নিঝ্ঝুম কিছু নভেম্বর-বিকেল রুহানাকে ভালবাসত।
ওরা দুজনায় কলেজ-রুমের ক্যান্টিন সিড়ির ওপর বসে পেরিয়ে যেত মুহূর্তের পর মুহূর্ত। বড় আজব গল্প ছিল ওদের। শীতার্ত সব রাক্ষস-খোক্ষস, বেতাল হাড়ি-কুড়ি, বিকেল-মাঠ-গাছপালা এইসব। রুহানার মাঝে মাঝে মোবাইল বেজে উঠত দিগন্ত নিশ্চুপ করে দিয়ে। বেপরোয়া  নাম্বার থেকে অচেনা সব কল আসত প্রায়শই। উদাস-পাটা এই নাম্বারগুলো হয়তো এগ্জিস্টই করত না কখনো কখনো। কিন্তু রুহানার দারুণ আমোদ হত। বিকেলনদী ভারী থইথই হয়ে যেত।
ফোনকলগুলোকে ক্যান্টিন চত্বরেও দেখা যেত অনেকসময়। রুহানা ঘাস পায়ে ক্যান্টিন-জলে নেমে যেত হঠাৎ হঠাৎ। মেঘতারা বিকেলগুলো একরাশ হতাশা নিয়ে আলো নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়ত। সুমনা এসে আর কোনো সাড়া পেত না।


পরদিন আবার সুমনা এসে দাঁড়াত বিকেলের কাছাকাছি ।তারপর অজানা নাম্বারেরা সুমনাকে হাতছানি দিয়ে টেনে নিয়ে যেত একইভাবে। সুমনার সাথে বিকেলগুলো ক্রমশ ছাড়া ছাড়া হয়ে যেতে লাগল।
গোটা ডিসেম্বর সুমনা আর এল না। এতদিনে ক্যান্টিন-মাঠের  সিড়ির ওপর এবড়োখেবড়ো সন্ধ্যে সন্ধ্যে ঘাস জমেছে। সেই অচেনা অন্ধকারে সাঁঝবাতি বিকেল সুমনাকে কল করল অনেকদেশ পারের থেকে।
অজানা কন্ঠস্বরে ভেসে এল — দ্য নাম্বার ডাজ্ নট্ এগ্জিস্ট।