আমি আয়না হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছি
নিজের অবয়বের ভুল ভ্রান্তিগুলো খুঁজে বের করবো বলে
কপালের ভাঁজে, চোখের তারায়, ঠোঁটের স্নিগ্ধতায়
কোথাও কিছুই খুঁজে পেলাম না,শুধুই এইটুকু দেখালাম,
চোখের নিচে ত্বকের ভাঁজের আড়ালে,
লুকানো আছে নীরস এক বার্ধক্যের ছাপ অনায়াসে
একটু একটু করে পার করে আসা দিনের স্মৃতি
এক নিদারুণ সুন্দর আল্পনা এঁকেছে
সাদা-কালো চুলের দারুণ কারুকার্যের আড়ালে।


আয়নায় দেখি মুখ,এপাশ ওপাশে ঘুরে ঘুরে,
একটু নিচে নামতেই নজরে এলো হৃদয়ের স্পন্দন,
হৃদয় অলিন্দে অসংখ্য স্বপ্নমালতীর অপমৃত্যু
মনের চোরাগলির গভীরে দেখি অচেনা কাব্যের অজস্র ঝংকার
শাশ্বত প্রেম চেতনার গোমড়ামুখো অতৃপ্তির আহ্বান,
স্বপ্নেরা বিবর্ণ ক্যানভাসে জড়িয়ে আছে সফেদ কাফনে,
স্মৃতির দর্পনে নির্মম প্রত্যাখানের প্রতিচ্ছবি
ঝাপসা হয়ে আছে অব্যক্ত বেদনা রূপালী প্রণয়ী রাতে
আটপৌরে ভাবনাগুলো প্রগাঢ় অনুরাগের দিগন্তে।


নীরব অভিমানে মৌনতাকে সঙ্গী করে শব্দহীন উষ্ণ নিঃশ্বাসে
নিয়তির দ্বারে করাঘাত করে অতৃপ্ত আকাঙ্খাগুলো
দীর্ঘ প্রতিক্ষীত প্রহর ছুঁয়ে যায় অবরুদ্ধ যামিনীর তীর,  
সপ্তবর্ণা আবীরগুলো অরণ্যে হৃদয় ছুঁয়ে যায়
হৃদয় হরণকারী বিষণ্ণ সুরের মূর্ছনায় ভেসে,  
দূর দিগন্তের সীমানায় মিলিয়ে যায় পরিযায়ী সুখ
বৈষয়িক মন ভুলে যায় এই জীবনের পান্থশালার অভিমান
বন্যরাতে অসংখ্য নক্ষত্রের অগ্নিশিখা দাপটে
হারিয়ে যায় বিদীর্ণ অনুভূতি খচিত চন্দ্রালোকের আর্তনাদে।


জানি না কখন কোন অচেনা ভুবনে পাড়ি জমাতে হবে,
লিলুয়া বাতাস নিয়ে যাবে এক ঝরা পাতার গহ্বরে,
সত্যি আমরা ক্ষণিকের অতিথি মাত্র।
_________________
রচনা: ক্লান্ত বিকেল ৫.১৫ মিনিট
১৩ মার্চ রবিবার ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ  
২৮-এ ফাল্গুন ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
১০-ই শাবান ১৪৪৩ হিজরী  
গ্রিসের রাজধানী এথেন্স থেকে  
©️ Copyright সংরক্ষিত ®