অফিস পথে চলতে বাবু
জ্ঞানের কথায় মেতে,
শুনিয়ে দিল হাজার কথা
ধুম দ্রব্য নিয়ে হাতে ।
আমি ছিলাম পাশেই বসে
গল্প শুনছি সেই আসরের,
একটু অস্থি হলেও শুনছি
তখন ধির গতি ট্রেনের ।

পরবর্তী স্টেশনে থামলে গাড়ি
নামবো ভেবে উঠতে গিয়ে,
থমকে গেলাম আটকে গেল চোখটি আমার
অজান্তেই বসে গেলাম আবার দেখি একটা মেয়ে।

কি যে হল তখন সময়
থমকে গেল সব ,
বুঝতে পারি আমি নই আটকে গেছে তারাও
আর তাদের কলরব,
হ্যাঁ আমি ছিলাম সেখানেতেই বসে
জানিনা কি ভেবে
এদিক ওদিক তাকিয়ে ফিরে
সে যে মোর সামনে বসে নীরবে ,  
চোখের পাতা ওঠা-নামা করিয়ে
দেখলাম তাকে হৃদয় ভোরে।
দারুন সেই রূপ – চুল আর হাল্কা লিপস্টিকের মৃদু হাসি
খনিক্ষনে আমি যেন হারিয়ে গেলাম তারই অজানা শহরে ।।

দুবার করে প্রশ্ন এল স্যার
কত দূর যাবেন??
হঠৎ করে মাথা নেড়ে হ্যাঁ
এইতো আপনি যতক্ষণ রবেন ।
হাল্কা করে মুচকি হাঁসিটা লুকিয়ে বলে
হাই আমি সোহিনী ,
কি দারুন হাসি তোমার
হ্যাঁ আমি মনোহরমনি ।

‘’তার চোখ-নাক-হাসি
মনে হয় যেন আমি খুব চিনি ,
কি করে শুধাব তারে
পারলাম না , জানিনা কি ভাব্বেন তিনি । ‘’

কিছুক্ষন পরে.........
জানিনা সে কেন আমায় বলে,  
খুব সাহসি ছিলে তুমি কলেজে ।
আমি যখন লাস্ট ইয়ার সে ফার্স্ট,  
মুখ চেনা - চেনে বলল সে নিজে ।
সে জীবনে আমি ছিলাম যুবনেতা ,
মনে মনেই ভেবেছি কিছুক্ষনে
হঠাৎ করে দেখতে পেলাম --
কয়েক ফোঁটা জল তার চোখের কোনে ।

অবাক হয়ে শুধাই তারে কি গো
কি হল জল কেন তোমার চোখে ??
কিছু না মনোহর বুঝবে না তুমি
বইছে নোনতা নদী আমার বুকে ।
আবার অবাক চোখে ভাবি মনে কে এ !
যে আমায় নাম ধরে ডাকে ,
আমি তো সেই - মনে করো মনোহর  
তুমি বহুদিন ধরে চেন আমাকে ।
কেমন যেন তার এ কথায়
স্পষ্ট হল মনের ধোঁয়াশা আমার
এ তো মোহিনী , আমার ভালোবাসা
বুঝি ফিরে এলে তুমি আবার !

মনে পরে কি তোমার সেদিনের মিছিল
সেই প্রান হারাবার কাহিনী ,
যেখানে অ্যাসিড ছুড়েছে বিরোধী
‘’আমি সেই মোহিনী’’ ।।
তোমাদের লড়াই এর মাঝে পুড়েছি
আমি আর আমার সুখ ,
যেখানে আমায় ছেড়ে এগিয়েছ তুমি -
লড়াইটাই সব তোমার , আমায় পড়েনি মনে এতটুক ।

আঙুল টা বাড়িয়ে তার দিকে
এক মিনিট মোহিনী দুটো কথা আছে ।  
আমি পাপি তোমার দেওয়া সব দশ স্বীকার করছি
সেদিন ছুটে তোমায় দেখতে পুলিশ ধরেছে পাছে ।
সাতটি বছর জেল খেঁটে  
আজিই ফিরছি এই গ্রামে ।  
দোষ হল শেষে আমিই ছুড়েছি অ্যাসিড
যে ছিল তোমার প্রাণে ।।  
তাইতো অজান্তে অপরিচিতিতে আজও
থমকে গেল চোখ দেখে তোমারে ।
এসো না মোহিনী এগিয়ে
একবার হাতে দাওনা তোমার হাত টারে ।।

এগিয়ে যেতেই থামিয়ে দিলো-
না মনোহর না  -- আর নয়,  
আজ আমি অন্যের হয়েছি
এখন আমি আর তোমার নই ।
একথা বলে নেমে গেল সে
আর বলে গেল চিৎকার করে
আমি আজ বিবাহিতা মনোহরমনি  
ফিরে গেছি আমি অন্যের শহরে ।।