ফাটল ধরা দেয়ালের পাশে অচল ঘড়িটাকে টাঙিয়ে দাও।
দুরাশার আঁধার আসুক ঘনিয়ে নিবিড় হয়ে একান্তে।
ভাঙা আয়নাটাকে একটু ডান দিকে সরাতে হবে দাদা –
উঁহু… ও ভাবে সোজাসুজি নয়, বাঁ দিকে কাৎ করে।
নিজেকে দেখে মনে হবে বড় অচেনা
ক্লান্ত পায়ে ঠান্ডা হয়ে আসা জীবন।
ব্যাস, ঠিক আছে। লাইটস…ক্যামেরা…। উত্তমদা, আসুন।
ছোট্ট একটা ক্লোজআপ নেব। এইখানে বসুন,
প্লীজ…দেয়ালে হেলান দিয়ে বলবেন।
মনিটর … অ্যাকশন… উত্তমদা বলুন –
“হয়তো তোমারই জন্য আজও আছি বেঁচে”
না না, এতটা স্পষ্টভাবে নয়।
নিজে নিজের সাথে প্রলাপ বকছেন।
…যেন মনে হবে অনুচ্চারিত অঙ্গীকারে স্বপ্নভঙ্গ!
...মনে হবে পরাজিত মানুষের নিস্ফল রোদন
হাহাকার ধ্বনিতে আজও বাঁচতে চায়,
বাঁচতে চায় শুধু ভালোবেসে।
পড়ন্ত বিকেলের ছায়ায় সন্ধ্যা আসে নিরবে
একাকীত্বের রাত্রি যেন মৃত্যুকে করে আলিঙ্গন।
- আপনার চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ অথচ উষ্ণময় হতে হবে
নিঝুম আবছা-অন্ধকারে সম্মুখে ভাঙা দরজার কার্ণিশ বেয়ে
একজোড়া টিকটিকি ছিটকে পড়ে মাটিতে, তবু মুক্ত হয় না।
মৃত পায়ে পেশা শুকনো ফুলের দীর্ঘশ্বাস
কেঁদে কেঁদে আজও খোঁজে প্রেম।
দৃষ্টিপথে আছে শুধু একখানা লাঠি আর
ধূসর পান্ডুলিপির খেরো খাতাখানি ঘরের এক কোণে।
এগেন…লাইটস…বার্ণিং। উত্তমদা, প্লীজ একটু মেক-আপ…
আলো, এখন টেকিং …অ্যাকশন…
দরজা দিয়ে ধীর পায়ে ভিতরে ঢুকে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে পড়ে
তারপর শোনা যায় শেষ সংলাপ…
“হয়তো… তোমারই জন্য… আজও… আছি…বেঁচে !”