সুরজিৎ পাটারের দুটি কবিতা


( অধ্যাপক সুরজিৎ পাটার সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত প্রসিদ্ধ পাঞ্জাবী কবি। ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করেন । বর্তমানে সারা ভারত কৃষি আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে পদ্মশ্রী প্রত্যাখ্যানের কথা ঘোষণা করেন। এখানে তাঁর দুটি কবিতা পাঞ্জাবী থেকে ইংরেজি হয়ে বাংলায় রূপান্তরিত করা হয়েছে । )


। । ১। ।


আমার মা, আমার কবিতা বুঝতে পারলো না,
কি আশ্চর্য , আমি তো মাতৃভাষাতেই লিখি!
মা শুধু কবিতাটার দিকে চেয়ে ভাবলো
নিশ্চয়ই তার ছেলের মনে কোনো দুঃখ আছে।
কিন্তু তাঁর পুততরের মনে দুঃখ ?
মা থাকতে ছেলের দুঃখ আসবে কোথা থেকে?
মা অবাক হয়ে ভাবে
আর আমার কবিতার ওপর
আলতো চোখ বোলায়।
তারপর নিজের মনেই বিড়বিড় করে,
ওগো, কে কোথায় আছো ?
তোমরা সবাই দেখো
আমারই পেটে জন্মানো আমার পুততর,
আমাকে না বলে তার দুঃখের কথা,
বলেছে কিনা একটা টুকরো কাগজের কাছে?


মা,আমার গর্ভধারিণী মা,
কাগজটাকে সন্তানের মতো তুলে দুই হাতে
বুকের মধ্যে জাপটে চেপে ধরে
হয়তো ভাবে ,
এটাই তবে একমাত্র পথ
এই পথেতেই পুততরের ব্যথা ছোঁয়া যাবে!


মা,মাগো,আমার জন্মদাত্রী মা.....


। । ২। ।


ওঠো, উঠে পড়ো
মোমবাতিগুলো সব জ্বালিয়ে দাও।
জানি,বাইরে ফুঁসছে হাওয়া,
জানি, সে ফোঁসফোঁসানি থেকেই যাবে
তবুও উঠে পড়ে সব মোমবাতি জ্বালিয়ে দাও।


অন্ধকার যেন বুঝতে না পারে
চাঁদের ভয় করছে,
রাত্রি যেন মনে না করে
সূর্য মরে গেছে কবে।
শুধু বেঁচে থাকাকে স্যালুট করে
ওঠো, উঠে দাঁড়াও
সব মোমবাতি প্রজ্জ্বলিত করো।


জানি রাত্রির শাসন বড়ো কঠিন
কিন্তু তবুও আলোর
একটা চিলতে হলেও আছে !
অন্ধকারের কালো পাতার বুকে
ওই আলোর কালিতে লিখে ফেলো
কবিতা তোমার।


ওঠো উঠে পড়ো
জ্বেলে দাও মোমবাতি সব।


শুকনো শীতের হাড়হিম করা হাওয়া—
জানি গাছের পাতারা
ভয়ে ঝরে ঝরে যাবে
তবুও নতুন পাতা
আবার ভরে ভরে যাবে।


তাই সব মোমবাতি.....


( আংশিক )