor/সময়ের গুপ্তচর2020-09-19T18:29:43-04:002023-06-25T15:55:16-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>প্রচ্ছদ ছেঁড়া মলাটের বারান্দায়,<br />রং-তুলি হাতে সুখ এসে দাঁড়িয়েছিল।<br />ছেলেটি ফিরিয়ে দিলো,<br /> দুঃখ ভেবে!</p>
<br /><p>চিত্রগুপ্তের মতো খাতায়<br />সমস্তটা লিখে নিয়েছিল,<br /> সময়ের গুপ্তচর।</p>
<br /><p>ধুলাবৃত পড়ার টেবিলে<br />অমনোযোগী ছাত্রটির,<br />উদ্বৃত্ত দোয়াতের কালি;<br /> আজ এক-একটি স্বতন্ত্র শব্দ!<br />এক-একটি পাখনা বিহীন কাব্য।</p>
<br /><p>কাব্যের প্রতিটি পাতায়,<br />পাতা আছে শব্দাক্ষরী ফাঁদ।<br />দুরন্ত হরিণীর মতো পাঠক,<br />সেই ফাঁদের অবলীলায়,<br />তলিয়ে গেল<br /> কী এক অসীম অতলে!</p>
<br /><p>কলমের ভিতর <br />কোন এক আলোলিকার সন্ধানে,<br />আলো আঁধারির ছায়ার অন্তরালে;<br />আমি এক নক্ষত্রের<br /> প্রসব বেদনা শুনেছিলাম।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/lobon-ronger-ator/লবণ রঙের আতর2020-09-13T19:33:54-04:002023-06-25T15:54:55-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>নিষিদ্ধতার রঙের আঁচড় লেগে,<br />হচ্ছে খালি বুকের ফ্ল্যাটবাড়ি।<br />পূর্ণিমা বোঝে রাতের গভীর আঘাত;<br />হাওয়ার ক্ষত, সত্যি কি দরকারি?</p>
<br /><p>উড়ছে হাওয়ায় লবণ রঙের আতর।<br />বিষের বৃষ্টি, চিঠিদের স্নানাগার।<br />বাষ্পীভূত শব্দেরও স্বেদ জানে;<br />হালকা হওয়াই, সূত্র তোমায় পাওয়ার।</p>
<br /><p>সুতোর বুননে সূত্র লেখার ছলে,<br />রুমাল নামক ওজরে সূত্রপাত।<br />আজকে তাদের সিক্ত তন্তু জানে,<br />কী করে বেঁধেছি নোনতা জলপ্রপাত।</p>
<br /><p>খরস্রোতা দুঃখ প্রবাহমান।<br />দুঃখে ভরাই শীতল কাচের গ্লাস।<br />আলতা দুচোখ হাতড়ে কামড়ে খোঁজে,<br />আত্মঘাতী কাব্যের অনুপ্রাস।</p>
<br /><p>কাব্য ভরা শ্রাব্য কথার ভিড়ে,<br />খইয়ের মতো ফুটতে চাইছে ঠোঁট।<br />পূর্ণিমা কাঁদে রাতের মৃত্যুশোকে;<br />হাওয়ার বুকে তখনও গভীর চোট।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/mrityufokir/ম্মৃত্যু-ফকির2020-09-11T14:15:24-04:002023-06-25T15:55:01-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>আমোদ আছে,<br /> তৃপ্তি আছে,<br /> শৌর্য আছে।<br />দুই দণ্ডের তন্দ্রার বড়ো অভাব।<br />লালিত্য মাখা ভোরের ভিতর,<br /> কর্মব্যস্ত প্রহর আছে।<br />নিদ্রাসুলভ রাত্রির বড়ো অভাব!</p>
<br /><p> অভাবের তাড়নায়,<br /> বিকিয়েছি বিবেকের মাথা।<br /> ভিজিয়েছি রঙিন জলের শিখা।<br /> নিভে গেছে নক্ষত্রের আলো।<br /> ঝড়ে ভাঙা গাছ থেকে, পেড়ে এনেছি<br /> পরিত্যক্ত বাবুইয়ের বাসা।</p>
<br /><p> ঘুমন্ত জোনাকির মুখে জল দিয়ে,<br /> ওদের নিভন্ত জীবন উৎসর্গ করেছি,<br /> ক্ষুধার্ত আঁধারের— নৈবেদ্য-র থালায়।</p>
<br /><p>বিনিময়ে, তৃষার্ত চোখের ভিতর;<br /> জন্মেছে লোহিত সরোবর।<br />তবুও, স্বচ্ছ জলের বড় অভাব।<br /> নিদ্রার বড় অভাব!</p>
<br /><p>একঘরে হয়ে যাওয়া হৃদয়-কুটিরে<br /> ছোট্ট একটি ঘরে;<br />ছেঁড়া মাদুরের কোলে মাথা রেখে,<br /> ঘুমিয়ে গেছে কথাদের কারিগর!</p>
<br /><p>আহারে! কতই সুভাগিনী!<br /> চোখের জমিন যার, নিশুতির নিদে উর্বর!</p>
<br /><p> আমি তবে শাস্তি পাই কোন পাপের?<br /> কোনরূপ ঘৃণ্য কৃতকার্যের ফলে,<br /> ঋজুত্ব হারানো স্নায়ুদের,<br /> তন্তুর মতো সুতোয়<br /> বেঁধে গেল অতন্দ্রিত জট!<br /> বলে দিয়ে যাও!</p>
<br /><p>ও গো অনুর্বর মাতৃক্রোড়—<br /> একবার বলে দিয়ে যাও।<br />অন্ধ গ্যালিলিও—<br /> একবার বলে দিয়ে যাও।<br />বিরহের যাতনা সিক্ত,<br /> বিনিদ্র শিমূলের তুলো—<br /> অধমের অপরাধ বলে দিয়ে যাও!<br /> বলে দিয়ে যাও...<br /> (বলে দিয়ে যাও...)</p>
<br /><p>অজ্ঞাত দরাজ কণ্ঠে<br /> মুখরিত শান্ত আঁধারে,<br /> শিহরিত হলো শরীর।<br />কারা যেন বলে যায়—<br />“আদপে নিদ্রাহীন চোখ দুটোই জীবন।<br /> ঘুমের কপাট বন্ধ হলেই,<br /> ভিক্ষা নিয়ে ফিরে যাবে,<br /> বিনিদ্র মৃত্যু-ফকির!”</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/oxygen/অক্সিজেন2020-08-20T15:42:08-04:002023-06-25T15:55:12-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>যারা এসেছিলো, ফিরে গেছে।<br />অনেক তাড়া,<br />অনেক কাজ।<br />যারা ছিলো, তারা সরে গেছে<br /> অনেক ব্যাথা<br /> অনেকটা লাজ!<br />লজ্জা শুকোয় চারার মতো।<br />রোদের অভাব,<br />সূর্য নেই!<br />আগুন আমার ছাইয়ের ভিতর,<br /> জ্বলছে জলের<br /> চাহিদাতেই।<br />সিদ্ধপুরুষ নপুংশকের,<br />শিখছে বাণী,<br />দিচ্ছে জ্ঞান।<br />আমার মনের বিবেকজ্যোতি,<br /> হাঁপলে চেঁচায়—<br /> “অক্সিজেন!”</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/amanush/অমানুষ2020-08-14T18:41:28-04:002023-06-25T15:54:30-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>রোজ দায়ভার নিয়ে হাঁটছি,<br />                     তবু চলতে পারছি না।<br />আমি শব্দের ছবি আঁকছি,<br />                     তারা কবিতা হচ্ছেনা।<br />কাঁচা অঙ্কের মতো জীবনের,<br />                     কোনো সূত্র মিলছে না।<br />আমি রৌদ্রের তাপে পুড়ছি,<br />                     তবু সূর্য হচ্ছিনা!</p>
