কর্ম-ক্লান্ত দিন শেষে রাতে ফিরে ঘরে
আজকের দৈনিক খবরের পাতার ‘পরে
নিবিড় মনে পড়িতে ছিলাম প্রিয় মনে
আমার ঘরে পা টিপে-টিপে সেই ক্ষণে!
দশ বছরের ছেলেটি বলল হয়ে নত-
বাবা, তোমার এক ঘণ্টা সময়ের দাম কত ?
গম্ভীর মন দেখে ছেলে মোরে শুধায় আবার
এক'শ টাকা দিতে হবে প্রয়োজন আছে তার!


তাচ্ছিল্য ভরে বলি তারে কিসের টাকা-
সময়ের মূল্যই বা জানার আছে কি ঠ্যাকা?
অবনত নয়নে বাছা আমার ফিরিল ঘরে
কি জানি বুঝে তার কাছে গেলাম একটু পরে!
মা হারা ছেলেটি আমার বালিশে দিয়ে মুখ
অবিরত ফুঁপিয়ে কেঁদে ভাসিয়ে চলে বুক!
আমার উপস্থিতি বুঝে হকচকিয়ে উঠে বসে
কিছু বলবে নাকি চুপ, আনমনে শুধু কষে!


চকচকে একশত টাকার নোট দিয়ে হাতে
বলি,- বাকী টাকায় খেলনা নিও তাতে;
আরও বলি,- আমার একঘণ্টা সময়ের দাম
শত টাকার চেয়েও কিছু বেশী তারে বুঝালাম!
স্মিত হেসে ছেলে তখনি বিছানার নীচ হতে
কৌটা খানায় খুচরা পয়সা রাখা আছে তাতে;
নাও বাবা, টিফিন না খেয়ে জমানো কিছু-
দেড়’শ মিলিয়ে দিলাম তোমার ঘণ্টা পিছু!


একটি ঘণ্টার জন্যে তোমায় নিলাম কিনে
স্নেহ-মমতায় সময় দিও আগামীকাল দিনে!
আকুতি ভরা ছেলের কথায় বুকখানা ভাসে
অন্তরখানা ভেঙে যায় জড়িয়ে তারে পাশে!
হাউ-মাউ করে কেঁদে বলি, ওরে বাবা থাম
ভালবাসার সময় টুকু টাকা দিয়ে কিনলাম!