এক সবুজ শান্ত প্রান্তরে অল্প কিছু দূর হেঁটেছি মাত্র
আধুনিকতার ছোঁয়া এখনো লাগেনি এখানে
যানবাহনের শব্দ তেমন শোনা যায় না
পায়ে হেঁটে পৌঁছাতে হয় সেই স্বর্গ ছোঁয়া গাঁয়ে
আনমনে আমি চলেছি প্রেয়সীর চিন্তায় বিভোর হয়ে
তখন হঠাৎ কোথা থেকে নীলকণ্ঠী এক পাখি এসে
মধুর কণ্ঠে হৃদয়ের সব বাতায়ন খুলে দিয়ে গেল  
সুরে সুরে জানালো, আমি আসবো বলে-
বসন্ত কাননের সমস্ত ফুল এনে সাজানো হয়েছে এ'বাসর
আমার ভালোবাসার মানুষটি সেজেছে ফুল দিয়ে
কপালে তার সন্ধ্যা তারার জ্বলন্ত টিপ
খোপায় প্রথম ভালোবাসার জুঁই,চামেলি,রক্তজবা  
আরো খবর পেলাম নীরবে-
তার হাত'দুটো আশ্চর্য সুন্দর পদ্ম হয়ে গেছে
মেহেদীর সুনিপূণ আল্পনায়
কিন্তু ভালোবাসার মানুষটির কাছে পৌঁছুতে
এখনো অনেকটা পথ বাকি
হঠাৎ কি কারণে যেন মনটা অস্থির হয়ে উঠলো
এ'পথ কেন শেষ হয়না, কত দীর্ঘ এ'পথ  
এভাবেই হাঁটতে হাঁটতে এক নদীর পাড়ে এসে থামলাম
ভাবছি  হয়ত সে অপেক্ষায় অস্থির হয়ে উঠেছে
চোখ ফিরিয়ে দেখি সে আমার পাশেই বসা
এক নির্বিকার হাসি নিয়ে তার চোখে চোখ রাখতেই দেখি
নয়ন পালকে তার তপ্ত জলের অশান্ত ঢেউ
চন্দ্রহার ভিজেছে তার কাজল ধোয়া নোনা জলে
অফুরন্ত ভালোবাসার নেশা তার এখনো শেষ হয়নি
সারারাত সে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলো
মনের আঙিনায় অঝোরে বৃষ্টি ঝরছে
তার উষ্ণ অশ্রু আর বৃষ্টির জল মিশে একাকার  
আমি তার দিকে তাকিয়ে নীরবে ভাবছি
এ'অশ্রু কি আমাকে পাবার আনন্দের
নাকি হারানো অতীতের স্মৃতি মাখা কষ্টের ফোঁটা
কিছু বুঝে উঠার আগেই জানালা দিয়ে সোনালী আলো এসে
আমার সব কিছুই এলোমেলো করে দিয়ে গেলো
চোখ খুলে দেখি সূর্য ঢলে পড়েছে সময়ের বিদীর্ণ অলিন্দে।
__________________
রচনা :উজ্জ্বল সকাল ১১.৪৫ মিনিট
১২- ই অগ্রহায়ণ ১৪২৭ বাংলা
২৭ নভেম্বর শুক্রবার ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ
গ্রিসের রাজধানী এথেন্স থেকে
© Copyright সংরক্ষিত ®