<br /><p>কাঁধে বয়ে যাই ছেঁড়া রাকস্যাক,<br />                     মিহি পণ্যেরা খোয়া গেল।<br />প্রিয় কলমের খিদে চুষে নেয়,<br />                     রোগা দোয়াতের শিশিগুলো।<br />লাভ খুয়েছে, ক্ষতি পেয়েছি—<br />                     আর হিসেব রাখছি না।<br />আমি মানুষেরই মতো দেখতে,<br />                     তবু মানুষ হচ্ছিনা!<br /></p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/kaldorpon/কলদর্পণ2020-08-12T15:01:54-04:002023-06-25T15:54:49-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>চোখের কোলে, ঘুমের ছলে, দুঃস্বপ্নেরা বাঁধলো ঘর।<br />ব্যথিত আশার উত্তমাশায়, নির্বাসিতের জমলো ভিড়।<br />শব্দের ভিড়ে, অম্বর চিরে, শিথিল নিখিলে উঠলে ঝড়;<br />শব বাহি সব শৈশবই খোঁজে, সুখদায়ী এক শান্তি নীড়।</p>
<br /><p>সন্ধ্যাতারা ভরসা দিয়ে, মেঘলা চাদরে ঢাকলে মুখ।<br />চিরস্থায়ী অমাবস্যার, প্রতিজ্ঞা হয় অন্ধকার।<br />সেই রাত্তিরে ভিজলে নয়ন, শান্তি মাখবে ক্লান্ত বুক!<br />বন্ধুরা সব পিঠ ফেরালেও, শত্রু ভোলেনা অঙ্গীকার!</p>
<br /><p>আজকাল এই চোখের আলোর, আস্থারা বড় ব্যবস্থাহীন।<br />তার চেয়ে বরং আঁধারেই আছে স্বপন তৃপ্তি, স্বর্গসুখ!<br />পিচ গলা রোদে ফিরবে না জানি, টগবগানো ঘোড়ায় মহিন।<br />তাই সাবধানে গুটিয়ে হৃদয়, কালদর্পণে দেখছি মুখ।</p>
<br /><p>এই শঠ জগতের অনেক মুখোশ,<br /> বাসলো আমায় ভালো।<br />শুধু আঁধার টুকুই মানুষ করে,<br /> চিনতে শেখালো আলো।<br />শুধু আঁধার টুকুই মানুষ চিনিয়ে,<br /> বাসতে শেখালো ভালো।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/songkromon/সংক্রমণ2020-08-11T08:38:34-04:002023-06-25T15:55:16-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>রুগ্ন ঘরের পোশাকে, দূর্বল আলো।<br /> আজকাল বাতিদের সাথে লড়াই করে,<br />আমার পা পিছলে যায়।<br /> ঘুমের ভিতর, মনের ভিতর, চোখের ভিতর<br />সমস্ত আলোতে, কালো পর্দা ফেলেছি।</p>
<br /><p>কড়িকাঠের ঘুন-বাঁত, সিলিংফ্যানের হাঁপানি,<br /> ভিতরকার রোগীটাকে প্রশ্রয় দেয়।<br />রুপোলী থালায় সাজানো, কেমিক্যাল আভিজাত্যের চেয়ে,<br /> শানকি ভরা দুমুঠো খই,<br />তাৎপর্যে অনেকটা ভারী মনে হয়!</p>
<br /><p>ঝরাপালকে চিত্রিত, ধূসরপাণ্ডুলিপি হাতে,<br /> রাজরোগীর দুয়ারে কড়া নাড়েন—<br />মহাপৃথিবীর বনলতা সেন।<br />শিশিরস্নাত কাশবনে, বিরুৎ তুলোর তোড়া হাতে,<br /> আর্দ্র কণ্ঠে ডাকে বারবার—<br />আর্ত শ্যামলী কাহার।</p>
<br /><p>সেসব কি বুঝবে আমার রোগ?<br /> বুঝবে এই সংক্রামক বিছানা?<br /> বুঝবে কি, আমার অসুস্থ দশ ফুট বাই বারো?</p>
<br /><p>নাহ্! ওদের মৃত্যুভিতের<br /> আঠাশ দিনের,<br /> আয়ু ফুরিয়েছে!</p>
<br /><p>তাই ভেবেছি, পিঁপড়েদের সাথে বাসা করবো।<br />শুনেছি, ওদের অসুখে সংক্রমণ নেই!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/khoma/ক্ষমা2020-08-07T07:08:00-04:002023-06-25T15:54:49-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>মানুষের ভুল আর ভুলের মানুষ<br /> চির পরিপূরক,<br /> অথবা ধ্রুবক!<br /> অহমিকা কীটে বাঁধা নিরেট মানস<br /> সয়েছে আঘাত;<br /> কতো রক্তপ্রপাত!<br /> ডিম ভাঙা খোলে পচে, বিবেক শাবক!</p>
<br /><p>তারা সব দোষী সেজে, কেঁদে বারবার<br /> চেয়ে গেছে ক্ষমা;<br />পেয়েছে আবার,<br />নমো-নমো ভঙ্গিতে নিরীহ সাজার,<br /> মিছে ছাড়পত্র;<br />নিয়ে সর্বত্র<br /> সাজিয়েছে ভুলের বাগান,<br /> নিযুত, হাজার!</p>
<br /><p>অনুতাপে দেখি তার লাল উত্তাপ,<br />“ক্ষমা চাই, ক্ষমা দাও”— তুলেছে স্লোগান!<br />নম্র আগ্রাসনে করেছে বিলাপ।<br />“ক্ষমা চাই, ক্ষমা দাও”— তুলেছে স্লোগান!</p>
<br /><p>বন্ধু, পিতা, কিবা যে বা তুমি প্রিয়,<br /> শুদ্ধ স্মরণে, দুটি স্তবক রাখিও;</p>
<br /><p>ত্রুটির মানুষ আর মানুষের ত্রুটি<br />যারা বদলেছে কর,<br />জড় কলেবর।</p>
<br /><p>কে বা তাঁকে করে ক্ষমা, কার অধিকার?<br /> বিবেকের ব্রতী যিনি,<br /> যার বিনয়ী আচার;<br /> ধরাতলে ক্ষমা তাঁর কী বা দরকার?</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/pothik/পথিক2020-08-05T18:21:46-04:002023-06-25T15:55:12-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>যত পথ ঘুরি আমি, ততো ভুলে যাই।<br />কবেকার শিলে, কার লিখেছি কী নাম।<br />পথিকের পথ ভরে কাঁটা ছিল তাই,<br />প্রণয়ীনি প্রীতে বুঝি, ঘটেছে বিরাম।<br />উৎকন্ঠিত যত অন্তর পীড়া, প্রত্যয়<br />হারা হয়ে, খুঁজেছিল মাইলফলক।<br />সংরক্ষিত প্রতিশ্রুতি, তবুও ব্যত্যয়।<br />শেষ বেলা বেলি ঝরে, ফুটেছে নোলক!<br />বিশ কি বা পঁচিশ, না জানি কত বছর<br />গেলো চলে। কত দিন জমে আছে ঋণ!<br />কত রাত ঘুমের ব্যাঘাত! কত না শহর<br />ঘুরে বুঝি; নীরবতা টুকু, সমীচীন!<br />ব্যর্থতা টুকু নিখাদ; সমাধি-সঙ্গিনী।<br />ছায়াপথে শুনি, তাঁর অষ্ট-পদধ্বনি!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/mrittyu/মৃত্যু2020-08-04T17:38:19-04:002023-06-25T15:55:01-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>যদি রোগ বাড়তে চায়, <br /> বাড়তে দাও। <br />মৃত্যু তো কুয়াশার মতো আবছা, <br />মৃত্যু, শিশিরের মতো শীতল!</p>
