ইচ্ছে করে জানার/ নিরঞ্জন রায়


ফিরে আসলে খুব কি মন্দ হয় বাল্যবন্ধু শৈশব, প্রিয় সহপাঠী কৈশোর-- তোমার একান্তবেলা!
বান্ধবীদের সাথে বৌচি খেলা
ভরা পুকুরজলে লাফ দিয়ে বুকসাঁতারে ভাসা
শীত সকালে খড়ের আগুনে হাত পা ঝলসে  হাওয়ায় মিলিয়ে যাওয়া  
নিঃসঙ্গ বিকেলে বড়শি হাতে পুঁটি মাছের অপেক্ষায় চাতক পাখি!


প্রকৃতি তো বুকপকেটে ধরেছে ত্রিকাল----  
আজ বর্ষা,--- বাবার গৃহছাড়া সদ্য বিবাহিতা মেয়ের অশ্রুধারা  
কাল শরৎ--- দিগন্ত ছুঁয়ে থাকা ধবল মেঘপরী, বয়ঃসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা কাশকন্যা    
পরশু ফাগুন হাওয়া এলোচুল টেনে ধরে যুবতী মেয়ের
পাতায় পাতায় সবুজের নৈবেদ্য, গাঢ় ছায়া নদীবুকে  
বনে বনে ডাকাতিয়া প্রিয়জনের সাথে মিতালি করে-----
মনে পড়ে না সেসব দিনের কথা তোমার একলাবেলায়!


তোমার হাতে ধরিয়ে দিল যে ছেলেটি গোলাপ কুঁড়ি
আর যে ছেলেটি দূর থেকে তা দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে মিলিয়ে গেল দিগন্তরেখায়!


মনে কি পড়ে তাদের ঘুম না আসা তোমার একলাবেলায়?


ঝড়বৃষ্টি আসে, ভাঙা নদীর কূল ছন্দে ফেরে
ঝলমলে আলো নিয়ে সকাল, পাখিরা  নতুন নীড় তৈরির আয়োজনে কাঁচামাল খোঁজে---


মনে কি পড়ে না সেই একান্তবেলা
নিজেকে হারিয়ে ফেলার অজানা সেই খেলা ?


তোমার সহপাঠী দুষ্টু ছেলেটি এখন কোথায়!
তোমার অংকখাতার ভেতরে ঠাঁই পাওয়া  হাতেলেখা বেহিসেবি চিরকুট
কী ছিল তাতে লেখা!
মনে কি পড়ে না তোমার?


আজকের তুমি কি আজকের শুধু
বুকে কি ধরোনি শৈশব, ভরানদী পাড়ি দেয়ার কৈশোর নৌকো  
আমিও কি ছিলাম তোমার একান্তবেলার সাইটলাইনে বসে থাকা একজন খেলোয়াড়
সুযোগ হয়নি কখনো মাঠে নামার!