আমি ডিভোর্সী, অনেক কেটেছে আমার রাত নির্ঘুম  
আজ আমাকে ঘুমুতেই হবে যে ভাবেই হোক
খুলে দিয়ে আমার অবরুদ্ধ সত্তা।
এখন আর ভয় নেই এখন একটু দেরিতে উঠলে কেউ বলবে না
অলক্ষ্মী বউ ঘরে এনেছি, বলবে না নির্লজ্জ
না খেয়ে কারো জন্য অপেক্ষা করলে,কেউ বলবে না
এ'দেখি ঢং-এর ঢেঁকি,ঢং দেখে বাঁচি না,
মন খারাপের বিকেলে একটু বারান্দায় দাঁড়ালে
কেউ বলবে না, পরপুরুষ দেখতে দাঁড়িয়েছে,
কোন কথার প্রতিবাদ করলে,কেউ গায়ে হাত তুলবে না,
শুনতে হবেনা কারো কটু কথা, দেখতে হবেনা বাঁকা চাহনি,
মন খুলে কাঁদতে গেলে এখন কেউ বলবেনা
লোক দেখানোর নাটক করছি চোখ জলে ভিজিয়ে
আমি ভেজা চুলে আরশিতে দাঁড়ালে, পায়ে আলতা পরলে,
কেউ বলবেনা, কি বেহায়া মেয়ে'রে।
এতো আত্মত্যাগের পরেও আমার খেতাব " ডিভোর্সী"
এখন আমার শরীরে কলঙ্ক, আত্মা জুড়ে উজার করা অবহেলা
এখন আমাকে শুনতে হয় অন্য কিছু, সব দোষ আমার
আমি সংসারী নই, আমি বন্ধ্যা,আমি দুশ্চরিত্রা
পথে ঘাটে অনেক পুরুষ বলে আমি ডিভোর্সী মেয়ে,
একটু পটালেই পাওয়া যাবে হয়তো শয্যায়  
পরম আত্মীয়রা এড়িয়ে চলে, আমি খারাপ মেয়ে বলে,
কিন্তু কেন,সে দিন তাঁরা কোথায় ছিল
যখন আমি অবহেলা সইতে সইতে ঘুমিয়ে পড়তাম
স্বামী নামক পশুর বেদম মার খেয়ে খেয়ে
তবুও সমালোচনা আমায় ঘিরে,
আমি সংসার ছেড়েছি এ আমার ব্যর্থতা,
কিন্তু আমিও পাইনি আমার যথাযথ সম্মান
আপনি বা আপনাদের কাছে আমার এই অধিকার ছিল প্রাপ্য
আমার হাত ধরে কেউ হাঁটবে জীবন যবনিকার সীমান্তে।
___________________
রচনাকাল: আঁধার সন্ধ্যা ৮.১০ মিনিট
২৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ
১৪-ই  ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
গ্রিসের রাজধানী এথেন্স থেকে
© Copyright সংরক্ষিত ®