<br /><p>অবিলম্বে যদি চিঠি পাঠায়,<br /> অনুমতি দাও। <br />উপেক্ষা করার উপায় নেই, <br />তাই আপ্যায়নে যত্ন রেখো।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/amaramira/আমার আমি(রা)2020-08-01T20:49:04-04:002023-06-25T15:54:35-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>আমার ভিতর, আরও অনেক আমি’র বসবাস।<br /> যার মন দয়ার ওজনে ভারী,<br /> সে আগলে রাখে আমার দুয়ার।<br /> যার ভিতর জন্মেছে কর্তব্যজ্ঞান,<br /> তাঁকে দিয়ে হয় সমস্ত কার্য সম্পাদন।<br />যে ‘মানুষ’ আর ‘হোমো-সেপিয়েন্স’ এর তফাৎ শিখেছে,<br /> তাঁকে রোজ স্কুলে মাস্টারি করতে পাঠাই।<br /> নীতিবোধে সিদ্ধ হয়েছেন যিনি,<br /> তিনি পেয়েছেন, মাননীয় বিচারপতির আসন।</p>
<br /><p> এছাড়াও, আমার একটা পোষ্য আছে।<br /> বুকের অতল অন্ধকূপে,<br /> তাকে আটক করেছি।<br /> তার শুষ্ক-শীতল রক্ত জঠরে,<br /> একটু একটু করে বাড়তে চায়—<br /> লালসা, হিংসা, গরিমা, স্বেচ্ছাচার, নির্মমতা...</p>
<br /><p>অনুশাসনের শেকল ছিঁড়ে, পঙ্গু পা দুটো দাঁড়াতে শেখেনি।</p>
<br /><p> তুমি তাকে সহজ ভেবে, আঘাত কোরোনা যেন।<br /> পাঁজরের গারদ নাকি অতি সহজেই ভেঙে ফেলে,<br /> ঐ শান্ত, নিরীহ, নিষ্পাপ দানবমূর্তি!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/jodihothathariyejai/যদি হঠাৎ হারিয়ে যাই2020-07-30T19:20:15-04:002023-06-25T15:54:49-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>কাল ধরো যদি হঠাৎ হারিয়ে যাই,<br />খুঁজবে কি আর আমার ঠিকানা দূরে?<br />ডাকবে কি আর প্রিয় ডাকনাম ধরে?<br />ভুলবে বোধহয় জগৎ ঋতে তাই!</p>
<br /><p>যদি পড়ার ঘরে নাইবা খুঁজে পাও।<br />ছুট্টে কি যাবে অফিস মোড়ের পাড়ায়?<br />খুঁজবে ভিড়ে, কে সস্তা তামাক পোড়ায়?<br />অচীন মুখে— চেনা আদল খুঁজে যাও!</p>
<br /><p>কোনো মর্গে যদি আমার খোঁজটি মেলে।<br />আসবে কি তুমি দেখতে একটিবার?<br />অভিমানী ঐ চোখে— করবে তিরস্কার?<br />বংশী সুরে শান্ত তখন; ‘পাগল ছেলে!’</p>
<br /><p>বৃষ্টিভেজা দুঃস্বপ্নে, আসবো আবার ফিরে।<br />মন ছিন্ন ছন্দ, দেবো শব্দ সূত্রে জুড়ে!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/ektukroprojonmo/এক টুকরো প্রজন্ম2020-07-28T20:47:40-04:002023-06-25T15:54:45-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>কথাটুকু নয় কথার ভাঁজেই থাক,<br />কবিতারা নাকি নিয়মের দলছুট!<br />পাঠাগার বুকে, ভারে ঝুলে পড়া তাক;<br />অবসর নিতে উৎসাহে প্রস্তুত।</p>
<br /><p>কী হবে বলো ‘কাব্য-টাব্য’ লিখে?<br />পরিণাম সব ভালই রয়েছে জানা।<br />ফোকাসে থাকুক, ‘চাকরি-বাকরি’, বিয়ে।<br />আর শ্বশুরের, মোটা মাটির আস্তানা।</p>
<br /><p>অবসর পরে বছর ষাটেক পর,<br />ফিরবে না কেউ ধানসিঁড়িটির তীরে।<br />বাড়বে সেদিনও প্রথাগত এই জ্বর,<br />হাঁটবে না তবু কলম শব্দভিড়ে।</p>
<br /><p>আবার কে জানে নিযুত চক্র শেষে,<br />মুঠোফোন যদি শিশুর মুষ্টি হারায়।<br />শব্দেরা ফের হেঁটে যাবে অক্লেশে,<br />কিশোর প্রেমীর পদ্য বা কবিতায়।</p>
<br /><p> কলমের ঘুম হয়তো ভাঙবে সেদিন,<br />কোনো তরুণ কবির জিয়ন কাঠির ছোঁয়ায়।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/ayurog/আয়ুরোগ2020-07-27T09:29:56-04:002023-06-27T01:47:51-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>কমলের কোমলতাহীন, আয়ুরোগে দিন চলে যায়।<br /> সুখ মিশে যায়,<br /> সুখ ঝরে যায়,<br /> শামুকের শিরায় শিরায়।</p>
<br /><p>সময়ের সাময়িক ঋণ, বকেয়ারা কাঁধ পেতে দেয়।<br /> উলুধ্বনি দেয়,<br /> খই ছুঁড়ে দেয়।<br /> কবিতার হলদে পাতায়।</p>
<br /><p>পোড়া দেহে জ্বর এলে খুব, দায় নেই ঘোর কাটাবার।<br /> জিত কিবা হার,<br /> কিছু নেই আর।<br /> বাকি সব পুড়েছে আমার।</p>
<br /><p>তাড়া নিয়ে ফিরে গেলো যারা, তারা সব অচেনা আমার।<br /> মিছে পাওনার,<br /> অলীক বাহার।<br /> কাঁদে শুধু শ্যামলী কাহার।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/itirsmriti/ইতির স্মৃতি2020-07-23T14:29:42-04:002023-06-25T15:54:45-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>আমার একটা পাহাড়ের মতো মন ছিল।<br />তার এভারেস্টের মতো উঁচু মাথা ছিল,<br />ছিল শীতঘুম জুড়ে ‘আন্দিজ’ সম বিস্তার।</p>
<br /><p>আমার দুটো নদীর মতো চোখ ছিল।<br />নীলের মতো দীর্ঘ তাদের কোল ছিল,<br />ছিল কঙ্গোর মতো গভীর তলে, কালচে আলোর সংসার।</p>
<br /><p>এককালে মিছে প্রলাপ বকা দুটো ঠোঁট ছিল।<br />স্নেহচুম্বনে নিবারিত তার তৃষ্ণা ছিল,<br />ছিল রক্ত সেচে ফ্যাকাসে জমির চাষ।</p>
<br /><p>একযুগে এই মানসদ্বারে দুই প্রহরী ছিল।<br />ভালোবেসে বোনা দুয়ার ফলকে, ‘বন্ধু’ তাঁদের নাম ছিল।<br />ছিল নিরপেক্ষ প্রকোষ্ঠ জুড়ে, পৃষ্ঠপোষক সুবাস।</p>
<br /><p>আমারও কিছু অস্ফুটিত অভিমান ছিল।<br />ব্রহ্মগুপ্তের ব্যাখ্যা মতে ‘শূন্য’ তাদের মান ছিল,<br />ছিল ‘বুটিস ভয়েড’ কেন্দ্রে তাদের বাসা!</p>
<br /><p>আমার কিছু লিখতে না পারা শব্দ ছিল।<br />টাংস্টেনে গড়া ছুঁচের মতো সূক্ষ্ম তাদের ধার ছিল।<br />ছিল শুভ্র চাদরে কাব্য হওয়ার আশা!</p>
<br /><p>আমারও বোধহয়, একটা চা চুম্বনী সকাল ছিল।<br />সিড়ির তলার ভাঁড়ার ঘরে, বস্তা ভর্তি চাল ছিল।<br />ছিল বাগিচা ভরে চেয়ে থাকা সুখী মুখ!</p>
<br /><p>কে জানে, সেটা কোন সাল ছিল।<br />কাল-সাপেরই ছোবল খেয়ে, সভ্যতা মাতাল ছিল।<br />ছিল কফিনের কাঠে লিপ্ত মুক্তি সুখ!</p>
<br /><p>আমার একটা কবিতার মত খাতা ছিল।<br />সমাপ্তিহীন গল্পে ভরা, দিস্তা খানেক পাতা ছিল।<br />ছিলনা শুধু ব্যাকরণ ফাঁদে বেঁধে ফেলা কোনো বেড়ি!</p>
