বন্ধু,


তুমি আমাকে একদিন অনুসরণ করেছিলে - আমি জানি সে কথা, বুঝি। তুমিও বোঝ, শুধু মুখ ফুটে বলতে পারোনি। পারিনি আমিও তোমাকে বলতে। অথচ তোমার চোখের ভাষা আমার হৃদয়-উচ্ছ্বাসের বাঁধনহারা বন্যা হলেও, মোহনায় এসে মিলিত হল না! ভাসতে ভাসতে আজ তুমি এ শহর ছেড়ে অন্য শহরে। তুমি এখন অন্য কারও। আর আমি উজানের স্রোতে ভেসে শ্যামলীর মিতায়। তোমাকে আজ বড্ড মনে পড়ছে। মনে পড়ছে মুক্তকেশী সুচিস্মিতা সুনয়না তোমাকে। তোমাকে দেখেছি বহুবার, কেবলই দেখেছি নিস্পলক দৃষ্টিতে। যখন নয়নের সমুখে তুমি নেই - তখনও তোমায় দেখেছি রাত্রিদিন, তুমি বিশ্বাস করো - ভেবেছি কত কি! সীমাহীন! তুমি হয়তো সেই অব্যক্ত কথা বুঝেছিলে। তোমার নিভৃত রজনী রজনীগন্ধার গন্ধে ভরাতে পারিনি আমি, কি এক সংকোচে! অথচ বিনিদ্র রজনী আমি বড় একা। একবার নয়, দু'বার নয়, তিন তিনবার তুমি পেয়ালা সাজিয়েছিলে স্বপ্নালু রাতের মায়ায়। আমি তোমার পানি গ্রহণ করতে এসে শীতল হতে চেয়ে ভুল করেছিলাম, কেন না - তুমি চেয়েছিলে উষ্ণতা। সেইক্ষণে তোমাকে ভয় পেয়েছি, তোমাকে কষ্ট দিয়েছি, তবুও ভালোবেসেছি। তোমার কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে যে গান রচিত হয়েছিল সে কি প্রেম নয়! প্রশান্তি নয়। আমি বড় উদাসীন। তুমি আমার কাছে হারিয়ে যাওয়া অজন্তা গুহাচিত্রের রেশমীর রোশনাই। সেই রোশনাই আলোকে আমার হৃদয়ে আজও যে বাঁশি বাজে, সে তোমারে না পাওয়া রাগীনির চুম্বন জনিত শ্বাসাঘাতের নিস্তব্ধতা। আজও প্রেম সাগরে সাঁতরে আমি প্রেমিক হতে পারিনি তোমার, তবুও আরও বহুকাল  সাঁতার দিতে চাই সংগোপনে এই মনব্যথায়।


তোমার নামে এই চিঠি, তোমাকে আজও ভালোবাসি।


ইতি ছিন্নমূল