হাটে হাটে ঘুরে ঘুরে
মনু মিয়ার কইলজা উড়ে
'হায়রে এতো দাম!'
দাম শুধায়ে মাথায় হাত,
'আমার বিধি বাম!'
ছেলে শুধায়, 'ও আব্বা,
কিনবা গরু হাটে?'
'চুপ কর বে হারামজাদা,
পাইছি নাকি লাটে?
কাছনিতে তো তিরিশ আছে
তোর পকেটে কতো?'
'ঢং কইরো না, রাগ লাগেতো
যতো দিছো ততো।'
'খাঁড়া, দেহি, কাছনি খুইলা
আছে কতো টাকা,
হায় আল্লাহ, এ কী হইলো!
কাছনি দেহি ফাঁকা!'
'এ কী কথা হুনাও আব্বা,
ফালাইছো নি ভুইলা?'
'খাঁড়া, দেহি ভালা কইরা,
ধুর! লুঙ্গিও যায় খুইলা।'
লুঙ্গিখানা করতেই ঠিক
গরু দিলো গুতা,
মনু মিয়া উল্টায় পড়ে,
'ছিঁড়ে গেছে জুতা!'  
'আব্বা, ও আব্বা,
পাইছো নাকি ব্যথা?'
'চুপ কর বে, হারামজাদা,
কইস না আর কথা?'
শরম পেয়ে মনু মিয়া
মুখ রেখেছে ঢেকে
নাকে মুখে গরুর গোবর
ঠিকই গেছে মেখে।  
'টাকা গ্যালো, কাপড় গ্যালো,
জুতাও গ্যালো ছিঁইড়া,  
চলরে বাবা, বাপে-ব্যাটায়
বাড়িত যাই ফিইরা।'
'এমনে যামু? খালি হাতে?
মায় দিবো না ঝাড়ি?
নির্বাক মনু কয়না কথা,
যাচ্ছে ফিরে বাড়ি।
যেই দেখে সেই শুধায়,
'কী হয়েছে ভাই?'
'ত্রিশ হাজার টাকা গ্যালো,
গরু আমার নাই।
হায় আল্লাহ! ক্যান করলা
আমার সর্বনাশ?
ক্যাডা মারলো টাকা আমার?
পাইলে করুম লাশ।
'ও আব্বা, কাইন্দো না তো,
শরম লাগে আমার।'
'তোর কী কোনও চিন্তা আছে?
হারামজাদা, চামার।'
'ক্যামন কইরা কাছনি বান্ধো
টাকা গ্যালো পইড়া?'
'তোর মায়ে বাঁচবো না রে,
যাইবো ঠিকই মইরা।'
বাপে কাঁদে, ছেলে কাঁদে,
ঈদ হলো না আর।
এবার ঈদে মনু মিয়ার
দুঃখের সমাচার।