<br /><p>আমারও একটা হারিয়ে যাওয়া ‘আমি’ ছিল।<br />মরফিন রসে ডুবে যাওয়া ওই কলমটা বড়ো দামী ছিল।<br />আর ছিল, পকেট ভর্তি খুচরো অদরকারী!</p>
<br /><p>আজকে আমার পাথরের মতো বুক আছে।<br />তাতে নাম না জানা, ভিনদেশী এক অসুখ আছে।<br />আছে আলিঙ্গনের চাহিদা ভরা শ্বাস।</p>
<br /><p>আজও আমার একটা নাগাল আছে।<br />স্বাধীন হলেও সেই কারাদ্বারে, মস্ত এক আড়াল আছে।<br />নেই শুধু আর পাঁজর খাঁচায়, ভিনদেশিনীর বাস!</p>
<br /><p>আমার একটা পাহাড়ের মতো মন ছিল।<br />আমার একটা, আমার মতন ‘আমি’ ছিল!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/shyamolikahar/শ্যামলী কাহার2020-07-22T09:33:36-04:002023-06-25T15:55:12-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>শ্যামলী কাহার গর্ব আমার, বড়ই সাধের মেয়ে।<br />সাহসিনী মুখে, প্রত্যয়ী চোখে, থাকেনি সে থেমে ভয়ে।<br />মিথ্যের ঘরে জন্মের পরে, মরেছিলো বহুবার।<br />পরিচয় চাই, পণ নিলো তাই, ছোট্ট শ্যামলী কাহার!</p>
<br /><p>বিক্রীত দেহে বিপণন মোহে, ঘটল সূত্রপাত।<br />অষ্টম মাসে, মহা উচ্ছ্বাসে, শুভ বার্তাটি এলো।<br />লোকে বলে চেয়ে, গণিকার মেয়ে রূপের জলপ্রপাত।<br />ফুলমাসি বলে, পরিণত হলে দর হাঁকা যাবে ভালো!</p>
<br /><p>শুনে সেই স্বর, কাঁপে থর থর, পিতৃহীনার মাতা।<br />মাসির আদেশ, মানেনা বিশেষ, নেই কারো ধৃষ্টতা।<br />পতিতার নাম চড়বে না গায়ে, ধার্য হবেনা দাম।<br />ছাড়া পেতে তাই ঝরাতেই হবে, রক্ত কিংবা ঘাম।</p>
<br /><p>ঘাম শুধু নয় ঝরলো রক্ত, ঝরলো মাতৃফুল।<br />ছোট্ট শ্যামলী ভাবলো সকলই, তাঁর আগমনী ভুল।<br />যদিও পতিতা তবুও সে মাতা, চোখ ভেসে যায় শোকে।<br />কাঙ্খিত সেই মানুষ হবেই, যে যাই বলুক লোকে!</p>
<br /><p>অশ্রু সাঁতরে, আঁধার হাতড়ে, খুঁজে ফেরে প্রতিঘর।<br />নিশুতির রাতে, বালিকার সাথে, নেই কোনো সহচর।<br />ছুটে ছুটে যায় দীর্ঘ সে পথ, ফিরে ফিরে পিছু চায়।<br />লোকালয় ভরা ভদ্র আলয়, দিলো নাকো আশ্রয়!</p>
<br /><p>রাত্রির পরে ঘাট চত্বরে, সংজ্ঞা হারানো দেহে,<br />ক্লিষ্টের মুখে নিদ্রার সুখ, ফুটে ওঠে মায়া হয়ে।<br />সেই মায়াবলে, পরিচিত টানে, ভারী হয়েছিল কোল।<br />যেই কোল মোর খালি করেছিলো, মড়কের দাবানল!</p>
<br /><p>উঠে তাড়াতাড়ি, ফিরে আসি বাড়ি, সঙ্গে ছোট্ট মেয়ে।<br />করি অনুমান বয়সের মান, চার কিবা পাঁচ হবে।<br />চোখ দুটি তাঁর বড় পরিচিত, বহুকাল আগে দেখা।<br />এমনই নয়নে বাবা বলে শুধু ডাকতো আমার রেখা।</p>
<br /><p>সব কথাটুকু বললো আমায়, রইলো না কিছু বাদ।<br />এই শহরের খন্দে, কূহরে ভরেছে মৃত্যুফাঁদ।<br />কথাটুকু শুধু শেষ হতে দেরি, মুখ ঢাকে দুই হাতে।<br />অভয় যুগিয়ে, বক্ষে জড়িয়ে, আগলেছি দিনে রাতে।</p>
<br /><p>এক মেয়ে খুয়ে, পেয়েছি যে ফিরে, হারানো পিতৃসুখ।<br />কালো ছায়া হতে লুকিয়েছি তাকে, আড়াল করেছি মুখ।<br />মানুষের তরে মানুষ হতে সে গাঁথলো আশার মালা।<br />আষাঢ়ের জলে দুইজনে মিলে, ধুয়েছি কত না জ্বালা!</p>
<br /><p>কাটে তারপর আঠেরো বছর, আঠেরো দিনের মতো।<br />কালকের সেই শ্যামলী যে আজ মানুষেতে পরিণত।</p>
<br /><p>বৃত্তি মেধায়, বিলিতি হাওয়ায়, পড়ে এলো ডাক্তারী।<br />আজ ডাক্তার, শ্যামলী কাহার, সম্মানে সরকারি।<br />বিদেশিনী মেয়ে, গলায় জড়িয়ে, বলে “বাবা এই দেখো;<br />কষ্টের ঘাম, মিটিয়েছে দাম; আজ আমি দরে শ্রেষ্ঠ!”</p>
<br /><p>উপাধিতে দামি পরিচিত আমি, ভয় নেই বাবা আর।<br />পতিতা মায়ের সন্তান আমি; সংজ্ঞা শ্যামলী কাহার!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/aram/আরাম2020-07-20T19:07:31-04:002023-06-25T15:54:40-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>চুরাশি লক্ষ্য যোনীপথ অতিক্রমের পর,<br />এই মানবজন্মে আরাম বলে কিছু নেই।</p>
<br /><p>আছে শুধু <br />হেঁটে চলা দুটি পা,<br />ভার বাহী দুটি হাত,<br />রাডারের মতো চোখ,<br />আর আধপেট মতো ভাত।</p>
<br /><p>ক্ষণিকের কিছু লোভ,<br />কিছু উপশমহীন ব্যাথা,<br />চাহিদার মস্করা,<br />আর বিরামের পানশালা।</p>
<br /><p>কিছু আরামের পিছু নিয়ে,<br />পথে আবার হোচট খাওয়া।<br />ধূলো ঝেড়ে উঠে পড়ে,<br />ফের দুই ঢোক পান করা।</p>
<br /><p>ধূলো ঝেড়ে উঠে পড়ে,<br />ফের সময়ের ট্রেন ধরা। </p>
<br /><p>চুরাশি লক্ষ্য যোনীপথ অতিক্রমের পর,<br />এই মানবজন্মে স্বস্তির কোনো ধাম নেই।</p>
<br /><p>সময়ের আদি গন্তব্যই, জীবনের শেষ ধাম।<br />অবকাশে এই পথিক দেহের, ক্ষণিকের বিশ্রাম।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/abyahotokalprobaho/অব্যাহত কালপ্রবাহ2020-07-18T21:01:38-04:002023-06-25T15:54:30-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>নদী পেটে জল, গর্জালো আকাশ।<br />পানিপথ জলে ভেসে যায়।<br />তুলো ছিঁড়ে হয়, ভেজা ক্ষত চাষ।<br />কাটা দাগ শিরায় শিরায়।<br /> আষাঢ়ের মেঘ-রোদে,<br />ক্লিপে ঝোলা স্মৃতিরা শোকায়।</p>
<br /><p>সিঁদুরের দাগ, মুছে ফেলে শোক।<br />হতাশার নিশ্বাস পড়ে।<br />ধুলোমাখা ফ্রেমে, পেট মোটা জোঁক!<br />প্রিয়মুখে ধূসরতা বাড়ে।<br /> ক্ষতাহত ইঁদারার,<br />কপিকলে চুড়ি-শাখা নড়ে।</p>
