বিদগ্ধ মোর বঙ্গমাতা শুনবে কি গো আজ
অভাগাদের কষ্ট গাথার করুণ আহাজারি!
আজ মা তুমি সেজেছ কি এমনই বধির!
রক্ত নেশা তোমার হয়েছে কি ভারি!
রক্ত চাই তোমার - শুধু তাজা লহু
ঝরে প্রাণ ঝরুক না, যতই হোক তা বহু!


দুলাখের ইজ্জত বলি, তিরিশ লাখের প্রাণ
ঝরিয়ে হয়েছিলে তুমি মুক্ত বীরাঙ্গনা।
স্বাধীন হবার স্বপ্ন কি মা এমনই ছিল তবে;
আগুন পাখায় চড়ে মোরা করব যুদ্ধ আজো
অকাতরে খেলতে হোলি ওই ক্ষমতার তরে!
মানুষ তবে নয় কি কোন কিছু, ক্ষমতাই সার?


ভ্রষ্টনীতির পাশা খেলায় গণতন্ত্র গেছে দূর
মানবতার নেই কো ছায়া, নেই তো অধিকার
দুর্নীতি আর মিথ্যা বুলির দেখি জয় জয়কার!
মায়ের জাত তো মায়াবতী, দেখি একি ছবি –
সেকি কুহকিনী মায়া; স্ব-সন্তান বিনে ভাসে না চোখে
আর সন্তানের ছায়া! ‌নয় দরদী জনতা পঙ্গপালেও?


আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙিয়েছ মানচিত্র তোমার
তবু কেন বাঁচার তরে এত যুদ্ধ হলাহল মা গো?
হিংসায় লুটাই, করি হানাহানি মারতে আপন ভাই?
জন্ম শুধুই দিয়েছ মোদের, মানুষ তো করনি?
বোমার ঘাতে আজ যে শিশু হচ্ছে খান্ খান্
স্বপ্ন ভেঙ্গে হয় চুরমার, এ দায় বলো মা কার?


জাল পরা বাসন্তী মা নিয়েছে বিদায় বহু আগেই
তবু কেন ঝুলে আজো ফালানীরা কাঁটাতারে
উদ্বাহু ডানা মেলে ঝলমলে জামা গায়?
ক্ষমতা ছাড়া আজ যাদের নেই কোন হুঁশ
হুঁশিয়ার বল তাদের; এ গনেশ উল্টে যাবে, রুখে যদি
ফুঁসে উঠে আমজনতা, জবাব তাদের দিতেই হবে।


- - - - - - - - - - - - -  - - - - - - - - - -
★ কবিতাটি 'সময়ের বাওকুড়ানি' (পৃষ্ঠা-৫৬) কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।