কাদের মিঞা ,ছটু সিং এর ঘরে বাইরে


কাদের বা ছটু কেউই
সন্দীপ,নিখিল নয়।
তাদের গল্পটা খুব সাদামাটা।


তাদের ঘরে আছে
অভুক্ত সন্তান আর স্ত্রী,
তাদের বাইরে আছে দাঙ্গা।
কাদের মুসলমান,ছটু হিন্দু।


ঢাকার ‘ জগৎ কুটির ’ এর বারান্দায়
ছুটি কাটাচ্ছে একটি এগারো বছরের বালক
তার নাম অমর্ত্য,
সে শান্তিনিকেতনের আবাসিক।
হঠাৎ সারা গায়ে রক্ত মেখে
বুকে পিঠে ছুরি খেয়ে
বারান্দার সামনে মুখ থুবড়ে পড়ল কাদের।
ভয়ে আর্তনাদ করে উঠল বালক।
বেরিয়ে এলেন বাবা আশুতোষ।
বালকের কোলে মাথা রেখে
কাদেরের নিঃশ্বাস  ক্রমশ ভারী হয়ে আসে।
আশ্চর্য ! ক্ষুধার্ত কাদের তখন
শুধুই একটু জল চাইল।
মা অমিতা ছুটে নিয়ে এলেন জল।
হাসপাতাল যাবার পথে মারা গেল কাদের।
যাবার সময় বলে গেল
তার ঘরের গল্প —
বউটা বারণ করেছিল বেরোতে।


আজ এত বছর কেটে গেছে
একদিন  ‘জগৎ কুটির ’এ এসে
বসলেন ইউনুস
প্রিয় বন্ধু অমর্ত্যর বাড়ি।
 
হঠাৎ চমকে উঠে ইউনুস দেখলেন
কোথা থেকে  বুকে ছুরি খেয়ে এসে
লুটিয়ে পড়ল ছটু
চিৎকার করে ডাকলেন ইউনুস
স্ত্রী ছুটে এলো এক গ্লাস পানি নিয়ে।
হাসপাতালের  পথে যেতে যেতে
এক গল্প বলে গেল ছটু সিং—
বউটা বারণ করেছিল বেরোতে।


বাইরে বদল হয় সময়,
ঘরে জমতে থাকে ক্ষুধার পাহাড়
ইতিহাস চুপ করে বসে থাকে
গরীব হিন্দু আর গরীব মুসলমান
ছটু আর কাদেরের ঘরে
ঠ্যালা দিয়ে বার করে ঘরের বাইরে।