<br /><p>জীবনের ঋণ, মাশুল বিহীন।<br />চিতা মানে, দানে মেলা দেহ।<br />ক্ষণিকের ভোগ— নিমেষে বিলীন!<br />তারই নাম আয়ু নির্বাহ।<br /> জীবনের বাঁধ ভাঙে,<br />অব্যাহত কালপ্রবাহ।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/ishankonerdebdaru/ঈশান কোণের দেবদারু2020-07-17T21:00:33-04:002023-06-25T15:54:45-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>অরণ্যের ঈশান কোণের দেবদারুটায় ফল ধরে না।<br />তার অপুষ্ট ফুলগুলি, কোন অজানা দমকা ধমকে<br />ঝরে যায় বারবার।</p>
<br /><p>পাখিরা তাঁর কোটরে বাসা বাঁধে না।<br />বানরের দল, দোল খায়না ওর শাখায়।<br />এমনকি, একটা কাঠঠোকরাও<br />ওর কুঞ্চিত বুকে এঁকে যায়না<br />স্নেহময়ী ক্ষতচিহ্ন।</p>
<br /><p>নির্বান্ধব বন্ধ্যাত্বের জলজ্যান্ত উপমা—<br />অরণ্যের ঈশান কোণের দেবদারুটা।</p>
<br /><p>একদিন, অন্ধের দৃষ্ঠির চেয়েও কালো আঁধারে<br />ওর কাছে এসে দাঁড়ালো, ধারালো ধাতুর দল।<br />বন্ধুত্বের দাবি জানিয়ে, সক্কলে মিলে করলো আলিঙ্গন।</p>
<br /><p>অদৃশ্য চোখের আবেগ মিশ্রিত রজনাশ্রুতে,<br />ভিজে গেলো গাম্বুটের তলে<br />দলে যাওয়া দূর্বাদের<br />মৃতপ্রায়, কঙ্কালসার দেহ।</p>
<br /><p>আগামীর পৃথিবী চোখ খুলে দেখলো,<br />অরণ্যের ঈশানকোণে,<br />সাঙ্কেতিক আয়ুচক্র খোদিত একটা সমাধিফলক পড়ে আছে।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/bhorerswopno/ভোরের স্বপ্ন2020-07-16T19:51:20-04:002023-06-25T15:54:40-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>ধরো, কাল খুব ভোরে ঘুম ভাঙলো,<br />চোখ কচলে খবর খুলে দেখলে<br />সিরিয়াতে ফুল ফুটছে নতুন করে।<br />ইতালিতে মানুষ দু-এক কথায় হাসতে শিখছে।<br />সুস্থ হয়েছে বেজিং-এর বাতাস।<br />ভারত-পাকিস্তানের সীমানা গিয়েছে মুছে...</p>
<br /><p>ভ্রমণে বেরোলে,<br />দেখলে নর্দমা জুড়ে বইছে কেবল বিশুদ্ধতা।<br />বিশ্ব জুড়ে বন্ধ হয়ে গেছে অস্ত্র উৎপাদন,<br />তালা পড়েছে থানা, আদালতের দ্বারে।<br />শাসকের দল বর্ণ ভেদান্তর ছেড়ে এক টেবিলে<br />চা খাচ্ছে, হাসছে, গাইছে, তাস খেলছে...</p>
<br /><p>পড়তে বসেই খেয়াল হলো;<br />দুর্নীতি, অনাচার, হাহাকার, ধর্ষণ, তস্করি, গরিমা, কুলাঙ্গার... <br />সমস্ত ভাষার অভিধান হতে<br />এই দুরাচারী শব্দেরা আজ বিতাড়িত।<br />মস্তিষ্কের বদলে মন থেকে কবিতা লেখা হচ্ছে।<br />জ্ঞানী জনেরা অহংকার ভুলে <br />বিনম্রতার ভাষা শিখে ফেলেছে!</p>
<br /><p>খুঁজতে গিয়ে দেখলে, আসলে হারায়নি কিছুই।<br />বর্ণ আছে, শুধু বিভেদটুকু নেই।<br />ধর্ম আছে, শুধু ধর্মযুদ্ধের ইতিহাস গেছে মুছে।<br />যুক্তি আছে, তর্ক আছে, <br />শুধু সেই ওজরে মতভেদটুকু নেই।<br />কথা আছে, কৌতুক আছে,<br />শুধু মুছে গেছে যত অপমান ছিল মিছে!</p>
<br /><p>তারপরেই সাঙ্কেতিক ঘড়ির মহা বিস্ফোরণ!<br />ভেঙে গেলো তোমার মেলিয়াস, ইনকাস ও স্টেপিস!<br />কর্ণপটহ ছিঁড়ে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়লো বাস্তবিক ব্যস্ততার ভিড়!<br />তীব্র নীলাভ আলোর পরশে, ঝলসে গেল<br />তোমার বৃহস্পতির মতো দুটি গ্রহ!</p>
<br /><p>তুমি দেখলে,<br />ভাঙা কাচের ভেতর পঙ্গু সময়, ঠিক আগের মতই শ্লথ।<br />আর তোমার দেখা আরেক জোড়া ভোরের স্বপ্ন মিথ্যে হয়ে গেলো...</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/matribhasha/মাতৃভাষা2020-07-15T19:15:07-04:002023-06-25T15:55:01-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>ভাঙলো আমার নিদ্রা যখন কঠিন সাধনা শেষে।<br />বরপ্রাপ্তি স্বরূপ জন্ম মিললো বঙ্গদেশে।<br />মাঠ ভরা ধান, নদী ভরা জল, হৃদয় পূর্ণ আশা।<br />সকল দেশের রানীর রাজ্যে গয়না বাংলা ভাষা!<br />বাংলা বুকে, বঙ্গ সুখে, করেছে আমায় লালন।<br />বঙ্গ আশিষ মাথায় নিয়েই কলম করেছি ধারণ!<br />ইংরেজ এলো, ফার্সিরা গেলো, হিন্দিও করে প্রয়াস।<br />জেনে রাখো ভাই বাংলা মুছলে রচবেনা ইতিহাস!<br />আধুনিক হও, পরদেশে রও, পরভাষাও করো দখল।<br />তবু দিনের শেষের অন্নটুকু যে বাংলা ভাষারই ফসল!<br />প্রতিবাদে থাক, প্রেমালাপে থাক, বোবা বুকেতেও থাক বাঁধা।<br />অমর একুশে শহীদ রক্তে রাঙানো মাতৃভাষা!<br />আয়ু শুধু নয়, জন্মও কম বাংলা বাঁচার প্রাণে।<br />কলম পুড়বে, দোয়াত জ্বলবে— অমর জয়গানে!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/amardesh/আমার দেশ2020-07-14T18:48:07-04:002023-06-25T15:54:35-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>জন্ম হয়েছিল আমার, এক সাধারন গ্রামে।<br />জ্ঞানত জানতাম সেটাই আমার বাড়ি।</p>
<br /><p>যখন ভূগোল পড়া হল বয়স বেড়ে—<br />জানতে হলো আমার ঠিকানা,<br />দেশের বাম পাশটা ঘীরে।</p>
<br /><p>ইতিহাস আমায় শুনিয়েছিলো—<br />আমার দেশীয় আত্মকথা।<br />তিনরঙা তার ধ্বজা আজও—<br />বীর-রক্ত মাখা!</p>
<br /><p>দেশপ্রেমীরা শিখিয়েছিলো—<br />দেশকে যেন আমি, মা বলে ডাকি।<br />মা মানে তো ভালোবাসা,<br />তাতে আবার প্রমাণ লাগে নাকি!</p>
<br /><p>বিজ্ঞান আজ শেখালো আমায়,<br />নতুন জ্ঞানের আলোয়।<br />রপ্ত হলো বিদ্যা নতুন—<br />এবার হবে, মায়ের প্রমাণ আদায়!</p>
<br /><p>আজ কমল সবুজ হাওয়ায়,<br />দেশটা আমার বদলে গেছে।<br />নোবেল-টোবেল বুঝি না বাপু—<br />বাংলা ভাষা মুছতে হবে!</p>
<br /><p>দেশটা তোমার একার নাকি?<br />কথার ধারে কুপিয়ে দেবে!<br />তিন রঙেরই রঙিন ধ্বজা,<br />আজ সন্ন্যাসী হতে উঠছে মেতে।</p>
<br /><p>তুমি তাসের টেবিলে বাজি ধরেছো,<br />সকলের গলা, দলা পাকানোর!<br />আজ মা কেঁদে যায় সন্তানশোকে—<br />কেউ নেই, তার চোখ মোছানোর!</p>
