কবিতার পাতায় কিছু লিখি বটে – আদৌ আমি কবি কি না নিজেরই সন্দেহ। তাই পাঠক/কবিগন যখন আমাকে কবি বলেন, লজ্জায় এতটুকু হয়ে যাই। তাই বিনীত অনুরোধ কেউ আমাকে কবি বলে সম্বোধন করবেন না। এতে নিজেকে খুব অপরাধী বলেই মনে হয়।


কবিই যদি হবো তাহলে তো কবিতা আমার বোঝার কথা! কিন্তু আমি যে বার আনা কবিতারই কিছু বুঝি না! অবশ্য আমি কবিতার ব্যাকরণও জানি না। যখন একটু কেরদানী করি তখন নিজের কবিতাকেই ঠিক বুঝতে পারি না। সেই বাস্তবতা থেকেই ‘সুররিয়ালিজম’ কবিতায় লিখেছিলাম:


“লিখতে যা চাই তা বুঝতে না পাই
বোঝাতে বললে কেহ বোবা হয়ে যাই,
ভেবে ভেবে খাবি খাই করি মাথা নিচু
দেখতে পাই না ভুল কবিতার আগুপিছু।“


যত না লেখি আমি, তারো বেশি পড়ি, তারো বেশি মতামত ব্যক্ত করি। কবিতা পড়ে বুঝে তবেই মন্তব্য করি। না বুঝলে কবির কাছে আকারে ইঙ্গিতে মানে বুঝতে চাই কিন্তু বিজ্ঞ কবি বন্ধুরা হয় তো জবাব দেয়াটাকে নিজেদের অসম্মান বলেই বিবেচনা করেন অথবা বুঝি না বলে নেহায়েত শিশু জ্ঞানে অবজ্ঞা করেন।


ইদানিং কালের কিছু প্রভাবশালী(!) কবিকে দেখি; দুর্বোধ্য সব কঠিন শব্দমালা দিয়ে অসম্পূর্ণ ভাব ও বাক্য বিন্যাসে এমন সব দামি(!) কবিতা লেখেন যার কিয়দংশ বোঝার ক্ষমতাও আমি অধমের নেই! তাই ভাবি, এসব কবিতার মানে কি? কারা এর পাঠক? অথচ দেখি ভুরি ভুরি পাঠক সমানে ‘খুব ভাল’ ‘অসাধারণ’ ‘দুর্দান্ত’ ইত্যাদি বলে দুই/এক শব্দের মন্তব্যে ঝড় তুলে বোঝাচ্ছেন; কবি অনেক উঁচু মার্গের লেখিয়ে তাই কিছু না বুঝলেও তাঁর পূজা করতে হবে। অথবা বিনিময়ে আমার লেখায় সেই দামি(!)কবির মন্তব্য আসবে। সে সব মন্তব্যকারীদের পাতায় গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হতাশ হয়েই ফিরে আসতে হয়। আবার তাঁদের পাতায় মন্তব্যেরও কমতি নেই!


সেই সব বিশিষ্ঠ কবিদের কাছে বিনীত অনুরোধ যা-ই লিখুন না কেন পাঠককে অন্তত বুঝতে দিন। পাঠক যেন আপনার কবিতা থেকে রস আস্বাদন করতে পারেন, উপভোগ্য হয়।  আর তা-ই যদি না পারেন, কবিতা আপনার ডায়েরীর পাতায় সুন্দর করে লিখে রাখুন। নিজে পড়ৃন ও আত্মতৃপ্তি নিন।


অপরাপর কবি বন্ধুদের কবিতা পড়ে যেন কিছু শিখতে পারি, রসাস্বাদন করতে পারি। তাই, মন্তব্যকারীদের বলব; কবিতায় মন্তেব্যের আগে সেই কবিতাটি ভালভাবে পড়ুন ও বুঝোন। তাতে উপকৃতই হবেন।


সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।