এই সুন্দর রঙিন পৃথিবী থেকে
তুমি হারিয়ে গেলে
তার সাথে হারিয়ে গেল
একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের দশ
সদস্যের সুখ,সৌন্দর্য, সমাগম।
তোমার শূন্যতা বিরাজ করছিল
মনের গহিনে, ঘরে, বিছানায়,
বাড়িতে সর্বত্র।
ভাইয়েরা কেঁদেছিল পথে ঘাটে,
আর বোনেরা দারে দারে।
তোমার অতুলনীয় নম্রতা, বিনয়ী
জীবন স্বরনকরে কেঁদেছে প্রতিবেশিরা
বড়দের মুখে শুনেছিলাম, তোমার বিদায়ে
অঝড় ধারায় কেঁদেছে
দুয়ারে দাড়ানো আমগাছ।
অথচ তখন বৃষ্টি ছিলনা,
ছিলনা শীতের শিশির।
সবারে দুঃখ দিয়ে, সুখ কেড়ে নিয়ে
তুমি হয়েছো জান্নাতি।
আর আমরা হলাম মাতৃহারা,
সুখ হারা সোকাহত একটি পরিবার।
বোনেরা হয়েছে ঘর বাড়ি ছাড়া,
ভাইয়েরা হয়েছে দেশ ছাড়া।
মা, তুমি একাই একটি
সাজানো ফুলের বাগান
তছনছ করে গেলে।
তাই তো কবির ভাষায়
(মা নাহি গৃহে যার সংসার অরন্য তার
দেখিলে মায়ের মুখ মুছে যায় সব দুখ)
মা তোমার জায়গা টি দখল
করেছিল, ঠিক তোমার
বিপরীত স্বভাবের একজন।
আমরা ঠাই পেলাম নানার বাড়ি,
দুই খালার বাড়ি।
কেউ আমাদের অযত্ন করেনি মা
আদর পেয়েছি যথেষ্টই।
কিন্তু তুমি যে জায়গাটা শূন্য করেছিলে
সেটা তো আর পূরণ হয়নি মা,
কোনোদিন হবেও না।
মা, সত্যিই তুমি ওয়ান পিছ!!!
এধরাতে দ্বিতীয় কেউ হবেনা
তোমার তুল্য
আর তুমি বেচে থাকলে হয়তো
এমন করে বুঝতাম ও না
তোমার এতটা মূল্য,
যতটা এখন বুঝি।
তখন আধুনিক প্রযুক্তি ছিলনা মা,
ভাই,বোন কে কোথায়?
কেমন আছে? জানা হতনা বছরেও।
বছর ঘুরে নানার দোয়া অনুষ্ঠানে
হয়তো এক হতাম,
আবার তিন বোন, দুই খালার
বাড়ি ও নানার বাড়ি
ভাগ হয়ে যেতাম।
আর ভাইয়েরা যার যার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
কেউ কেউ এ হতভাগা
বোনদের দায় ভার কাঁধে নিতে
হয়েছেন প্রবাসী। আর এভাবেই
নয় ভাইবোন নয় দেশি হয়ে
পার হত আমাদের জীবন।