লাখ লাখ পুরুষ ও নারীর শ্রমে, তাদেরই শরীরসিক্ত ঘামে মালিকের মুখে মুনাফার হাসি,        
শ্রমিকে পায় শুধু অবহেলা, তাকে নিয়ে হয় নিষ্ঠুর খেলা, শ্রমিকেরা যেনো কেনা দাস-দাসী!    
রাত শেষে কাঁকডাকা ভোরে অর্ধযাপিত নিদ্রাকে ছেড়ে কারখানার পথে হাঁটা পায়ে পায়ে  
লাখো শ্রমিক জীবিকার টানে চলছে ছুঁটে কাজের পানে শ্রম দিয়ে যায় খেঁটে হাতে গায়ে।
একটু খাবার, একটু পানি, হাতে নিয়ে যাওয়া টিফিনখানি, এভাবে যায় লম্বা সময় কেটে,
টাটকা কিম্বা পঁচা-বাসি সে খাবারে আসে না হাসি, ক্ষুধা না মিটুক, তবু যেতে হয় খেঁটে।
হাতের কাছে কাপড়ের গাদা মাথার উপড়ে সুতোও বাঁধা, মেশিনের গায়ে চাপ প্রতিবারে
রঙ-বেরঙের অজস্র সুতো কাপড়ের বুকে দিচ্ছে গুঁতো, শ্রমিকের শরীর যতোটুকু পারে
তারও বেশি শ্রম দিয়ে যায়, মাসের শেষে যে মজুরি পায় তা দিয়ে আর চলেনা তেমন,
নিম্ন আয়ে পেট না জুড়োয়, নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, শ্রমিকের জীবন কেনো যে এমন!  ৩৯০
গার্মেন্টসের সব রুদ্ধ ঘরে গুমোট হাওয়া দিব্যি করে হাপিত্যেশ ভরা মনে কাজ করে তারা,  
নির্দয় সুতোর যন্ত্রগুলো কাপড় থেকে ছড়ায় ধুলো শ্রমিকের দেহগুলো থাকে আয়েশ ছাড়া,
কেউ আরো আয়ের জন্য বেশি কাজেও হয় ধন্য, কাজ করে যায় দিন থেকে মাঝ রাতে,
তাতেও অভাব হয় না পূরণ, অভাবেরও এমন ধরণ! কি দুর্ভাগ্য যে বাঁধা তাদের সাথে!    
কাজ করে কেউ বাঁধায় অসুখ, মালিকেও ফেরায় যে মুখ, মরলে খবর নেয় না যে কেউ,
মালিক ভাবে না শ্রমিকের কথা, শ্রমিকের বুকে মানায় ব্যথা, তারাই তো পাবে কষ্টের ঢেউ।
মাস বা বছর, যুগে যুগে মরলে শ্রমিক রোগে ভুগে মালিক আসে না দাঁড়াতে তাদের পাশে,
কে পুড়ে মরলো সেথা, কে পেলো বিষম ব্যথা, কারাই বা ফের পঙ্গু হয়ে কান্নার জলে ভাসে,
শ্রমিকের অধিকার সংবিধানে লেখা, সে সংবিধান আর ক’জনের দেখা? কেইবা ওসব মানে?
শ্রমিকের শ্রম শোষণ করে অসীম মুনাফা আসুক ঘরে- এছাড়া মালিকেরা আর কিছু জানে? ৪০০