ঘুণে ধরা টেবিল,নড়বড়ে চেয়ার।
একটা পায়া ভাঙ্গা,
পেরেক মারার নেই কোনো জায়গা।
তার উপর বসে কান্তক্যাবলা।
সামনে মাছের অ্যাকুরিয়াম,মাছ নেই কোনো
তাও নয় শূন্য।
কারন পানি আছে।
তার চোখের দৃষ্টি ঘোলাটে,পিচগলা রাস্তার উপর নিবদ্ধ।
বহুদিন হয়ে গেল পড়ে না রাস্তায় কোনো প্রেমিক-প্রেমিকার পায়ের ছাপ,
কেউ চিৎকার করে বলে না ওরা করছে পাপ!


মহাসড়ক যেন শূন্যতার চাদরে ঢেকে গেছে
প্রেমিকের রক্ত বিষাক্ত হয়ে গেছে ক্রিয়োটিনিনের আধিক্যে
প্রেমিকার বক্ষপিঞ্জরের নিচে,পিঠ সংলগ্ন অবস্থায় বৃক্কের বদলে অবস্থান করছে একজোড়া কালো পাথর,সাদা সাদা হালকা দাগ বিশিষ্ট।
সিয়েরা লিওনে দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃত বাংলা ভাষায় কথা বলার কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না,
আইভরিকোস্টে বাংলাদেশ সড়ক নামে খ্যাত সড়কে কোনো চার চাকার গাড়ি চলছে না।
কান্তক্যাবলা দেখছে সব,কিন্তু পারছে না কিছু বলতে
ধর্ষকদের পারছে না অন্তত কানটা মলতে।
কিছু বলতে গেলেই স্বৈরশাসক তাকে জেলে পুরে দেয়ার কথা দেয় মনে করিয়ে।


এখন আর শাহবাগে ফুলের দোকানের সামনে ছোট ছোট বাচ্চাকে ফুল হাতে ঘুরতে দেখা যায় না
বাতিঘরের ছাদে প্রেয়সীকে সাথে নিয়ে রংচঙে শার্ট পরিহিত যুবককে দেখা যায় না।
টিএসসিতে চা খেতে খেতে আর নিকোটিন পোড়াতে পোড়াতে কার্ল মার্ক্স আর লেনিন নিয়ে আলোচনাও বসে না বেঞ্চগুলোতে।


সন্ধ্যে নামলে চন্দ্রিমা উদ্যানের আশেপাশে,
কড়া লিপস্টিক ঠোঁটে কোনো তথাকথিত কুশ্রী মেয়েকে মাত্র একশটা টাকার জন্য
হতে হচ্ছে না বন্য।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তাদের বানাতে পারছে না পণ্য।


বেইজিং এ আর কোনো বিশ্ব নারী সম্মেলনে কেউ যোগদান করার জন্য যাচ্ছে না
তসলিমার কলম আর গর্জে উঠছে না
মৌলবাদীরা আক্রমণ করছে না
কোনো হীরামণি,নুসরাত,সুলতানা,নার্গিসের জন্ম হচ্ছে না।
মসজিদে,মন্দিরে,প্যাগোডায় কোথাও কোনো অনাচার হচ্ছে না,সর্বত্র এক আশ্চর্য শান্তি।


কান্তক্যাবলা সব চেয়ে চেয়ে দেখে
ঘুণে ধরা টেবিলের সামনে বসে
চোখে শূন্য দৃষ্টি,শূন্য মহাসড়কের উপর,
হয়তো চোখে ছানি পড়েছে কিংবা নষ্ট।
উঠে দাড়াতে পারছে না,পা নাড়াতে পারছে না
টেবিলের উপর তিন যুগ পুরনো সিগারেটের প্যাকেট ধরতে পারছে না।
হাত কাঁপছে ক্রমাগত
পারকিনসন রোগ সম্ভবত।
কিন্তু কান্তক্যাবলাকে দেখার কেউ নেই।


কারন সবাই মৃত!