মনে পড়ে সেই ইসকুল, টিফিনের ঘন্টা,
দুটি চোখে জল আসে, হুহু করে মনটা।  
সিট নিয়ে মারামারি, হাতাহাতি সারাক্ষণ,
  কান ধরে উঠবস, স্যারদের জ্বালাতন!
   ঘুনে ধরা জানালায় দুপুরের রোদ্দুর,
কানে কানে ফিসফিস 'টিফিনের কদ্দুর?'
মা'র দেওয়া দু'টাকায় আমড়া ও চালতা,
মনে হতো সেই মেয়ে যে পড়েছে আলতা।
স্কুল মাঠে মুজিব স্যার, হাতে ছিলো বেতটা,
ভয়ে দিলে পিছুটান, খিঁচে ধরতেন পেটটা।
সকালেতে রেডি হওয়া, ক্লাশ শুরু সাড়ে দশ,
হেঁটে যেতে দেরি হয়, গালে মাইর ঠশাঠশ।
    দরজার এক কোণে বোলতার চাকটা,
কেউ কেউ খুঁজে ফেরে মীর স্যারের টাকটা।  
ওয়াশরুমের ওয়ালে বাসা বাঁধে ভিমরুল,
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাই দেখে যায় ইমরুল।
  বাক্সতে সাদা চক, ক্ষয়ে যাওয়া ডাস্টার,
  পান খেয়ে পিক ফেলেন ইদ্রিস মাস্টার।
   চিৎকার, চেঁচামেচি ঠেলাঠেলি চলছে,
  কেউ বলে, 'এই চুপ! স্যার কথা বলছে।'
  ক্লাশ শেষে ভোঁ দৌড়, দাপাদাপি ধুলোতে,
  রিয়াদের শার্ট খোলা নিচু পেট ফুলোতে।
  হাত দিয়ে থামাতেই সেইলিং-এর ফ্যানটা
  মাঝখানে ছিঁড়ে গেলো প্লাবনের প্যান্টটা।
গুলবাহার ম্যাডামের ক্লাশে দিতাম 'ফিস'টা,
     কান ধরে উঠবস গুনে গুনে বিশটা!
  মেয়েদের খাতা ভরা আঁকা কতো ছবিরে!
   তাই দেখে কেউ কেউ হতো মহাকবিরে।
    টিফিনের ফাঁকেতে মিলে সব দলবল,
  তিস্তার বাঁধে যেয়ে করা হতো কোলাহল!
  পরীক্ষার মাঝপথে বাথরুম করার ছলনা,
  'ওরে রাজু, ওরে ডলার, উত্তরটা বল না।'
    খসখসে মলাটের খাতা আর বই রে,
   ভাঁজে ভাঁজে লেগে থাকা গন্ধটা কই রে!
ছেলেবেলার এতো কিছু! গেলো ওরা কৈ সব?
  পেন্সিলে আঁকা সেই ফেলে আসা শৈশব।
  এতো হাসি, এতো খুশি, এতো হৈ চৈ শোর,
    মনে পড়ে ইসকুল, মনে পড়ে কৈশোর।