চোখ বন্ধ করলে আমি দেখতে পাই
সদ্য-রজঃস্বলা এক কিশোরীরে−
যে জানে না, কী কারণে হঠাৎ এমন
তীব্র তুমুল আনন্দ-কাতরতা
ছড়িয়ে পড়েছে তার নওল শরীরে।


মনুর ভাষায় গৌরী, এইটুকুনু মেয়ে
চমকে ওঠে নিজের পানে চেয়ে−
দেখে তার অঙ্গজুড়ে ফুলের উৎসব।
মনে হয় ছড়িয়ে পড়েছে মর্ত্যে
নার্গিস আর বার্গিসের স্বর্গপুষ্পঘ্রাণ।
মাকে ডেকে মেয়েটি শুধায়−
‘আমার শরীরে ফুলের সৌরভ কেন?
মেয়েরা বুঝি ফুলের উদ্যান?’


মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে মা বলেন,
‘বোকা মেয়ে, কিচ্ছু বোঝে না,−আয়,
আজ আমি কুসুমগরমজলে
তোকে নিজ হাতে গোসল করাব।’
মা’র বুকে মাথা পেতে মেয়েটি তখন
নিজেই কখন যেন মা হয়ে যায়।


এই লাভাস্রোত, এই সঙ্গকাতরতা
তাকে শেষে কোথায় ভাসিয়ে নেবে
জানে না সে; বোঝে না সে
তার বৃক্ষপত্রে কার হাওয়া লাগে?
অগ্নিকুন্ডে বায়ুর মতন ছুটে এসে
কে তাকে জড়াবে আদরে, সোহাগে?


জানে না সে, বোঝে না সে তার চোখে,
ঠোঁটে, তলপেটে, ঘুমভাঙা স্তনে
জেগেছে যে ঢেউ তার গন্তব্য কোথায়?
আনন্দ পুরুষে? নাকি আনন্দ সন্তানে?


এইসব দেহতত্ত্ব জানার আগেই,
এইসব গূঢ় গোপন রহস্যভেদ
হওয়ার আগেই
আষাঢ়ের এক বৃষ্টিভেজা রাতে
মোনালিসার বিয়ে হয়ে গেল−
লিওনার্দো দা ভিঞ্চির সাথে।


লিওনার্দো অতঃপর দীর্ঘ রাত্রি জেগে
জীবনের শেষ রং দিয়ে
তাঁর প্রিয়তমা তরুণী ভার্যা
মোনালিসাকে ক্যানভাসে আঁকলেন।


শিল্পের ঔরসে মোনালিসা গর্ভবতী হলে
স্বর্গ থেকে মখলুকাতে পুষ্পবৃষ্টি হলো।
সিন্ধুর বিজয়রথ পশিল নদীতে−
শান্ত হলো ক্ষিপ্তোন্মত্ত সমুদ্রের জল।


মোনালিসা, য়ুরোপের প্রথম রমণী−
পুরুষের কান্ড দেখে হাসে।