'প্রতারিত আমি' শির্ষক কবিতার মূল বিষয় 'অন্ধকার' এবং 'প্রতারণা'।


বর্ণীত কবিতায় কবি মো: আশিকুর রহমান  জীবনের কোনও এক বাঁকে অন্ধকার এবং প্রতারণার মত নেতিবাচক বিষয়কেও প্রয়োজনীয় হিসাবে দেখেছেন। জীবনকে বোঝার জন্য তাই বারবার প্রতারিত হতে চেয়েছেন। কিছু বানান এবং বিন্যাস ত্রুটি সত্ত্বেও সুন্দর বোধ ও ভাবের নান্দনিক প্রকাশের কবিতাটি বেশ ভাল লেগেছে।


'অন্ধকার' একটি নেতিবাচক শব্দ। বিশেষ উদ্দেশ্য ছাড়া অন্ধকার কখনোই কারোর কাম্য নয়। আর, এমন মানুষ পাওয়া যাবে না যে প্রতারিত হতে চায়। কিন্তু বর্ণীত কবিতায় কবি জীবনকে অনুভবে উপলব্ধির জন্য বারবার প্রতারিত হতে চেয়েছেন, অন্ধকারকেও প্রয়োজনীয় মনে করেছেন।


জীবনের অনেক কিছুতেই যখন মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে, আশার শেষ শিখাটিও নিভে যায়; তখন সে অন্ধকারের মত নেতিবাচক অবস্থাকেও কামনা করে। এই বোধটুকু আর পাঁচটি সাধারণ মানুষের কাছে অস্বাভাবিক মনে হলে কিংবা বিতর্কিত মনে হলেও সেই হতাশাগ্রস্ত ব্যাক্তির কাছে কিন্তু তা কখনো কখনো বড় কাঙ্ক্ষিতও হয়ে উঠে। তাই তিনি অন্ধকারকেও বলেছেন -


"তুমি জানো প্রিয় অন্ধকার!
যদি না আসতে জীবনে আমার
ভুলের মাঝে থেকে যেতাম একাকার"


(এখানে বাক্যটি এইভাবে হলে হয়তো ভাবের প্রকাশটি আরো স্পষ্ট হতো -  
"ভুলের মাঝে থেকে যেতাম 'হয়ে' একাকার")

কবি কোন এক উপলব্ধিতে বোঝেছেন; প্রতারিত না হলে জীবনের কিছু সত্য অভিজ্ঞানের আড়ালেই থেকে যেতো। তাই তিনি জীবনের আরো কিছু আবৃত সত্যকে বোঝার জন্য বারবার প্রতারিত হতে চেয়েছেন এই চরণ মূলে -


"প্রতারিত হতে চাই আরো সহস্রবার"


আবার অস্বাভাবিক শোনালেও অন্ধকারে আত্মনিমগ্ন হয়েই কবি ভালোবাসার জনকে চিনতে চেয়েছেন ঠিক এই ভাবে -


"ভালোবেসে যে হতে চেয়েছে আমার
তার পরিচয়টা জানা হতো না আর"


বোধ আর ভাবনার বাস্তবতা যা-ই থাক কবিতাটি আমার কাছে ভাল লেগেছে। কবির বোধের সাথে আমার উপলব্ধিগত পার্থক্য থাকলে থাকতেও পারে। তবু এ নিয়ে দুকথা লিখলাম। কবিতাটিতে কিছু শব্দ ও বাক্য পুনর্গঠিত হলে আরো ভাল হয়। সুন্দর কবিতাটির জন্য কবিকে আন্তরিক অভিনন্দন রইল।


বানান নির্দেশিকা:
শিকার, প্রতারণার, কীভাবে, কৃত্রিম, বুঝিনি, মূল্য...