<br /><p>স্বরাজ এলো, বাতি এলো,<br />এলো ফোর-জি, তবু আকাশ কালো!<br />মিথ্যে বচনে চড়িয়ে গলা—<br />বাসছো কী তুমি, দেশকে ভালো?</p>
<br /><p>বিলপর্ব মিটলো তো খুব,<br />গরীবের পেট ভরবে কবে?<br />পেঁয়াজের দরে থলিতে চড়া—<br />বলো না...<br />তবুও কেন কৃষক মরে?</p>
<br /><p>মায়ের আমার বড়ই মায়া,<br />সম্পৃতীরই সুর বাঁধে সে!<br />তবু বিষপদ্মের আগাছা ঘাসে—<br />সরষে শুকোয় ভূতের বাসে!</p>
<br /><p>কে যেন এক বলেছিলো—<br />“হিন্দু, মুসলিম, শিখ, জৈন<br />আমার রক্ত আমার ভাই!”<br />স্বামিজী, আজ গেরুয়া রাজের ভন্ড ভীড়ে—<br />বিবেক-বোধে শুধু তোমায় চাই!</p>
<br /><p>শিক্ষা তো আজ নেই কোনো কম,<br />ত্রুটি নেই কোনো তালিম প্রদানে।<br />তবে এমন বিদ্যা বোঝাই করে,<br />তারা নির্বাক কেন নিদ্রাযাপনে!</p>
<br /><p>রাম-পূজারী রাজার দেশে,<br />নারী মানেই তো ভোগপণ্য!<br />যারা বৃদ্ধাশ্রমে কেবিন ভরায়,<br />তারা করবে নাকি দেশ ধন্য!</p>
<br /><p>আজ মাদক মেশানো রক্ত পানে—<br />চলো পাথর ছুঁড়ি, মানুষ কোপাই।<br />রক্ত রাঙা ধ্বজা ওড়াতে,<br />বিপ্লব আজ তোমাকে চাই!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/kolomerprolap/কলমের প্রলাপ2020-07-13T20:06:06-04:002023-06-25T15:54:54-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>কাজলের নদী প্রসবিত হলো, প্রসূতির চোখ হতে।<br />পাহাড়িয়া ভূমি উতরিয়ে পরে মিশলো লোহিত স্রোতে।<br />হাজার বারণ তুচ্ছ কারণে<br />রমণী রে তুই শুনলি নারে।<br />ও নারী তুই, স্বেচ্ছাচারী<br />গান গেয়ে গেলি বারংবারে!<br />উঁচু শির তোর খোয়ালো শিরা, সমাজের চোখে ধুলো ঝেড়ে।<br />অবারিত তোর দুয়ার কপাট, আচম্বিতেই নড়ে চড়ে!</p>
<br /><p>ও নেতা তুমি মন্ত্রী হলে, নাগরিকতার মন্ত্রবলে।<br />মাসোহারা নিয়ে মসিহা-র সাজে, ভক্ত ঠকাও নতুন ছলে।<br />ভক্তরে শোন ভক্তি ভালো,<br />পোলারয়েডের অন্তরালে।<br />ভানুর অণুতে লাগলে আগুন,<br />লুকাবি কোথায় শেকল তুলে?<br />তাইতো রে ভাই চিন্তা বড়ই, ঘাটতি-রা ভাগ নিলো ভাতের।<br />পক্ষপাতি রে সইতে কি তুই পারবি আঘাত পক্ষাঘাতের!</p>
<br /><p>হে পুঁজিবাদ পুঁজির পাহাড়, রেখেছো কোথায় গর্তে গুজি?<br />পাজি-র ব্যাটারে পা ঝেড়ে তুই, গুনিস না আর নকল পাঁজি!<br />দিন কাটে দিন গুনে গুনে প্রায়<br />কাঙ্ক্ষিত শুভদিনের আশায়।<br />যখের ওই ধন করে নিবারণ<br />ঘুণেদের ক্ষিদা দিবানিশি!<br />শুদ্র-কে বড়ো ক্ষুদ্র ভেবে, কেড়ে খাস তাঁর রুটি-রুজি।<br />সেই প্রতিবাদে শব্দের কিছু কারিগর আমি কোথা খুঁজি?</p>
<br /><p>কবি গো তোমার নামের বাহার। স্মারক পদকে স্বর্ণস্তূপ!<br />পক্ষপাতের ভাতঘুমে তবু মেদবাহী তাঁর কলম <br />চুপ!<br />কবি হাটে যান বড়ো ঠাঁটে-বাটে,<br />হাঁড়ি ভেঙে যান কলমের ঘায়ে।<br />তীক্ষ্ণ কলমে অঙ্গুলি কাটে,<br />এই ভয়ে মুখে দেন কুলুপ!<br />ধারের খাতায় ধারালো পাতায়, বেচে খান কবি বিদ্রোহী মুখ।<br />মেটাফর ভুলে, রং তুলি তুলে; দেখি সং সাজা গিরগিটি রূপ!</p>
<br /><p>ওরে নাস্তিক আস্তিন তুলে, গালাগালি তুই দিস ভালো।<br />তোর ওই ভোঁতা কলমেই দেখি, ধর্মের রূপ কত কালো!<br />দুষিবার তরে দুষবো কী তোরে,<br />গুরু পুষেছিস দুধ-কলা যোগে,<br />ভ্রান্তির পথে ক্রান্তির খোঁজে,<br />ক্যানিবালিজম তোর সোপান!<br />কুৎসার শ্লোকে ধর্ম চিনলি, সিকেয় তুললি গীতা-কোরান।<br />ক্ষুধিত খোদার গ্রাস কেড়ে বড়ো বাড়ছে কি তোর মান-ঈমান?</p>
<br /><p>এই নারীবাদী এইদিকে শোন, কানে কানে বলি তোর কথা।<br />লিখে দিলে পরে কলমের হুলে ভুগবি কিন্তু বিষ ব্যথা!<br />সুবিধাটুকু তো চিনলি ভালো,<br />সমানাধিকারী শ্লোগান তুলে।<br />সমদায়ভারে কাঁধ ভাঙে তোর<br />অজুহাতে কষা বর্গমূলে!<br />একজোড়া পায়ে একটা শরীর চললে কিসের ঢাক-নিনাদ।<br />দশভুজা ধারি দূর্গারই কাছে শিখে নিস নারীমাত্রীবাদ!</p>
<br /><p>এরপরে জানি প্রকাশকেরাও অধমেরে দেবে নির্বাসন।<br />কি করি দাদা, কলমের রোগ; সত্যের পথে তাঁর চলন!<br />তস্করি লাউ ফললো না বলে<br />নাম লেখা গেলো বিরোধীর দলে<br />অক্ষরহীন লস্করি চালে,<br />ওরা বলে আমি লিখি প্রলাপ!<br />দেরি কেন তবে হেঁকে দাও এবে ঘুষের ভুষিতে পোষা কোটাল।<br />সত্যের জয় এই দেশে নয়, সতী যেথা জ্বলে সর্বকাল!</p>
<br /><p>লেখা হলো খুব, ক্ষুধিত উদরে পোহাবো কেমনে গভীর রাত।<br />কইবো না কিছু, লবণের সাথে দাও না একটু গরম ভাত।<br />স্বভাবের দোষে এইবেলা শেষে বিকে গেলে দৃঢ় মানব-জাত।<br />তবু মনে রেখো ‘কলম’ কিনতে, পারবে না কোনো লোভের ভাত!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/sohsrotomokobita/সহস্রতম কবিতা2020-07-12T20:46:35-04:002023-06-25T15:55:16-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>১</p>
<br /><p>রোজ স্বপ্ন দেখি,<br />একদিন সহস্রতম কবিতাটি লিখে ফেলবো।<br />সেই শিশুকাল থেকে ধরেছি কবির হাত;<br />ঘুরেছি সাগর, নদী, বিম্বিসার, মিশরের জলপ্রপাত।</p>
<br /><p>কবি, এই শিশুর হাত ধরে,<br />কোমল পায়ের দ্রুতি হয়ে,<br />নিয়ে গেছেন কোথায়।<br />জানি না... চিনি না... বুঝি না...<br />শুধু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থেকেছি।</p>
<br /><p>কখনো মাঝপথে তিনি হাত ছেড়ে দেন।<br />সবুজ দেওয়ালের ঘেরাটোপে<br />পড়ে থাকে একা শিশুমন।</p>
<br /><p>আবার হঠাৎই ফিরে আসেন—<br />ভোরের নিভু নিভু আলোয়,<br />কপোতাক্ষ কিম্বা ধানসিড়ির তীরে।</p>
