মিথ্যে বলব না কিছু -
জ্যাকটা যেদিন মরে গে’ল, ওকে কবরস্থ করে
কেঁদেছিলাম আমি; সদরে না লুকিয়ে,
আজো তাকে স্মরণ করি; কেননা -
চিনতাম তাকে, বুঝতাম ও ভালবাসতাম
খাবার দিতাম, স্নান করাতাম আপন হাতেই।


মৃত্যুরোগে অসুস্থ হলে;
জ্যাক আমার আদুরে হাতও কামড়ে দিয়েছিলো।
একেবারে ছ'টি দাঁতের ফালা ফালা রোষ,
তাই বুঝি নির্দয় ভাবে মেরেছিলাম ওকে!
প্রতীতি হয় - সে অধিকার আমার ছি’ল,
হৃদয়ে, মননে ছিলাম কিনা কোনও স্বজন!


কেউ অবশ্য বলে -
কামড়ে দেয়ার মর্মজ্বালায় জ্বলেই নাকি
অল্প দিনে জ্যাক মরে গিয়েছিল।
কখনো আমি তা ই বিশ্বাস করি, দেখলাম;
কী জানি এক অভিমানে সে চলে গে’ল
না বলা কষ্টের বোবা-কান্না বুকে ঢেকেই।


জ্যাক তার মনের দু:খ-কষ্ট
বলতে পারেনি আমায়। যেমন, আমিও নই;
ঝিম-ধরা মেঘলাকাশের কান্নারাশি
শৈলমালার অভিঘাতে ভেসে যায় উপত্যকায়
শিলা-শৈবালে, নদী-নালায়, প্রস্রবণে -
বুক ফাঁটে যার মুখ ফোটে না তিলেক!


সে কান্নার নিবিড় প্রতিধ্বনি গুমরে মরে,
ব্যথার পাহাড়ে ঠোক্কর খেয়ে খেয়ে ফিরে আসে
নোনাবারির আড়ালে হৃদয়-দাহ দেখতে পায়না কেউ,
নীরবতার নি:শব্দ প্রতিসরণ পশে না মরমে কারো।
প্রকৃতির অমোঘ মূর্ছনার অদৃশ্য অবগাহনে
জীবনের রেস্ত কিছু কে করে অনুভব!


ক’বছরেই জ্যাকের স্মৃতি ফিকে হয়ে গেছে -
তার মৃত্যুতে কেউ একজন কেঁদেছিল
কদাচিৎ হলেও স্মরণ করার মত কেউ আছে তার
যুগান্তরে না ই হ’ল, তেমন কিছু ভাবতে পারি;
এক জনমে আমার কি সেই কীর্তি ছি’ল,
আপন ছি’ল ঠিক জ্যাকেরই মত?
____________________
⭐ কবিতাটি "বাইনারি সুখের পিদিম" (পৃষ্ঠা-৩৮) কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।