কৃষ্ণকলির আজ, কাল, পরশু


কৃষ্ণকলি কালো হরিণ চোখে
মেঘলা দিনে মাঠের মাঝে ছোটে
ঘোমটা মাথায় ছিলনা তার মোটে
কপালে তার রোজ গঞ্জনা জোটে
পাঁচটা চারের লোকাল ট্রেনে উঠে
বাবুর বাড়ি কাজের জন্য ছোটে
কালো ? তা সে যতই কালো হোক
বলোনা সে আমাদেরই লোক।


ঘন মেঘে আঁধার এলো ছেয়ে
কালো মেয়ের ছোট্ট কালো মেয়ে
বস্তি হতে ত্রস্ত এলো ধেয়ে
আকাশ পানে হানি যুগল ভুরু
বুকটা তার করলো দুরু দুরু
তারে মেলা শুকনো দুটো জামা
ছোট্ট মেয়ে নাগাল পায় না মা।
কালো ? তা সে যতই কালো হোক
বলো না , সে আমাদেরই লোক।


পূবে বাতাস এল হঠাৎ ধেয়ে
আকাশে ওড়া ঘুড়ির পানে চেয়ে
দুজন হেসে উঠল— মা আর মেয়ে
খালের পাড়ে জলে উঠলো ঢেউ
আমিই জানি আর জানে না কেউ
কালো ? তা সে যতই কালো হোক
বলো না গো মা আর মেয়ে আমাদেরই লোক।


এমনি করে পাঁচটা চারের লোকাল
রোজ সকালে সোনারপুরে আসে
এমনি করে বোশেখ মাসের বিকাল
কালো মেয়ের বস্তি ঝড়ে ভাসে
এমনি করে ভাসলে ঘুড়ি মুক্ত আকাশটিতে
হঠাৎ খুশী ঘনিয়ে আসে চিতে
কালো ? তা সে যতই কালো হোক
মা আর মেয়ে নয় তো অন্য লোক।


কৃষ্ণকলি আমি তাদের বলি
আর যা বলে বলুক অন্য লোক
দেখেছি রোজ ছুটছে মাঠে ঘাটে
মা আর মেয়ে বড় দুঃখী চোখ
মাথার পরে ফুটো ছাদের বাস
একটুখানি জিরিয়ে নেবার পায়নি অবকাশ
কালো ? তা সে যতই কালো হোক
তারা কি কেউ অন্য গ্রহের লোক ?