<br /><p>কখনো চোখে কলমের খোঁচা দিয়ে ঘুম তাড়ান।<br />আবার কখনো নিজেই, কোলের নরম বালিশে<br />মাথা চেপে ধরেন।<br />চোখে শান্ত উচ্ছ্বাস এনে দেন,<br />স্বরবৃত্তের গান শোনান।</p>
<br /><p>২</p>
<br /><p>রোজ স্বপ্ন দেখি,<br />একদিন ঠিক বড়ো হয়ে যাবো।<br />কবির সাথে আবার দেখা হবে...</p>
<br /><p>আচম্বিতেই হিচড়ে টেনে ধরেন চুলের মুঠি!<br />ভিতরের কর্দমাক্ত আত্মাটাকে নিংড়ে দেন।<br />গরিমা জর্জরিত হৃদয় এফোঁড় ওফোঁড় করে,<br />মারণ রোগের শল্যচিকিৎসক হয়ে ওঠেন।</p>
<br /><p>কখনো ছুড়ে ফেলেন আমায় অট্টালিকার বাইরে।<br />ঘুরে ঘুরে দেখান, আফ্রিকার ঘামাচি ধরা মাঠ।<br />ভিনদেশের পৃষ্ঠপোষকতায় মত্ত যুবকের স্বপ্ন ভাঙা কাচ।<br />অকালে মরে যাওয়া প্রদীপের উদ্বৃত্ত সম্ভাবনা।</p>
<br /><p>তিনি শোনান,<br />মানুষের মাঝে মানুষেরই পর হয়ে যাওয়া গল্প।<br />রক্তের জলপ্রপাতে ঠেলে ফেলে দেন!<br />বিদীর্ণ বক্ষের আর্তনাদ স্বরূপ অট্টহাসি হাসেন।</p>
<br /><p>আমি দেখি, শুধুই খুনোখুনি।<br />বিবিধের মাঝে মিলন খুঁজে পাইনা আমি।<br />কবির দেখানো মৃত্যু-উপত্যকায় আমার দম আটকায়।<br />কবির মাতৃভূমিকে কোথাও পাইনা খুঁজে।</p>
<br /><p>৩</p>
<br /><p>আবার স্বপ্ন দেখি,<br />কবির কাছে গল্প শোনার।<br />তিনি আয়না নিয়ে এসে, মুখের উপর কালো রঙ ছিটিয়ে দেন।<br />কলঙ্কিত মুখ দেখে, গর্জে ওঠা আমি<br />শূন্যে প্রশ্ন ছুঁড়ি।</p>
<br /><p>কবি হারিয়ে যান...</p>
<br /><p>নিজের আচরণই হাতড়ে ফেলে চারিত্রিক শংসাপত্র।<br />কবি আয়নার ভিতর থেকে নিঃশব্দে হেসে ওঠেন।</p>
<br /><p>৪</p>
<br /><p>রোজ ধৃষ্টতা পোষণ করি!<br />কবির মতো অমর হওয়ার সাধ বাঁধি বুকের তন্তু জুড়ে।<br />খ্যাতির লালসা মিশ্রিত স্বাদু জলে, নিমজ্জিত আমার নিস্তেজ জিহ্বা!</p>
<br /><p>কলমের এক কোঁপে বলি হয়ে যায় শত শত স্বাদকোরক।<br />রক্তজোয়ারে ভেসে যায় মুখগহ্বরে পোষিত কটুবাক্যের সংসার।</p>
<br /><p>কবি ধূর্ত শকুনির মতো, চোখ দুটো উপড়ে নেন। ছুঁড়ে দেন পড়শি ব্রহ্মাণ্ডের ছায়াপথে।<br />কবি মনের তীব্র নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে<br />নিষ্পলক, প্রাণহীন, সচেতন দুটি চোখ।<br />বিচ্ছুরিত রশ্মির সাথে মিশে যায় আলোকের আলোলিকা।</p>
<br /><p>কবি ক্ষণিকের খ্যাতির আড়ালে, চিরস্থায়ী দুঃখ দেখান।<br />বর্ধিষ্ণু নস্বরতার বাগে শুকিয়ে যাওয়া জীবন দেখান।<br />চিনিয়ে দেন, পৃষ্ঠপোষক ভিড়ে গা ঢাকা দেওয়া গুটি কয়েক আপনজন।<br />কবি খুঁজে দেন, নির্ভেজাল পথের দিশা।</p>
<br /><p>৫</p>
<br /><p>ঘুম ভেঙে যায়।<br />সহস্রতম কবিতাটি লেখার সংকল্প নিয়ে,<br />নবজাগরণের আলো মাখে দুটি চোখ।</p>
<br /><p>শিশুর ত্বকে আবৃত, দক্ষ আঙুলগুলি<br />তুলে নেয় পরিণত কলম।<br />পশ্চিমের অ্যাসিড ঝলসানো দেওয়ালে,<br />চতুষ্কোণী কাচের ভেতর থেকে—<br />কবির জোড়া পলক জুড়ে প্রজ্জ্বলিত হয়,<br />সম্ভাবনাময় স্ফুলিঙ্গ!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/kobihotya/কবিহত্যা2020-07-11T18:49:41-04:002023-06-25T15:54:49-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>বকেয়া ক্ষতির হিসেবটুকু, মিটিয়ে দেবো সুদে-আসলে।<br />আবেগ সাথী কলম প্রিয়, দিলাম তোমায় ছুটি।<br />কবি হত্যার কিনারা হয়না, ভিড় ঠাসা ওই শব্দ-মিছিলে।<br />শুষ্কতাতেও সিক্ত ভীষণ সমালোচকের নয়ন দুটি!</p>
<br /><p>লেখাপড়ার এই ইন্দ্রজালেই, বুনেছি আমি কাব্য পাহাড়।<br />গলগ্রহের জীবনটাতেও আবেগ ফুরিয়ে এলো।<br />তিরস্কারের চাবুক পরে, বাস্তবতার লালচে প্রহার।<br />অশ্রুস্নাত পাণ্ডুলিপি নোনায় মিশে গেলো।</p>
<br /><p>তাসের ঘরে মিথ্যে আশা, দমকা ঝড়ে লুটিয়ে পড়ে।<br />মাঝ-বহরি নয়ন যুগল, শুকিয়ে ফেলে জল।<br />স্বপ্ন মানেই দুর্জ্ঞেয় পথ, ‘মন ফেরারী’ ফিরলো ঘরে!<br />গুল্ম ডালে ফলবে কি আর— চিত্তৌশধী ফল?</p>
<br /><p>স্বপন শোকের ছাই ভাসে তাই মাত্রাহীনের ছন্দপতন।<br />বিস্ফোরণের কলম মাখে জনমদুখীর কালো।<br />তবু দেহান্তরেরই মন্ত্রে হলে, ফিনিক্স পাখির দহন যাপন—<br />ভস্মাবৃত দস্যু তোমায় আবার বাসবে ভালো!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/mukti/মুক্তি2020-07-10T18:47:28-04:002023-06-25T15:55:01-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>শব্দতারে আর বাঁধিনা তোমায়,<br /> বাঁধিনা আর তোমায় শব্দতারে।<br />কোমল কষ্টে নুয়ে পড়ে শতদল,<br /> রক্তে রাঙা ছন্দের কাঁটাতারে।</p>
<br /><p>ক্লান্ত দেহেই ফিরে আসো বারেবার,<br /> বারেবার আসো ক্লান্ত দেহেই ফিরে।<br />দুয়ার পারে নিরুপায় বসে আমি,<br /> পরাজিত তুমি সামরিক অম্বরে!</p>
<br /><p>অভিমানী সেই জ্বরেই পোড়ালে শরীর,<br /> শরীর পোড়ালে সেই অভিমানী জ্বরে।<br />শুষ্ক পিদিমে তৈল রূপেই এসো,<br /> ইচ্ছে আলো সাজিও আঁধার ঘরে!</p>
<br /><p>চোখ মেলে দেখো ধাত্রীর হাহাকার,<br /> হাহাকার দেখো ধাত্রীর চোখ মেলে।<br />ঋতু পথ জুড়ে শিউলি পলাশ মিছিল,<br /> তবু ফুল ফোটে না বন্ধ্যা মায়ের কোলে!</p>
<br /><p>মিথ্যে কথায় সেজে ওঠে কথকতা,<br /> কথকতা ওঠে মিথ্যে কথায় সেজে।<br />‘পণ’ নিয়ে পণ ভেঙে ওঠে অনুনাদ,<br /> সত্য নিধনে কলিরও নয়ণ ভেজে!<br /> <br />সজাগ চোখে চেয়ে থাকে ‘পৌকাই’,<br /> ‘হাকাওয়াই’ ওড়ে কলির আকাশ জুড়ে।<br />তাই শব্দতারে আর বাঁধিনা তোমায়,<br /> বাঁধবোনা আর তোমায় শব্দতারে!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/atmoghati/আত্মঘাতী2020-07-09T21:41:21-04:002023-06-25T15:54:40-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>মৃত্যু তরাই, মিথ্যে বড়াই, মানবতা প্রহসন।<br />অর্থ কাগজে, ব্যর্থ মগজে, অনাচার নিরসন।<br />সম্ভোগী হয়ে মোরা নির্ভয়ে, প্রকৃতি গিলেছি কত!<br />আজ মৃত্যু নিধনে, বৃত্ত শোধনে, বিবেক জাগ্রত?</p>
