প্রযুক্তির অসভ্য ছোঁয়া, অবাধ অনাচার, অশ্লীলতার বান নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়াচ্ছে বিষ,
কিশোর-তরুণ-যুবকেরা স্বভাবে বেশ বাঁকাটেরা, মেয়ে দেখলেই বেসুরো ভঙ্গিতে দেয় শিস।
স্কুলের গেইটে, রাস্তার ধারে, অলিতে গলিতে, হাটেবাজারে শিশু-কিশোরী-তরুণী-যুবতী নারী,
হেনস্তা যে হচ্ছে সদা, কেউ এসে দেয় না বাধা, কুপুরুষের নির্যাতনে ভুগে করে আহাজারি।  
পথ আটকে ধরে মেয়ে, অন্যরা তা দেখে চেয়ে, জীবন রক্ষার দায়ে সবাই যায় যে সড়ে দূরে,
যেখানে ধরছে যারে শেষ করে দেয় তারে, সে পাষণ্ড পুরুষের দল শেষে ঘরবাড়িও দেয় পুড়ে।
অন্য কেউ এগোয় না সাহস করে, ভুক্তভোগীর ভাইকেও মারে, হাত-পা হারিয়ে পঙ্গু হয় পিতা,    
প্রতিবাদী শিক্ষককেও প্রহার করে, কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে শেষে তার দেহে জ্বলে চিতা।  
বিকৃত মানসিকতার ভার বাড়াচ্ছে এ অনাচার, নিগৃহীত নারীসমাজ, এ যে অসহ্য অভিসম্পাত,
বখাটেপনা, উত্যক্তকরণের আড়ালে এ যে বিপথগামী পুরুষদের নারী নির্যাতন, যৌন উৎপাত। ৫৪০
মুঠোফোনে ছবি তোলা, গালাগালের উঁচু গলা, অশালীন কথা বলা কিম্বা গায়ে বোতল ছুঁড়ে মারা,  
নাম ধরে চিৎকার, নোংরা ভঙ্গিমার ইশারা করে, ওড়না টেনে ধরে কাছে টেনে নিয়ে যায় তারা।
শরীরে হাত দিয়ে কিম্বা উড়ন্ত চুমু নিয়ে কাছে ঘেঁষে থেকে, ক্ষমতা আছে কার রুখবে যে তা?
অস্ত্র বুকে তাক করে জোর করে নেয় ধরে, দলবেঁধে সারে নিপীড়ন নির্যাতন, হীন পাশবিকতা।
নোংরা প্রস্তাবে যদি না দেয় সাড়া এসিড পড়বে মুখে কিম্বা পড়বে মারা সেই বখাটের হাতে,
দরজা ভেঙ্গে ঢুকে লাফিয়ে পড়বে বুকে, লুটে নেবে সব, বখাটেপনার শেষ হয় না তো তাতে।
আইনকানুন বড় বেশি অসহায়, বখাটের দল সীমাটাও ছেড়ে যায়, নারীর আত্মাহুতি গ্লানির মুখে,
প্রতিবাদী হুমকি পায়, বাপ-মা প্রাণ হারায়, পাশবিকতায় মত্ত বখাটে পুরুষ, কে দাঁড়াবে রুখে?
জৈবিক, সামাজিক কিম্বা সাংস্কৃতিক কারণে ছটফটানি দিনে দিনে বেড়ে যায় সন্তানের মাঝে,  
একটু প্রীতির খোঁজে ভালোমন্দ না বুঝে দিশাহীন সে সন্তান তাই যায় ডুবে কতো ভুল কাজে! ৫৫০
অভিভাবকের নীরবতা বাড়ায় যে অস্থিরতা, ব্যাকুলতা নিয়ে দিনে দিনে সন্তান যখন বিগড়ে যায়
পরিবার যন্ত্রণায় ভোগে, সমাজেও ধরে রোগে, সেই সন্তানই সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আপদ ঢোকায়।
যখন যন্ত্রণা ভরে সন্তান ফিরে ঘরে, অপরাধীর ছাপ নিয়ে, তখন বোধ জাগলে কী হবে তাতে?  
সন্তানের হাঁটাচলা, ওঠা-বসায় কথা বলা পিতামাতা করে খেয়াল? সঙ্গে রাখে সন্তানদের সাথে?  
দেহ-মনের পরিবর্তনে ছেলে-মেয়ে প্রতিক্ষণে মুখিয়ে থাকে একটু মায়া-মমতা পাবার আশায়,
অসচেতন পিতামাতা প্রয়োজনীয় সহনশীলতা, স্নেহ, মায়া, মমতা, ভালোবাসা দিতে ভুলে যায়।
যে ব্যাধি ছড়িয়ে গেছে শহর কিম্বা গ্রামে, যে ব্যাধিতে ভুগে আজ নারীরা আছে দুঃসহ হালে,
সে ব্যাধি প্রতিকার দায়ে নিদান হিসেবে বন্দী করে রাখবে নারী ঘরের ভিতর, পর্দার অন্তরালে?  
এ সমাজে হায় অশ্লীলতা ধায় পাশবিক কামনায় পুরুষ করে যায় মাতাবোনসম নারীর বস্ত্রহরণ,  
পারছে কি আজ এ হীন সমাজ গড়তে সব পুরুষ ও নারীর বিকাশের জন্য স্বাভাবিক বাতাবরণ? ৫৬০