মনের সুবাস দিলাম ছেড়ে
    নিবি না তা ছুঁয়ে?  
চল না সখী এক হয়ে যাই
    তুই আর আমি দুয়ে।  
হাতের সাথে হাত মিলিয়ে
    চোখের সাথে চোখ,
চল না এবার দূরে কোথাও
    হারিয়ে যাওয়া হোক।
মেঠো পথে মেঘলা দিনে
    চল না দুজন হাঁটি,
মনের সাথে মন মিশিয়ে
    প্রেমটা করি খাঁটি।
চল না দুজন বানিয়ে ভেলা
    ভাসি নদীর জলে,
ভালোবাসার জোয়ার দিয়ে
    কুলকে আনি তলে।
বক-শালিকের সবুজ গাঁয়ে
    চল না উড়ে যাই,
প্রেম পুকুরে দুজন মিলে
    হাবুডুবু খাই।
পাখির গানে মুখর হাওয়া
    লাগবে আকাশ গাঁয়ে,
রাখাল হয়ে ধরবো বাঁশি,
    নাচবি নূপুর পায়ে।  
পাখির সুরে সুর মেলাবে
    রাখাল ছেলের গান,
হৃদয় মাঝে হৃদয় মিশে
    প্রাণে দেবে টান।
বৈশাখেরই মেঘলা দিনে
    ঝড়-বাদলের হাওয়া,
ভিজিয়ে মোদের নামবে বারি
    পূর্ণ করে চাওয়া।  
রিমঝিমঝিম বর্ষা দোলায়
    মিটিয়ে ধরার সুখ,
মাথার উপর থাকবে আকাশ,
    ভিজবে লাজুক মুখ।
বিলের বুকে অঝোর ধারায়
    চলবে জলের খেলা,
তোর বদনে তাকিয়ে থেকে
    কাটিয়ে দেবো বেলা।
মাঝ শরতে টুকরো মেঘে,
    মুক্ত আকাশ নীলে
চল না খেলি প্রেমের খেলা
    তুই আর আমি মিলে।
হেমন্তেরই ফসলী মাঠে
   লাগলে হাওয়ার দোলা,
চোখের তারায় তাকিয়ে থেকে
    হবো আত্মভোলা।  
শীতের দিনে হিমেল হাওয়া,
    শিশির ভেজা মাঠ,
চল না দুজন সেথায় করি
    ভালোবাসার পাঠ।
ফাগুন এলে ফুলের বনে
    লাগবে মধুর ঢেউ,
সেখানেতেই কাটবে সময়,
    দেখবে না তো কেউ।
পায়ের চাপে ঢেঁকির তলে
    ভাঙ্গা ধানের গন্ধে
তুই আর আমি হারিয়ে যাবো
    নবান্নেরই ছন্দে।
হরেক রকম পিঠা-পায়েস,
    নতুন ধানের খাবার,
দুজন মিলে করবো না হয়
    একেবারেই সাবার।
মোটা সুতোর ছাপা শাড়ি
    পরবি রে তুই গায়ে,
চিকন নদীর স্বচ্ছ বুকে
    ভাসবো তখন নায়ে।
বৈঠা হাতে বাইবো তরী,
    থাকবি রে তুই সাথে,
গোছা বেণি বাঁধিয়ে ফিতেয়,
    রঙ্গিন চুড়ি হাতে।
কচুরিপানা ফুলের বাহার
    সাজাবে তোর কোল,
আমার চোখে লাগবে নেশা,
    উম্মাদনার দোল।  
মুক্ত হাওয়ায় আমার সাথে  
    থাকবি আজীবন।  
আমার শ্যামল সবুজ গাঁয়ে
    দিলাম আমন্ত্রণ।