<br /><p>কোথায় গিয়ে মুখ লুকিয়ে, করেছিলে প্রতিবাদ?<br />লড়েছো জাতে, পুড়েছো ভাতে, ভরোনি তো কারো পেট!<br />প্রত্যহ মরে, তবুও সে লড়ে, মুছে সব অপবাদ।<br />পড়ছে মনে, স্বার্থ মননে, জগৎ পিতার ভেট?</p>
<br /><p>রুদ্ধ বাতাসে, ক্লান্ত আকাশে, প্রকৃতির শ্বাসরোধ।<br />লৌহে মরচে, যৌথে মরছে, সমাজ রুপিনী কায়া।<br />চিত্ত নিখাদ, লোভে উন্মাদ, আগামীর অবরোধ।<br />আত্ম স্খলনে, নিত্য ছলনে, মরুদেহে মরে ছায়া।</p>
<br /><p>রতনে রতনে আত্মগোপনে, ব্যর্থ যে প্রতিবাদ।<br />মন্দ শহরে, ভণ্ড কুহরে, বাজে তার অনুনাদ!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/shashwotik-bhranti/শাশ্বতিক ভ্রান্তি2020-07-08T18:39:53-04:002023-06-25T15:55:12-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>নিভে আসে শহরের আলো,<br />থেমে যায় অজুহাতের কোলাহল।<br />আকাশের গায়ে আলকাতরার চাদর।<br />মৃতভর্তৃকার কৃষ্ণকায় ললাটে,<br /> পূর্ণিমার তিলক চন্দন।<br />জ্বলে ওঠে শতাব্দী প্রাচীন,<br /> কোটি কোটি অক্লান্ত চোখের কোটর।<br />রাতের বুকে ফুটে ওঠে, গুটি বসন্তের লক্ষণ!</p>
<br /><p>শুধু আমারই চোখে ঘুম নেই!<br /> রাতের পর রাত, প্রহরের পর প্রহর,<br />ক্লান্তি; শুধু ক্লান্তি।<br /> স্নায়ুস্পর্শ যোগানে ব্যর্থ দেহের<br />মজ্জা, পেশি, অস্থি জুড়ে— <br /> অজ্ঞাত স্নায়বিক অশান্তি।</p>
<br /><p>চারিদিকে কত গতিপথ;<br /> সবাই ছুটে যায় আণবিক আকর্ষণে।<br />আমি শুধু বলহীন, ঋণহীন<br /> এক উষ্ণ দেহের মড়া!<br />আমি প্রলাপ ভালোবাসি, শুধু জ্বরের অন্বেষণে।</p>
<br /><p>আলো জ্বলে ওঠে আকাশের চিলেঘরে।<br /> গুটিরা মিলিয়ে যায়।<br /> আকাশ সুস্থ হয়।<br /> রাতেরও ঘুম পায়।<br />পথিকের তরে অপেক্ষারত,<br /> নিয়নের দলও ক্লান্ত হয়।<br /> তারাও ঘুমোতে যায়।</p>
<br /><p>তবু আমারই চোখে ঘুম নেই।<br /> রাতের পর রাত, প্রহরের পর প্রহর,<br />ক্লান্তি; শুধুই ক্লান্তি।<br />সকলের কোটর থেকে খসে পড়ে,<br /> নীড় ভাঙা নৈতিকতা।<br />শুধু আমারই চোখে লেগে থাকে—<br /> পচনশীল, শাশ্বতিক ভ্রান্তি!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/jhor/ঝড়2020-07-07T21:03:03-04:002023-06-25T15:54:45-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>আজ বিকেলে ঝড় উঠবে।<br />আমার ঘুমন্ত কানে ফিসফিসিয়ে বলে গেলো,<br />“আমি উঠবো!<br />তুমি শুয়ে থেকো।”</p>
<br /><p>শুয়ে থেকো, রক্তসলিলে পরিণত হওয়া রণপ্রাঙ্গণে।<br />শুয়ে থেকো তুমি সদ্য দাফন্ হওয়া সারি সারি কবরের মাঝে।<br />শুয়ে থেকো, রাত্রি লীলার সাক্ষ্য বহন করা সেই গলির আঁধারে।<br />শুয়ে থেকো তুমি লোপাট হয়ে যাওয়া কোনো এভিডেন্স ফাইলে।</p>
<br /><p>তুমি শুয়ে থেকো।<br />আমি আসবো...</p>
<br /><p>চুরি করে পাওয়া খ্যাতি,<br />নতমস্তকে মৃতপ্রায় শত জাতি।<br />দূষিত হওয়া গঙ্গার জল,<br />অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার অহমিকাধীন বল।<br />সিগন্যালে ভিক্ষে করা সদ্যজাতের হাতে,<br />লাশের খামারে গড়ে ওঠা কোনো অট্টালিকার ছাদে!<br />কৃষকের দেহ ঝুলে থাকা সেই বটবৃক্ষের ডালে,<br />লোকসানি দামে ফেরি হয়ে যাওয়া ঐ কাশ্মিরী শালে।</p>
<br /><p>তুমি শুয়ে থেকো,<br />আমি আসবো।<br />ওদের বলে দিও...<br />আমি আসছি!</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/kobitwo/কবিত্ব2020-07-07T13:25:27-04:002023-06-25T15:54:54-04:00নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তীhttps://www.bangla-kobita.com/nilanjan13/<p>কবির কলম সভ্য আঁধার মোছে।<br />কবির ছন্দ চড়াএ নিলাম হয়।<br />সস্তার খাতে কবির মিথ্যে আবেগ।<br />কবির ভাগ্য মানেই অনিশ্চয়!</p>
<br /><p>কবিরা কেবল অনুভূতি ফেরি করে।<br />কবিতায় বাঁধা পড়ে যায় কত পর।<br />কবি হিয়া তবু আঁধারে হোঁচট খায়,<br />কবির হয় না সংসারে বাঁধা ঘর!</p>
<br /><p>কবিদের বড় আদর মাখানো চোখ।<br />আঙুলেও নাকি বাক দেবী বাসা বাঁধে।<br />খালি চোখে ধরা পড়েনা কবির রোগ।<br />সামাজিক বিষে কবিদের দেহ পোড়ে!</p>
<br /><p>কেউ বলে কবি আত্ম সুখেই সুখী।<br />অগোছালো চুল, পরিপাটিহীন সাজে।<br />তোমরা পড়োনি কাঁচা হাতে তার লেখা,<br />শ্রী ছিল তাঁর মোলায়েম দুটি গালে।</p>
<br /><p>কবিও তো চায়, ডাল ভাত তরকারি।<br />থলি ভরা সুখে চাহিদা ছিলোনা তাঁর।<br />থুতু ভেজা চিড়ে ঢেকে ফেলে কবি ঘর,<br />হতে নেই তার মায়া ভরা পরিবার।</p>
<br /><p>কবিদের সাথে রাত জাগে নীরবতা।<br />দিন যায় তার কলমের হাঙ্গামে।<br />পেসমেকারে যান্ত্রিক প্রেম এলেও,<br />কবিতা কি আসে কৃত্রিম নোটবুকে?</p>
<br /><p>কবির রক্তে আগুনের রঙ লাল।<br />কবির ভাষ্যে হিমেল তুষার ঝড়।<br />কবির মরণে বিপ্লব থেমে গেলেও,<br />রুদ্ধ কি হয় কবির কাব্যস্বর?</p>
<br /><p>কবি হতে যদি অভিশাপ লাগে বড়ো,<br />নতমস্তকে নেবো সে আশীর্বাদী।<br />দুঃখ হলেও প্রার্থনা তুমি কোরো,<br />যেন পরজন্মেও কবিতা লিখতে পারি।</p>@ 2024 - নীলাঞ্জন চক্রবর্ত্তী