মাটি আর আকাশের মধ্যে কে কাকে বেশি ভালবেসেছিল সেটা অজানাই থাক।
আকাশ মাটিকে কথা দিয়েছিল কোন দিনও ছেড়ে যাবে না।
ভালবাসার নদীতে নিজেক ভাসিয়ে দিয়ে মাটিও এক সুরে বলে উঠেছিল তার মনে থাকবে শুধুই আকাশ।
ছোট্ট চারা গাছ থেকে যখন তাদের প্রেমটা ধিরে ধিরে এক পরিণত বৃক্ষের দিকে এগোতে লাগল।
ঠিক তখনই বেজে উঠেছিল ভাগ্য বদলের ঘণ্টা।
ভালবাসা আর ক্ষমতার লড়াইতে হেরে গেল ভালোবাসা।
সময়ের পরিহাসে বলবান হাওয়া আকাশকে মাটির থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল অনেক দূরে।
আকাশ যেতে যেতে মাটির দিকে তাকিয়ে বলে উঠেছিল ‘ভয় পেয়েও না মাটি, আমি ছিলাম, আমি আছি, আমি থাকব’।


কালচক্রে  নীল আকাশের কোলে এল নতুন নতুন মুখ।
তারাদের কলরবে একবারে ভরে উঠল সংসার।
আর চার ছেলে-মেয়ের সাথে ব্যস্ত মাটির জীবন।
এত কিছুর মধ্যেও আকাশ নিজের শরীরকে সূর্যের তাপে ঝলসিয়ে মাটিকে উপহার দিত নতুন নতুন দিন।


মাটিও আকাশকে ভুলতে পারেনি কোনদিন।
অনেকে বলে রাতের অন্ধকারে,সবার চোখের আড়ালে,
আকাশ আসত মাটির সাথে দেখা করতে।
সে যাই হোক, আকাশের বিরহে মাটি হয়েছিল মলিন, রুক্ষ, নিষ্প্রাণ।
আর মাটিকে না পাওয়ার যন্ত্রনা, ছুঁয়ে দেখার অদম্য ইচ্ছা আকাশকে ঢেকে দিয়েছিল ধুমসো কালো মেঘে।
মনের মধ্যে জমা সেইসব ইচ্ছারা বৃষ্টি হয়ে আজও নেমে আসে মাটির বুকে,
যাকে প্রাণ দিয়ে আগলে রাখে মাটি।
আকাশের চোখের জলের সেইসব সমুদ্রের মধ্যে তাই আজও ফুটে ওঠে শুধু আকাশের ছবি।
হাজার যোজন দূরে থেকেও আকাশ ছুঁয়ে ফেলে মাটিকে।