কাল একজনের কবিতা পড়ছিলাম কবিতার নাম
" কিছু একটা পুড়ছে " কবি নবারুণ ভট্টাচার্য । তারপর
মৃত্যু উপত্যকার কবিতাটি বার বার পড়েছি, পড়ে বুঝতে চেয়েছি সত্যি এটাই কি আমার সমাজ চারপাশ, এটাই কি আমার দেশ, কই এখানে তো নির্বাণ, ঋনানুবন্ধের মত কঠিন শব্দ নেই , চাঁদ বা  প্রনয়ের জোৎস্নার মত সুখের কল্পনা নেই, এখানেতো  প্রকৃতির ব্যর্থ বর্ণনা অথবা খন্ডের পর খন্ড ধরে  ছন্দের দর্শন নেই বরঞ্চ এখানে আছে ছেলের লাশ, তার শবের পাহাড়, কসাইখানা , মৃতদেহ, সন্ত্রাস, রক্তাক্ত কলম , এটাই তো আমার দেশের বর্তমান চিত্র যেখানে গনতন্ত্রের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে জনগনের মৃত্যু হয় । নবারুণ ভট্টাচার্য এখানেই নিজের স্বতন্ত্রতা প্রতিষ্ঠা করেছে, মধ্যবিত্ত নিম্ন মধ্যবিত্ত, গরীবদের কথা বার বার উঠে এসছে
তার কবিতায় ।


সাম্যবাদের ভিত্তিতে সমাজের স্বপ্ন তাকে তাড়িয়ে নিয়ে গেছে "কাঙাল মালসাট" লিখতে । আমাদের মত কবি যারা সমাজের বাস্তবতা লেখায় তুলে আতে পারেনা তাদের গরু বলতে একবারো চিন্তা করেননি " যেখানে অবশ অক্ষরমালা চিবোতে চিবোতে কবিরা গরু হয়ে যায় উল্টোটা যে হয়না এমনও বলা যায় না " বর্তমান সময়ের কবিদের লেখার বিষয় নির্বাচন  তিনি খুব একটা পছন্দ করতেন না  ।


জীবনঘনিষ্ঠতাকে নিজের কলমে সংগ্রামী নিম্নবিত্ত  মানুষের জীবনের আঙিনায় তুলে এনেছেন বারবার সৃষ্টি হয়েছে " রাতের সার্কাস  " নবারুন ভট্টাচার্যের কবিতা পড়ে  আমি বাস্তবতার খুব কাছে থেকে কল্পিত ভবিষ্যতের কথা ভাবার চেষ্টা করেছি, এই দুইয়ের টান যে ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক তা বুঝেতে পেরেছি কিন্তু পরক্ষনেই খেয়াল হয়েছে কঠিন জীবন আর বস্তুভিত্তিক চাহিদার টানেই তো আটকে আছে গরীব মধ্যবিত্ত মানুষের ইচ্ছেগুলো । বুকটা কেঁপে উঠলো , কেমন যেনো আর ভালো লাগছে না,এত যন্ত্রণা একসাথে পড়তে কারোর ভালো লাগে,বৃষ্টির রাত বইটা বন্ধ করে বাইরে বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম । বাবা কখন ঘরে ঠুকে বইটা খুলে পড়তে শুরু করেছে ,


" নিয়নের বেশ্যাদের ফসফোরাস ছায়ার মধ্যে
আশ্চর্য ক্রেন ছিঁড়ে খাচ্ছে শহরের শিরা-উপশিরা
গল গল করে বয়ে যাচ্ছে, জমে থাকছে শহরের রক্ত
অলৌকিক ভিক্ষাপাত্রের মতো চাঁদ
দাঁতে কামড়ে ছুটে যাচ্ছের রাতের কুকুর
আমি একটা ফাঁকা এম্বুলেন্স পাক খাচ্ছি উদ্ভট শহরে "