দিয়েছিনু যাহাকিছু ছিল মোর ভালে
দুহাতে উজার করে স্বাধীনের কালে ৷
এইক্ষণে কি-বা আর দেবার আছে বাকী
বিশাল ভাড়ার নিয়ে শূণ্য পড়ে থাকি ৷
আছে হেথা রাশি রাশি বলে সব লোকে
আমি জানি মিছেমিছি সবে বলে থাকে ৷
জগৎজননী আমি ভারতমাতা
একশত বত্রিশটা  মাথা নিয়ে ব্যথা ৷
ছোটবাবু বড় ব্যাটা মিলিয়া সকলে
যাতনা দিতেছে ভারি দিন-মান ভুলে ৷
এতকালে  মাথাব্যাথা ধরিছে ভীষণ
পূবালী বাতাসে বুঝি হবে উপশম ৷
চকিতে চরণতলে পূত্রধন গোপাল
কহিল সজল চোখে "কি করেছ হাল..
পূবালী  নদের বাও দূষিত গো মাতা
এবারে তাহাতে কি কমিবে গো ব্যথা,
ওখানে ছড়িয়েছে ম্যালেরিয়া ব্যামো
কি করে যে বল মাতা পূবেতে যাবো ৷


তারচে' বস তুমি পাখা নিয়ে আসি
আমাদের হিজলতলে বায়ু খেতে বসি ৷"
ওদিকে সোনার ছেলে বর্মিবাবু এসে
ডাকিছে গলা ছেড়ে " মা কি ভুলে গেছে"
"এই তো সেদিন মোরা ছিলেম আঁচলে
পর করে দিলো যারা সেই ভাগ-কালে
এবারে পেয়েছি তারে- মজা কারে বলে ৷
দিবেনা কি ঠাঁই মোরে ভারতজননী
তোমার চরণতলে একটুখানি ভূমি"
কাঁদিয়া কহেন মাতা "এসো মোর বাছা
কতকাল পরে আবার হইল দেখা ৷
পায়ে কেন, বুকে তোরে দিয়েছি যে ঠাঁই
চিরকাল তোরে আমি এমনি করে চাই ৷
এই প্রেম চিরকাল রবে অক্ষয়
মাতাজি কথা দিল আজ নিশ্চয় ৷"


ওদিকে গোপাল বাবু কহে কানে কানে
একি কথা বলিলেন মাতাজি এক্ষণে ৷
মাতাজি হাসিয়া কহেন" ও হে মোর বাছা
মাথা তোর এখনও রহিয়াছে কাঁচা ৷
নতুন বাবুরে ঘরে তুলে আনি যবে
পূবালী বাঙ্গালের কথা রহিয়াছে মনে ৷
উহারা তো নাড়িবেই কড়া মোর দ্বারে
আমি কেন পড়ে থাকি নিয়ে শুধু তারে ৷
যখন আসিবে ফাগুন বাঙ্গালের ঘরে
যাইবো কৃষ্ণ হইয়া তবে ওধারে ৷
বুনিবে ফসল হেথা সবুজ শ্যামল
লইবো শ্রীকৃষ্ণ হইয়া ভোগে সকল৷ "