সেই চিঠি!


তোমাকে ভালোবাসতে গিয়ে
পাশাপাশি তীতা স্বাদকেও
ভালোবাসতে শিখেছি।


যেদিন তিতারে তিতা,
কডারে কডা বুঝতে শিখছি,
তার আগেই বুঝছিলাম
টক, ঝাল, মিষ্টির স্বাদ!


জানো তো?
টক ঝাল মিষ্টির চেয়ে
তীতাই অনেক স্বস্তা?!


দূর নীল সমুদ্রে
ভালোবাসার বার্তা পাঠানো
ছিলো আমার কাছে তখন
স্বস্তা তীতা সয়ে নেবার
চেয়ে অনেক দামী!


ছোটবেলায় একদম আমি
করল্লা খেতাম না,
মা পিছে পিছে
খাবার নিয়ে ঘুরলেও না!


প্রথম করল্লা খাই
ইউনিভার্সিটির হলে;
তাও আবার
নিজে রান্না করে!
বিশ্বাস হয়?
হুম ঠিক তাই।।


আর নিজে রান্নার
কারনটা  ছিলো,
টাকা বাচাঁনো।


না না..
ভেবো না যেনো যে,
বাবা মায়ের জন্যে
আয় করেছি!


আসল কারন ছিলো ভিন্ন!


দু যুগ আগে,
বাবা দিতো দু হাজার!
যা মিতব্যায়ী আমার
প্রয়োজনেরও বেশী!


আর, সবাই যেখানে
ডাইনিং-কেন্টিনে খেলে খরচটা
দেড় হাজারেই চলতো;
সেখানে আমি নিজের রান্নায়
বাচাঁতাম এক হাজার!


ডিপার্টমেন্ট,লাইব্রেরী
হাঁটতেও খুব একটা কষ্ট হতো না!
কদাচিৎ রিক্সা চড়তাম!


প্রতিদিন প্রবাসে চিঠি
পোষ্ট টাই ছিলো আমার
একমাত্র আনন্দ!


রবিবারের চিঠিগুলো
ছিলো বেশ ভারী;
কারন দু'দিন ছিলো,
পোস্টঅপিস বন্ধ!
শুধু প্রতিদিন চিঠি দিতেই নয়,
পেতেও ছিলো মহানন্দ!
আর রবিবারে একাধিক !!


চিঠি মিস হলে,
যেনো বুঝতে পারি,
সেজন্যে আমরা বুদ্ধি করে
চিঠিতে নাম্বার দিতাম!


দুপুরে ক্লাস শেষে
পোষ্ট অফিস যেতেই হতো।
কোথাও আড্ডার জন্যে
ক্ষনিকের তরেও দাড়াই নি সেই নয়নাভিরাম প্রানের ক্যম্পাসে!


বন্ধুরা কেউ কেউ ক্ষেপাতো যে,
ডায়রিয়া হলে যেমন
মানুষ বাথরুমে দৌড়ায়,
ঠিক তেমনই নিপা দৌড়ায়
পোষ্ট অফিসে!
বলোতো কি অসীম অপমান?
তবুও গায়ে মাখতাম না একদম!


আহা!
হারানো  হিয়া! নিকুন্জ পথে.. !
কুড়ায়ে ঝড়া ফুল!
একেলা আমি! হারাতে জানি...


ভালোবাসার পাশাপাশি আজ
ডিজিটাল জমানার ভীরে
দেশ থেকে পোষ্টঅফিসও গায়েব!
গায়েব সেই দৈনন্দিন
১৭ টাকার চিঠি;
প্রেমের তরে মাসিক
হাজার টাকা জমানোর  আকাঙ্খাও
আর খুজেঁ পাই না।


আজ বাবার নয়,
নিজের আয়ে লক্ষ কোটি
টাকা জমালে ; অথবা,
সব টক ঝাল মিষ্টি ভুলিয়েও,
করল্লার তীতায় জমানো
সে প্রেমের চিঠির আনন্দ
খুজেঁ পাওয়া অসম্ভব।


যদিও আজও ফেলিনি
সেই অকাজের অমূল্য
চিঠি শতকেজি!


এবং কনফিডেন্টলি জানি,
আজ তোমার বিলিয়ন টাকা
খরচ করলেও
তুমি কোনো ঘাটেই,
সেই প্রেম  খুঁজে পাও না।