মায়ের কোলে জন্ম নিলো,
মেয়েটি এলো দুনিয়াতে,
পিতা-মাতা হলো খুশি,
পেয়ে আঁধার রাতে।
দুচক্ষু খুলিয়া, দু-পা হাঁটিয়া,
মেয়ে যখন হলো বধুয়া,
সোয়ামির ঘরে এলো
নতুন বধুয়া।
সুখে-দুঃখে রবে সুয়ামির সাথে
নতুন বধুয়া,
বধুয়ার মনে কত আশা,
পাবে সোয়ামির ভালোবাসা,
হা, কত স্বপ্ন লইয়া,
এলো সোয়ামির ঘরে
নতুন বধুয়া।
পরের মাকে মা ডাকিবে
পরের বাবাকে ডাকিবে বাবা,
পরের বোনকে বোন ডাকিবে
পরের ভাইকে ডাকিবে ভাই,
করিতে তাদের আপন
এলো সোয়ামির ঘরে
নতুন বধুয়া।
কখনো পর হয় কি আপন?
যদি নাহি ভাবে,
যদি নাহি করে তাহারা আপন!
কত স্বপ্ন, কত আশা,
মেয়েটি আজ নতুন বধুয়া,
পিতা-মাতা খুশি
মেয়েটি বুঝি আছে আজ সুখী।
ওগো মোর সোয়ামি
কি করিলে পাইবো তোমার মন?
আমি করিতে চাই তোমার
সেবা যতন।
আমাকে করিও-না পর,
পরকে করিতে আপন,
তোমার চরণ করিলেম চুম্বন।
ওগো মোর প্রাণের সোয়ামি,
কাহার পানে চাহিয়া?
মোর গায়ে করিলে আঘাত,
দিলে মিথ্যে অপবাদ,
বলিয়া কাঁদে নতুন বধুয়া।
সোয়ামির ঘরে গিয়ে
সোয়ামির হাতে
নির্যাতন হয়,
এই বাংলার অনেক বধুয়া যে!
যৌতুকের টাকা দিতে নাহি পারিলে
ভাগ্যে খাবার জুটে নাহি রে।
কেরোসিন গায়ে দেয় ঢেলে
আগুনে জ্বলে পুড়ে,
ঘৃনা লাঞ্ছনা বুকে লয়ে
শ্বশুর শ্বাশুড়ির হাতে
সোয়ামির হাতে,
মারা যায়
এই বাংলার অনেক বধুয়া রে।
অনেক নতুন বধুয়ার
সুন্দর জীবন
অসুন্দর হয়ে যায়
এই যৌতুকের কারণে।
দুচক্ষু খুলিয়া, দু-পা হাঁটিয়া,
মেয়েটি আজ নতুন বধুয়া।