সবার জন্য শিক্ষা? সেতো শুধু মুখের স্লোগান; শিক্ষা পায় না কতোজনে?  
সে হিসেব কেউ বলতে পারে না, কেউ বলতে পারে না দায় যায় কার সনে।  
পথশিশু, ছিন্নমূল, ভবঘুরে, মানুষ সকল সুদূর চরে আর বসবাস যাদের বন্য,
গতর খাটিয়ে ঘাম ঝরিয়ে দু'বেলায় মুখে অন্ন যোগালে জীবন যাদের ধন্য
তাদের ভাগ্যে শিক্ষা নামক মৌলিক অধিকার থাকে এক সোনার হরিণ হয়ে।
মাতা-পিতা ছেড়ে যায় কতো সন্তানেরে রাস্তার মাঝে কর্তব্য পালনের ভয়ে,
অলি-গলি, মাথে-ঘাটে, পথের ধারে, বস্তিতে পড়ে থাকে কতো শিশু শিক্ষা ছাড়া,
যে হাতে থাকবে বই-খাতা-কলম সেই হাতগুলো শ্রমের কষাঘাতে দিশেহারা।
যে শিশুরা খেলবে ফুটবল ক্রিকেট, বিনোদনে পাবে বাহারি রকমের সব খেলনা,
সেই শিশুরাই কাঁধে নিয়েছে তুলে তাদের জীবিকার ভার, জীবন যে নয় ফ্যালনা। ৩১০  
টোকাই টুকে যায় কাগজ-প্লাস্টিক, ময়লার বস্তা নিয়েছে তুলে ছোট কচি কাঁধে,  
ফুটপাথেই শুয়ে যার রাত কেটে যায় সে কীভাবে শিক্ষিত হবার দিবাস্বপ্ন বাঁধে?
চরের শুকনো বুকে খড়ের ঘরে কতো শিশু পড়ে থাকে অনাহারে কতো রাতদিন!
কে দেবে তাদের শিক্ষার সুযোগ? জীবনে শুধু বেঁচে থাকার আশা যেখানে বিলীন।
গোমহিষের পিছনে ছুটে ছুটে যাদের কাটে দিন, প্রখর রোদে পোড়ে সব কচি মুখ,
বৃষ্টিতে ভিজে বেহাল যাদের শরীর, শীতের কাঁপুনি, খড়ের বিছানায় যারা খোঁজে সুখ,  
নিধুয়া পাথারে যাদের ডুবছে জীবন, যাদের জীবন জুড়ে শুধু হতাশার কালো
সভ্যতার আলো কীভাবে পৌঁছবে সেথা? কীভাবে ছড়িয়ে যাবে শিক্ষার আলো?
বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ব্যস্ত মানুষগুলি শরীরেতে মাখিয়ে ধূলি গরীব হয়েই রবে,
কবে এসে বান নিয়ে যায় প্রাণ- এ ভয়ে ভীত প্রাণে কি আর শিক্ষার স্থান হবে? ৩২০
(চলবে..................)